পটুয়াখালীর সদর রোডে তীব্র যানজট, কোটি টাকার বিকল্প সড়ক ব্যবসায়ীদের দখলে

প্রকাশিত: ০৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৭:১৭ পিএম

পটুয়াখালী সদর রোডে যানজট নিরসনে সদর রোডের বিপরীত দিকে লাউকাঠী নদীর পাশ ঘেষে কোটি টাকা ব্যায়ে নির্মান করা হয়েছিলো বিকল্প আরেকটি সড়ক। পটুয়াখালীর নিউমার্কেট থেকে লঞ্চঘাট পর্যন্ত দেড় কিলোমিটার সড়কের সিংহভাগ রয়েছে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের দখলে। সড়ক দখল করে দীর্ঘদিন ধরেই চলে আসছে ব্যাবসা-বানিজ্য। জেনো কথা বলার কেউ নেই।

সদর রোডের পাশ ঘেষেই রয়েছে বিভিন্ন স্কুল-কলেজ। স্কুল-কলেজ ছুটির সময় সদর রোডে দেখা দেয় তীব্র যানজট। এসময় দীর্ঘ লাইন থাকে অটো-রিক্সা সহ বিভিন্ন যানবাহনের। স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থী সহ তীব্র যানজটে ভোগান্তিতে পরে সাধারণ মানুষ। পটুয়াখালী কালেক্টরেট স্কুল এ্যান্ড কলেজের ৫ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী সৌমি দাস বলেন, যখন স্কুল ছুটি হয় তখন রাস্তায় অনেক রিক্সা গাড়ি থাকে। রাস্তা পার হতে খুব ভয় করে।

ভারী যানবাহন চলাচল সহ জনসাধারনের নির্বিঘ্নে যাতায়াতের স্বার্থে পটুয়াখালী পৌর শহরের সদর রোডের বিপরীতে বিকল্প সড়কটি নির্মিত হলেও সরেজমিনে দেখা যায়, লঞ্চঘাট থেকে শুরু হয়ে শহীদ আলাউদ্দিন শিশুপার্ক পর্যন্ত দখলে থাকে স্টিল আলমারী ব্যবসায়ী এবং পুরোনো মালামাল দোকানি ব্যবসায়ীদের। আলাউদ্দিন শিশু পার্কের পর থেকে দখলে থাকে রড সিমেন্ট ব্যাবসায়ীদের, পুরো চরপাড়া পর্যন্ত ভারী-ভারী যানবাহন রাস্তার দুইপাশে থামিয়ে দিনভর নামানো উঠানো হয় রড সিমেন্ট।

সড়কের পরের অংশ থেকে প্রায় পটুয়াখালী সদর থানার নৌঘাটি পর্যন্ত থাকে কাঠমিল ব্যাবসায়ীদের দখলে। পরের অংশ দখলে থাকে সবজি ও কাঁচা বাজার বিক্রেতাদের। রাস্তার উপরে দুই পাশে সবজি সাজিয়ে এমন ভাবে দোকান সাজানো হয় যে ক্রেতারা ক্রয় করার জন্য দাঁড়ালে আর মানুষ চলাচলের জায়গা থাকে না।

এদের দেখলে মনে হয় জেনো নিজের যায়গায় তারা ব্যবসা করছে, কেউ কথা বলার নেই। সড়কটির পরের অংশ থেকে শুরু হয় ছোট বড় ঝুপড়ি খাঁচা। যে গুলোতে রাখা হয় মুরগী। রাস্তার দুইপাশে হাঁস-মুরগী ব্যাবসায়ীদের টেম্পো অটোরিকশা থেকে দিনভর নামানো হয় হাঁস-মুরগী। এর পরের অংশ থেকে রাস্তার দুইপাশে বসে মাছ ব্যাবসায়ীরা। তারপর আর একটু সামনে গেলে দেখা যায় আড়ৎদারদের বড় বড় মালবাহী ট্রাক ঠায় দাঁড়িয়ে আছে রাস্তার দুই পাশে। নামানো উঠানো হচ্ছে মালামাল।

সবজি ব্যাবসায়ী জামাল জানান, আমাদের কোনো রকম বাজার বসার জায়গা না থাকায় আমরা এই রাস্তায় সবজি সাজিয়ে বসি এবং বিক্রি করি। আমাদের স্থায়ী কোনো জায়গা নাই আমাদের দাবী আমাদের জন্য একটা স্থায়ী বাজার করে দেওয়া হোক।

মুরগী ব্যাবসায়ী হেলাল আহমেদ জানান, আমাদের কোনোরকম জায়গা নেই আমাদের মুরগীর রাখার জায়গা দরকার অনেক, কিন্তু আমাদের তেমন রাখার জায়গা নেই এবং মুরগী ড্রেসিং করার জন্য যে মেশিন আছে সেই মেশিন রাখার জায়গা না থাকায় রাস্তার উপরে এইভাবেই রাখতে হয় সব কিছু। আমাদের দাবী আমাদের জন্য স্থায়ী একটা জায়গা করে দেওয়া হোক।

মাছ ব্যাবসায়ী ফজলে রাব্বী জানান,আমাদের মাছের বাজার এর জায়গা অনেক ছোট হওয়ায় সবাই আড়ৎদারদের থেকে মাছ ক্রয় করে রাস্তার উপরে টিনের পাত্রে সাজিয়ে মাছ বিক্রি করি আমাদের জন্য একটা বড় আকারের স্থায়ী মাছের বাজার কোথাও করে দিলে আমরা সেখানে ব্যাবসা বানিজ্য করেতে পারবো।

এ বিষয়ে পটুয়াখালী পৌর মেয়র মহিউদ্দিন আহাম্মেদের সাথে কথা বলতে গেলে তিনি জানান, আমাদের শহরের বয়স প্রায় ১৩১ বছর। সেই অনুপাতে আমাদের রাস্তাঘাট গুলো তেমনভাবে সম্প্রসারিত করতে পারি নাই। তাই সদর রোডের পাশাপাশি আমরা এই সড়কটিকে প্রসস্থ করে ফোর-লেন মেরিন ড্রাইভ করার চিন্তাভাবনা করছি। এইটা হলে আমাদের শহরের যানজট কিছুটা লাঘব হতো। আমরা অনেকগুলো সড়কে ওনওয়ে করে দিবো।

তাহলে দেখা যাবে ৮-১০ বছরে কোনরকম যানজট হবে না। আসলে ভাসমান মানুষগুলো এখানে ফ্লোরিং দোকান নিয়ে বসে, ভ্যান নিয়া বসে। এদেরকে প্রতিনিয়ত বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করি, তাদেরকে অনেক সময় শাস্তির আওতায় নিয়ে আসি। কিন্তু তারপরেও দেখা যায় এ কাজ গুলো ঘটে। আপনাদের মাধ্যমে জানিয়ে দিতে চাই অতি শীঘ্রই আরো কঠোর ব্যাবস্থা নিবো,এবং তাদের জন্য একটা ব্যবস্থা করবো।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: