সিনেমার প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছিলেন আরিফিন শুভ, নারী ভক্তের আবেগঘন চিঠি

প্রকাশিত: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৬:১৭ পিএম

ঢাকাই ছবির দর্শকপ্রিয় অভিনেতা আরিফিন শুভ।বর্তমানে ক্যারিয়ারের দারুণ একটি সময় পার করছেন তিনি। দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এই তারকার ভক্ত অনুরাগী। প্রিয় নায়ককে দেখার জন্য বা তার সাথে শুধুমাত্র একবার কথা বলার জন্য উদগ্রিব হয়ে থাকেন অনেকেই।সম্প্রতি দর্শকপ্রিয় এই তারকাকে নিয়ে নিজের জীবনের অন্যতম এক স্মৃতি তুলে ধরেছেন ময়মনসিংহের এর তরুণী, নাম কামরুন্নাহার মুন্নী, যিনি পেশায় লেখক।

এক সময় তার ইচ্ছে ছিলো অভিনয় করার কিন্তু হঠাৎ করে পাল্টে যায় সিনেমা বানানোর স্বপ্নে। শুভর নাম্বার ব্যবস্থা করে তাকে ফোনও করেছিলেন কিন্তু নায়ক তখন জানিয়ে দিয়েছিলেন, ‘বাচ্চা মেয়েদের সাথে কাজ করতে আমি অনাগ্রহী। এরা কাজের চেয়ে মুগ্ধ বেশি থাকে, কাজে মনোযোগ নাই।’ নায়কের এমন মন্তব্যে বেশ আহত হয়েছিলেন মেয়েটি।

গত বৃহস্পতিবার (২ ফেব্রুয়ারি) ছিলো  আরিফিন শুভর জন্মদিন। এদিন তাকে ঘিরে শুভেচ্ছা বার্তা এবং নিজের না বলা কথাগুলো ফেসবুকে লিখে শেয়ার করেন এই তরুণী।সেখানে তিনি লিখেন, আমি অভিনয় করতে চেয়েছিলাম। হঠাৎ অভিনয়ের ইচ্ছে উবে গেল। শুরু হলো নিজের গল্পের স্ক্রিপ্ট লেখা, সিনেমা বানাবার স্বপ্ন। শেষ হবার সাথে সাথেই মাথায় এলো চরিত্রটা আপনাকে দাবী করছে৷ আমি অনেক ঝক্কিঝামেলা করে ফোন নম্বর সংগ্রহ করে ফোনকল করলাম। করোনার মধ্যে ঈদ- সৌভাগ্য ঈদের জন্যই আপনি ফোন ধরলেন।

তবে শুভ ধরেই বললেন, ‘মুন্নী ভাবি কেমন আছো, দেশে কবে আসছো’- আমি বুঝলাম আপনি আত্মীয় ভাবছেন। চুপ করেই আছি। হ্যালো হ্যালো- ‘আমি যখন বললাম আমি ভাবি নই, আমি কামরুন্নাহার মুন্নী।’ কথা হলো ৬ মিনিট ৩৭ সেকেন্ড। সিনেমার কথা বললাম, আপনি এক কথায় বললেন, ‘বাচ্চা মেয়েদের সাথে কাজ করতে আমি অনাগ্রহী। এরা কাজের চেয়ে মুগ্ধ বেশি থাকে, কাজে মনোযোগ নাই।’

আমি আহত হয়েছিলাম সেদিন, রাগ হচ্ছিলো যে উনি আমায় জানেন না। অথচ আমি তো আমার মুগ্ধতারও মার্জিন রাখি!
কিছুই বললাম না। আপনি শুভকামনা জানিয়ে ফোন রেখে দিলেন। আমি সেই স্ক্রিপ্ট আর ধরি নি কোনোদিন। গবেষণা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে গেলাম, মাস্টার্স শেষ হলো। আজ অনেকদিন বাদে আমার মনে হলো আপনি ওইদিন ওইটা বলা ঠিক ছিলো কারণ আমরা কথা বলি আমাদের সাথে হওয়া ঘটনাগুলো থেকে। হয়ত তাই দেখে এসেছেন। কিন্তু ব্যতিক্রম কী নেই!!

আমি আমার কাজের ব্যাপারে এক চিমটি ছাড় দেয়ার মানুষ নই। এই কথাটা বললাম কারণ আমিও আরিফিন শুভকে ভালোবাসি। উনার সবকাজ আমার ভালো লাগে না যেমন সত্যি তেমন সত্যি উনার ব্যক্তিত্ব আমার অসম্ভব ভালো লাগে। উনার কথাবন্ধু, সহকারী পরিচালক, মডেল, নাটকে অভিনয়, সিনেমায় নানানভাবে বাদ পড়া, আবার আবার একটু একটু করে দাঁড়ানো। এই সংগ্রামটাকে আমি ভালোবাসি। আপনি যেভাবে উত্তর করেন, শব্দ প্রয়োগ করেন সেটাকে আমি ভালোবাসি। একজন সংকটের, সংগ্রামের, প্রতিবন্ধকতার ভেতর থেকে বের হওয়া মানুষদের জন্য আমার সবসময়ই ভালোবাসা। আমি তাদের আমার পথের সঙ্গী ভাবি। সুন্দরের দিকে অগ্রগামী সকল সংগ্রাম, টানাপোড়ন পৃথিবীতে সবচেয়ে সুন্দর৷ আপনি সেই পথে অগ্রগামী।

আপনি জানেন না শত শত টেক্সটের ভেতর আমার টেক্সট আছে। প্রায় প্রায় আমি আপনার মুঠোফোনে একটা টেক্সট করি- উত্তরের জন্য না, আপনাকে জানাবার জন্য। আমার এটা লিখতে ভালো লাগে ‘আমি তো শিল্পী বা শিল্পী হবার ভ্রমণে পথিক’ আমি অনুভব করি এটা আমাকে কেউ বললে আমার ভালো লাগতো।

শেষ করছি, ঠিক শেষ করছি না; শুরু করছি। আমি সিনেমা বানাবো। আপনাকে দেখতে আসতেও আমন্ত্রণ জানাবো। সেই সিনেমা দেখে যদি মনে হয় এই মেয়ে ছোটো কিন্তু তার চিন্তা মোটেও...... এরপর ওই যে পুরানো স্ক্রিপ্ট আবার খুঁজে বের করবো। আপনি খুব সুস্থ থাকুন। অনিশ্চিত, অস্থায়ী পৃথিবীতে আপনার জন্মতারিখ ঘুরে ঘুরে আসুক এই দোয়া থাকলো।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: