প্রকাশ্যে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার ঘুষ আদায়, অবশেষে বদলী

প্রকাশিত: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০৯:২৯ এএম

কক্সবাজার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ের নিয়ন্ত্রণহীন প্রকাশ্যে ঘুষ আদায়ের ঘটনায় অবশেষে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জেছের আলীকে রাঙ্গামাটি বদলী করা হয়েছে। তাঁর স্থলে নতুন পদায়ন করা হয়েছে রাঙ্গামাটি জেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদ হোসেনকে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রশাসন শাখা ১ এর এক প্রজ্ঞাপনে বদলীর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। গত ২ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রণালয়ের উপ সচিব মো. এরফানুল হক স্বাক্ষরিত এ প্রজ্ঞাপনটি ইতিমধ্যে কক্সবাজার এসে পৌঁছে বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

সূত্র জানিয়েছে, জেলা সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকের নতুন পদায়ন ও বদলী জনিত কারণে সম্প্রতি প্রকাশ্যে ঘুষ আদায় হয়েছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয়ে।

এ বিষয়ে কক্সবাজার জেলা নাগরিক কমিটির পক্ষে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের এবং গণমাধ্যমে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশের কক্সবাজার পর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জেছের আলীকে রাঙ্গামাটিতে বদলী করা হয়েছে। তবে প্রকাশ্যে ঘুষ আদায়ে নেতৃত্বদানকারি প্রতিষ্ঠানটির ৩ কর্মচারি।

কক্সবাজার জেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কর্মরত শতাধিক শিক্ষকের সাথে প্রাপ্ত তথ্য মতে, কক্সবাজার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার যে আসুন না কেন ওই কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে গত ১৮ বছর ধরে প্রকাশ্যে ঘুষ আদায় করে যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির উচ্চমান সহকারি রফিক উদ্দিন। যাকে সহযোগি করছে প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারি মোহাম্মদ ইয়াছিন ও বশির আহমদ।

শিক্ষকরা জানিয়েছেন, উপজেলার অভ্যন্তরে শিক্ষক বদলীকে পুঁজি করে প্রতিজনে ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা করে ঘুষ আদায় এখনো চলছে। অথচ সরকারি বিধি মতে নিয়মাতান্ত্রিক প্রক্রিয়া এই বদলী হওয়ার কথা। এর আগে গত নভেম্বর মাসে নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের পদায়নকে পুঁজি করে ৪ কোটি টাকা উৎকোচ আদায় করা হয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরে অভিযোগ দায়ের করেছেন কক্সবাজার জেলা নাগরিক কমিটির সভাপতি কামাল উদ্দিন পিয়ারু। অভিযোগের অনুলিপিটি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী, সচিব, দুদক চেয়ারম্যান, কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সহ ১৪ দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবরে দায়ের করা অভিযোগে বলা হয়, কক্সবাজার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের উচ্চ সহকারি রফিক উদ্দিনম দুর্নীতির কারণে ২০১০ সালে তাকে শেরপুর বদলি করা হলেও হাইকোর্টে রিট করে কক্সবাজারে চাকুরি করে যাচ্ছে। তিনি নিয়োগ, প্রধান শিক্ষক পদোন্নতি, বদলি নামে উৎকোচ আদায় করে কোটি টাকার মালিক হয়ে উঠেছেন। তার গ্রামের বাড়ি পেকুয়ায় বিপুল জমি ছাড়াও রয়েছে ৬ তলার বাড়ি।

একই সঙ্গে কক্সবাজার শহরে রয়েছে ৫ তলার বিলাসবহুল বাড়ি। তার অপর সহযোগি ইয়াছিনেরও কুমিল্লায় গ্রামের বাড়ি ও শহরের অনেক জমি ও ফ্ল্যাট রয়েছে। ইতিমধ্যে সিন্ডিকেটটি পছন্দের বিদ্যালয়ে পদায়নের নামে প্রকাশ্যে উৎকোচ আদায় শুরু করেছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানান তিনি।

এর মধ্যে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বদলী হলেও অপর ৩ কর্মচারির বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি সরকারি শিক্ষকদের।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: