আখাউড়ায় অস্থির সবজি ডিম ও মাংসের বাজার, স্বস্তি নেই মধ্যবিত্তদের
মোহাম্মদ আবির, আখাউড়া (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি: পবিত্র মাহে রমজানের মাত্র একদিন বাকি রোজা সামনে রেখে নিত্যপণ্যের বাজারে দাম বাড়ানোর প্রতিযোগিতা চলছে, এরই অংশ হিসেবে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় সবজি, ডিম, মুরগি, খাসি ও গরুর মাংসের বাজার কয়েক দিন ধরে অস্থির হয়ে ওঠেছে।
খরচ কমাতে নিম্ন, মধ্যবিত্তরা গরু আর খাসির মাংস কেনা ছেড়ে দিয়েছেন, ডিম ব্রয়লার মুরগিতে ভরসা ছিল এবার মুরগির উত্তাপে ডিমের দাম ও খেটে খাওয়া মানুষের নাগালের বাইরে।
বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) প্রতিবেদক বাজার ঘুরে দেখেন অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে পোল্ট্রি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৪৫ থেকে ২৫০ টাকা, সোনালী ক্রস মুরগি ৩৫০ থেকে ৩৬০ টাকা, লেয়ার মুরগি ৩৪০ টাকা, দেশী মুরগি ৬৩০ টাকা অথচ গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছে ২৩০ থেকে ২৩৫ টাকা, সোনালী ক্রস ৩১০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৯০ টাকা বিক্রি হয়েছিল। এক সপ্তাহের ব্যবধানে ৩০ থেকে ৫০ টাকা মূল্য বৃদ্ধি হয়েছে।
তবে ডিমেও স্বস্তি নেই গত তিন দিন আগে প্রতিহালি ব্রয়লারের ডিম বিক্রি হতো ৪৫ টাকা হাঁসের ডিম বিক্রি ছিলো ৬৫ টাকা।আর আজকের মুরগির ডিম ৫০ টাকা হাঁসের ডিম ৭০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
আখাউড়া বাজার ঘুরে জানা যায়, গরুর মাংস প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৩০ টাকা থেকে ৭৫০ টাকা। অথচ গত তিন দিন আগে ছিলো ৭০০ টাকা।
শস্তি নেই সবজির বাজারেও তিন দিনের ব্যবধানে খিরা ৩০ টাকা থেকে বেড়ে ৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে, বেগুন চল্লিশ টাকা থেকে দ্বিগুণ ৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে, গাজর ৩৫ টাকা থেকে বেড়ে ৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে, শসা ৪০ টাকা থেকে বেড়ে ৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে লেবুর হালি ৫৫ টাকা থেকে বেড়ে ৭০ টাকা বিক্রি হচ্ছে, কাঁচা মরিচ ৮০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজারেও স্বস্তি নেই পাঙ্গাস মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা থেকে ২০০ টাকা, রুই মাছ ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, বড় চিংড়ি, বোয়াল, ইলিশ ১২০০ টাকা, টেংরা ৬০০ টাকা। সপ্তাহ আগে ছিলো রুই মাছ ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। বড় চিংড়ি মাছ,বোয়াল মাছ,ইলিশ মাছ ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতো। বিক্রেতারা জানান সব ধরনের নিত্যপণ্যের দাম বাড়ার প্রভাব পড়েছে মাছের বাজারেও। সে কারণে মাছের দাম ও বেড়েছে।
সস্তি নেই মুদি বাজারেও দাম বাড়তি সপ্তাহের ব্যবধানে নতুন করে বেড়েছে ডাল ও ছোলার দাম। প্রতি কেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৮৫ থেকে ৯০ টাকা দরে, ডাল বড় ১০০ টাকা ছোট (দিল্লি সোপার ১৪০ টাকা) পেঁয়াজ ৩৫ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৪০ টাকা, রসুন ১৪০ টাকা থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ১৫০ টাকা, ছোট রসুন ১০০ টাকা। আদা ১১০ টাকা থেকে ১২০ টাকা মুড়ি ৬৫ থেকে ৭০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে ক্রেতারা জানান, হু হু করে দাম বাড়ছে, এসব দেখার কি কেউ নেই। কম আয়ের মানুষের কেনায় কাটছাঁট ছাড়া উপায় নেই। একটা কিনলে আরেকটা কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
বকুল মিয়া (৪৭) নামের এক জন রিক্সা চালক বাজারে এসে জানান আমি একজন রিকশাচালক দৈনিক ৫ থেকে ৬ টাকা ইনকাম করি, গরুর মাংস খাওয়া ছেড়ে দিয়েছি অনেক আগেই, মাঝে মধ্যে ব্রয়লার মুরগি খাইতাম এইটাও দাম বেড়ে গেছে, চালসহ সব জিনিস কিনা লাগে, এখন আমরা ভালা নাই, কিছু কয়তে ও পারি না সইতে পারি না।
শহরের নারায়ণপুর গ্রামের দুলাল মিয়া বলেন, বাড়িতে তিন ছেলে-মেয়েসহ আমরা ৬ সদস্যের পরিবার। বাজারে এসে মুরগি, তরকারি, চাল কেনার হিসাব মেলাতে পারছি না। বাজারে জিনিসপত্রের দাম বেশি। আমাদের চলতে খুব কষ্ট হচ্ছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ভোক্তা অধিকারের সহকারী পরিচালক মেহেদী হাসান বলেন মুরগির বাজারে অস্থিরতা বাকি সব যেই দামে বিক্রি করার কথা ওই দামে বিক্রি করা হচ্ছে, এই নিয়ে কারোও কোন আপত্তি নাই ।সবজি ও মাছের বাজার উর্ধ্বগতি সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন মুরগির বাজারের দাম যেহেতু বাড়তেছে মাছের বাজারেও যাবে মাছের দামও বাড়বে তবে আমাদের বাজার মনিটরিং অব্যাহত আছে।
সদরের যে বাজারগুলো আছে আমরা সেগুলো মনিটরিং করছি কারণ এখান থেকে প্রোডাক্টগুলো পুরো ব্রাহ্মণবাড়িয়াতে যায়। মুরগির বাজারে আমাদের স্পেশাল অভিযান চলছে গতকালকে মুরগির বাজারে অভিযান করেছি এখানে ব্যবসায়ীদের কিছু কারসাজি আছে, আগামীকাল থেকে এক দুই দিন অভিযান পরিচালনা করলে নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে, অভিযান ২৭ রমজান পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।
বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
মার্কেটিং ও সেলসঃ ০৯৬১১১২০৬১২
ইমেইলঃ [email protected]





পাঠকের মন্তব্য: