নবীগঞ্জ ভূমিহীন মুক্ত ঘোষণা, সুখের নীড় পেয়ে খুশি ৭৯৫ পরিবার

প্রকাশিত: ২৫ মার্চ ২০২৩, ১১:৪২ পিএম

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তৃতীয় ও চতুর্থ পর্যায়ে জমি ও গৃহ হস্তান্তর অনুষ্ঠান গত ২২ মার্চ নবীগঞ্জ ‘আশ্রয়ণের অধিকার, শেখ হাসিনার উপহার’ এ স্লোগানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় উপজেলা টাস্কফোর্স কমিটির তালিকা অনুযায়ী নবীগঞ্জ ‘ক শ্রেণি’ভুক্ত ভূমিহীন ও গৃহহীন ৭৯৫টি পরিবারকে পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিয়েছে নবীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসন।এরই মধ্যে ১ম পর্যায়ে ১১০টি, ২য় পর্যায়ে ৬০টি ও ৩য় পর্যায়ে ৩৫৫টি গৃহহীন পরিবারকে দুই শতাংশ জমিসহ ঘর হন্তান্তর করা হয়েছে। ৪র্থ পর্যায়ে আরও ২৭০টি ঘর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে নবীগঞ্জ উপজেলাকে ভুমি মুক্ত ঘোষনা করা হয়।

নবীগঞ্জের মাববপুর গ্রামের ভুমিহীন কাকলী রানী দাশ বলেন- আমি এখন দলিল পাইছি, বাড়ি পাইছি, আগেতো আমার কিচ্ছুই আছিল না, মেঘ অইলে মানুষের বাড়ি যাইতাম, অখন নিজের ঘরে ঘুমাইমো আর মনের সুখে গান গাইমো আর শেখের বেটি হাসিনার লাগি দোয়া করমু।

উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ৪র্থ পর্যায়ের আওতায় নবীগঞ্জ উপজেলার সদর ইউনিয়নের আদিত্যপুর মৌজায় ১২৮টি, কালিয়ারভাঙ্গা ইউনিয়নের মান্দারকান্দি মৌজায় ১২টি, ছিদ্দেকপুর মৌজায় ১৬টি, করগাঁও ইউনিয়নের কুড়িশাইল মৌজায় ৪৭টি, ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নের ছত্রকুট মৌজায় ৪০টি, বড় ভাকৈর পশ্চিম ইউনিয়নের ফতেপুর মৌজায় ২৭টিসহ ২৭০টি ঘরের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।

গত ২০ মার্চ বরাদ্ধ প্রাপ্ত ভুমিহীন ও গৃহহীনদের নামে রেজিস্ট্রারী সম্পন্ন হয়েছে। উদ্বোধনের জন্য ২৭০টি ঘরের মধ্যে অধিকাংশ ঘরের কাজ সম্পন্ন হয়নি। কয়েকদিনের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করে দেয়া হবে বলে উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছেন। আদিত্যপুর এলাকার রহিম আলী বলেন,সদর ইউনিয়নের আদিত্যপুর মৌজায় নির্মাণাধীন ১২৮ ঘরের মধ্যে ২০-২৫টি ঘরে শেষ মুহুর্তের কাজ চলছে। তবে প্রায় শতাধিক ঘরের কাজ এখনো অসম্পূর্ণ রয়ে গেছে। কোথাও রং করা হচ্ছে, আবার কোথাও চলছে টিনের চালা, দরজা, জানালার কাজ চলছে। ইট-সিমেন্টের কাজও করতে দেখা যায়।

ভুমিহীন নিতেন্দ্র দাশ বলেন, সারাজীবন খোলা আকাশের নীচে বসবাস করে আসছি শেখ হাসিনার ঘর পেয়ে আমরা খুশি। বেগমপুর এলাকার ভুমিহীন মতিলাল দাশ বলেন, কোন দিন পাকা বাড়িতে থাকা হয় নাই, এখন বাড়ি পাইমু, খুশিতে আমি ভরপুর, এমন কাজ দেখমু জন্মেও ভাবি নাই।

রহমত আলী বলেন, আদিত্যপুরসহ অনেক প্রকল্পে বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা করা হয়নি।নবীগঞ্জে অনেক প্রকল্পে গভীর নলকুপ এখনও বসানো হয়নি এবং এখনো কোনো ঘরের বৈদ্যুতিক ওয়ারিং করা হয়নি, ফলে দেয়া হয়নি বিদ্যুৎ সংযোগ। কিছু ঘরের দরজা, জানালায় নিম্নমানের কাঠ ও নিম্নমানের স্টিল ব্যবহার করা হয়েছে। টয়লেটের স্যানেটারি রিং ব্যবহারে নিম্নমানের মালামাল ব্যবহারের ফলে স্থাপনের আগেই বেশকিছু স্যানেটারি রিং ভেঙে গেছে। এসব বিষয় ইউএনও স্যারকে বলছি সব ঠিক করার লাগি।

নবীগঞ্জ উপজেলায় এ পর্যন্ত ১ম, ২য় ও তৃতীয় পর্যায়ে (১১০+৬০+৩৫৫) মোট ৫২৫টি গৃহ প্রদান করা হয়েছে। প্রদানকৃত প্রকল্প গুলোতেও নানা সমস্যায় র্জজড়িত রয়েছেন। ৪র্থ পর্যায়ে ২৭০টি গৃহ প্রদানের কথা রয়েছে।

এ ব্যাপারে সহকারি কমিশনার (ভূমি) শাহীন দেলোয়ার বলেন,অসম্পন্ন কাজ সর্ম্পূন হলে হস্তান্তর করা যাবে। যে সব কাজ অসর্ম্পূন রয়েছে কয়েকদিনের মধ্যেই দ্রুত সর্ম্পূন করা হবে।এবং যে সব প্রকল্পে গভীর নলকুপ স্থাপন করা হয়নি তা দ্রুত সর্ম্পূন করার জন্য ঠিকাদারকে বলা হয়েছে।

নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান শাহরিয়ার বলেন, আমাদের কাজ ৮০% সম্পন্ন হয়েছে। আশাবাদী কয়েক দিনের মধ্যে সম্পূর্ন কাজ শেষ করে ঘর গুলো হস্তান্তর করতে পারবো। যে সব ঘরে নিম্নমানের কাজের অভিযোগ উঠেছে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি বলেন ইতিমধ্যে আমরা নবীগঞ্জ উপজেলায় ৭৯৫টি ভুমিহীন পরিবারকে পূর্ন বাসন করে নবীগঞ্জ উপজেলাকে ভুমিহীন মুক্ত ঘোষনা করা হয়েছে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: