বাজপাখির সাথে জেলের বন্ধুত্ব

প্রকাশিত: ৩০ মার্চ ২০২৩, ০২:২৬ পিএম

ইমাম হোসেন হিমেল, কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) থেকে: ভালোবাসার কদর কে না বুঝে, বন্য প্রাণী ও বুঝে তার শত্রু-মিত্র কে বোঝে ভালোবাসার মূল্য। সে ঠিকই বোঝে ভালবাসার মধ্যেই নিরাপত্তা ও বিশ্বাস থাকে। ভালোবাসার বিশালতা কল্পনাকে ও হার মানায়। যত্ন আর মায়ায় ভালোবাসায় বেঁচে থাকে পশুপাখিও। এরই প্রমাণ হলো কলাপাড়া উপজেলার মহিপুর ইউনিয়নের বিপিনপুর গ্রামের আবদুল আজিজ পহলানের ছেলে কামাল পাহলানের সঙ্গে দুই বাজ পাখির সখ্যতায়। স্থানীয়রা বলছেন কামাল পাহলানের সখ্যতা অনবদ্য এ ভালোবাসা।

বলা হয়, মানুষ জন্ম নেয় অসীম ভালোবাসার ক্ষমতা নিয়ে। আমাদের মাঝেই আছেন এমন কিছু মানুষ যারা ভালোবাসা ছড়িয়ে দেন সবখানে, সকল প্রাণে। তাদের সেই ভালোবাসা, যত্ন আর মায়ায় ভালোভাবে বেঁচে থাকে অসহায় ও অবহেলিত অনেক পশু-পাখিও। তাদের প্রতি ভালোবাসা ও সাহায্য পৌঁছে দেয় পশুপ্রেমীরা।

আঘাত পেয়ে একটি বাজ পাখি পড়ে ছিলো রাস্তায়, পাখিটি দেখতে পেলেন মহিপুর ইউনিয়নের বিপিনপুর গ্রামের কামাল পহলান, বাড়িতে নিয়ে আসেন বাজপাখিটি ১৫ দিনের মত চিকিৎসা করার পড়ে সম্পুর্ণ সুস্থ না হলেও ছেড়ে দিয়েছিলেন কামাল পাহলান। পাখিটি উরতে না পাড়লেও পায়ে হেঁটে যায়নি কোন দিকে। পাহলানের রেন্টিগাছের ডালেই বসে থাকতে দেখে আবারও নিয়ে আসেন বাড়ীতে সেই থেকে খাইয়ে দেওয়া, গোসল করানো ও তাঁর সাথে খেলাধুলা সবটাই সযত্নে করতে শুরু করেন পাহলান। দিচ্ছে জেলের পরিবারকে সুরক্ষাও অপরিচিত মানুষসহ কোন হিংস্র প্রাণী আসলে ও ডাকাডাকি শুরু করেন বাজপাখিটি এরপর ভালোবেসে তাঁর নাম রাখেন ডায়মন।

ডায়মনের অপেক্ষায় পুরুষ বাজ পাখিটাও শারা দিন টাওয়ারে থাকলেও ৮/১০ দিন পড়ে ফিরে আসেন, জেলের বাসায় দুজনের খুনসুটি বেশ কয়েকঘন্টা, এরপর আবার ফিরে যান টাওয়ারে৷ তবে পুরুষ বাজ পাখিটির খাবারের ঝামেলা পোহাতে হয়না পাহলানের বাহির থেকেই খেয়ে আসেন রোজ। শুধু ডায়মনের খাবারের জন্য মাছ ধরতে হয় রোজ পাহলানের। সারাদিন বাড়ীর অঙ্গিনায় থাকলেও সন্ধা নামার সাথেই ফিরে আসেন ঘরের দরজায় খাচ্ছেন বাড়ীর মানুষের সাথে খাবারও। হিংস্র প্রাণীর এমন বন্ধুতের ঘটনায় রীতিমত শারা ফেলেছে এলাকায় দেখতে ভীর জমান অনেকেই।

প্রতিবেশী দুলাল বলেন, কামাল পাহলানের ছোট বেলা থেকেই পশুপাখি পালার শখ কবুতর থেকে শুরু করে শালিক ঘুঘু সহ বিড়াল পুষতেন তিনি। তার পাখির প্রতি ভালোবাসার প্রতিদান দিচ্ছেন পালিত পাখিও আমরাও উপভোগ করছি এমন দৃশ্য।

স্থানীয়রা বলেন, যেখানে মানুষ মানুষকে ভালোবাসলে প্রতিদান নেই সেখানে এমন একটা হিংস্র পাখির সাথে কামাল পাহলানের এমন একটা ভাব সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। সময় পেলেই দেখতে আসি তাদের কে কামাল শতব্যস্ত থাকলেও খোঁজ খবর রাখেন পাখিটির এভাবে সবাই এগিয়ে আসলে আবার সভ্য পৃথিবী পাবো আমরা।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: