সোশ্যাল আর্কিটেক্ট হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছেন অঞ্জনা খান মজলিশ

প্রকাশিত: ২৯ মে ২০২৩, ০৪:২০ পিএম

ন্যায়বিচার, সামাজিক বন্ধন, আইন, প্রশাসন ও সাধারণ জনগণের একজন অভিভাবক হিসাবে প্রায় একবছরে মানুষের ভালোবাসায় হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছেন নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ। তিনি ইতোমধ্যে সোশ্যাল আর্কিটেক্ট হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছেন। দারিদ্র্য মুক্ত, সামাজিক অপরাধমুক্ত একটি আধুনিক, স্মার্ট ও প্রগতিশীল সমাজ বিনির্মাণের একজন দক্ষ স্থপতি হিসেবে ব্যাপক সারা যুগিয়েছেন তিনি।

গত বছরের পহেলা জুন তিনি নেত্রকোনায় যোগদান করেন। এবার জুনের ১ তারিখ তাঁর নেত্রকোনায় কর্মকাল একবছর পূর্ণ হতে যাচ্ছে। ইতিপূর্বে তিনি চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক হিসেবেও ছিলেন প্রায় ১ বছর। চাঁদপুরের মানুষের হৃদয় জয় করে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত করে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করে জয়ী হয়ে পুরষ্কৃত হয়েছেন তিনি। তিনি এইজন্য পেয়েছেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের কাছ থেকে থ্যাংকস লেটারও।

নেত্রকোনায় যোগদানের পর পরই গণশুনানির মাধ্যমে মিশে গেছেন সমাজের প্রান্তিক মানুষের কাছে। জেনেছেন তাদের জীবন যাত্রা। দাঁড়িয়েছেন তাদের পাশে স্বজনের বেশে। জয় করেছেন সাধারণ মানুষের হৃদয়। সপ্তাহের প্রতি বুধবার তিনি একেবারে সাধারণ মানুষের হৃদয়ের কথা শোনেন, কাজ করেন তাদের জন্য। তিনি ন্যায় বিচার করেন, অভাবগ্রস্থ ও গরীব মানুষের চিকিৎসা, পারিবারিক সমস্যাও সমাধান করেন তাৎক্ষণিক। কেউ অভাব অভিযোগ নিয়ে এসে ফিরে গেছেন এমন মানুষ পাওয়া যাবে না।

এই তো সমাজের কথা। এছাড়াও তিনি নেত্রকোনায় যে সমস্ত বড় বড় সমস্যা ছিল সেগুলোও সমাধান করেছেন অতি দ্রুত সময়ে। এখানে উল্লেখ না করলেই নয় এমন কয়েকটি সাহসী কর্মকাণ্ড হলো, তিনি নেত্রকোনা স্টেডিয়াম মাঠে দোকান বরাদ্দ প্রদানের মাধ্যমে জেলা ক্রীড়া সংস্থার ৩০ লক্ষ টাকা ফান্ড গঠন এবং মজা পুকুর বরাদ্দ প্রদান করে ২ লক্ষ ৪ হাজার টাকাসহ মোট ৩২ লক্ষ ৪হাজার টাকার ফান্ড গঠন করেন। বহুকাল ধরে জরাজীর্ণ নেত্রকোনা পাবলিক হলটিকে করেছেন মেরামত ও সুসজ্জিত।

জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু কর্ণার স্থাপন, নেত্রকোনা আধুনিক স্টেডিয়াম মাঠ সংস্কার, ডিসি অফিস প্রাঙ্গণের মেইন ফটকে ফ্রন্টডেস্ক তৈরি, নেত্রকোনা টু কলমাকান্দা রোডের ভূমি অধিগ্রহণে সরকারের ৫৬ কোটি টাকা ব্যয় হ্রাস, উচিতপুর পর্যটন সেন্টার কাম রেস্ট হাউজের উদ্বোধন, দুর্গাপুর পর্যটন কেন্দ্র কাম রেস্ট হাউজ সেন্টার নির্মাণ, পুরাতন কালেক্টরেট প্রাঙ্গণে ইউমেন্স সেলস এন্ড ডিসপ্লে সেন্টার উদ্বোধন, ডিসি মসজিদের সংস্কার, সার্কিট হাউজের বাউন্ডারী ওয়াল ও গেট নির্মাণ, অফিস প্রাঙ্গণে গ্যারেজ নির্মাণ, ব্র‍্যান্ডিং শপ নির্মাণ, পাবলিক লাইব্রেরির সংস্কার ও বঙ্গবন্ধু চত্ত্বর পুকুর সুসজ্জিতকরণ।

জেলা প্রশাসনের অর্থায়নে অসহায় দরিদ্রের মাঝে অন্তত ২০টি ঘর প্রদান করেন প্রশাসনের এই কর্মবীর। প্রায় ১হাজার ৫শত লোক গণশুনানীর মাধ্যমে অভাব, অভিযোগ এর প্রতিকার পেয়েছেন। রোগাক্রান্ত, অসহায় দরিদ্রদের মাঝে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান, নেত্রকোনা ফাউন্ডেশন হতে শিক্ষার্থীর মধ্যে শিক্ষা সহায়তার টাকা প্রদান করেন।

গেলো বছরের (২০২২ সালের) প্রলয়ঙ্কারী বন্যায় ফান্ড গঠন ও বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ ও আর্থিক সহযোগিতা প্রদান, পরিবার পরিকল্পনা বিভাগসহ অন্যান্য নিয়োগ কার্যক্রম শতভাগ স্বচ্ছতার সাথে সম্পন্ন করণ, নেত্রকোনা জেলা প্রেসক্লাব মিলনায়তন আধুনিকায়ন ও ইন্টেরিয়র স্থাপন উল্লেখ যোগ্য।

এছাড়াও ময়মনসিংহ বিভাগে ২০২২-২৩ অর্থবছরে সর্বোচ্চ যাকাত আদায়কারী জেলা প্রশাসক হিসেবেও তিনি মনোনীত হয়েছেন। দেশের মানুষকে যাকাত দিতে উদ্বুদ্ধ ও যাকাত আদায়ে জেলা প্রশাসকসহ কর্মকর্তাদের উৎসাহিত করতে ২০১৭ সাল থেকে এ সম্মাননাটি চালু করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ বলেন, `সরকারি যাকাত ফান্ডে ইসলামী বিধি অনুসারে যাকাত আদায় ও বিতরণ করা হয়। এ অর্থ দিয়ে সমাজের অবহেলিত জনগোষ্ঠীর ও অসহায় পিছিয়ে পড়া মানুষদের সহযোগিতা করার মাধ্যমে তাদের আর্থসামাজিক উন্নয়ন সম্ভব হয়।'

তাঁর এই কর্মমুখর কর্মকাণ্ডের জন্য তিনি তেমনিভাবে নেত্রকোনার মানুষের কাছে কৃতজ্ঞতায় আবদ্ধ, তেমনি প্রশাসনিক ভাবেও পেয়েছেন তার প্রশংসাসূচক স্বীকৃতি। এভাবেই তিনি একজন সোশ্যাল আর্কিটেক্ট (আদর্শ সমাজের স্থপতি) হিসাবে জেলায় পরিচিতি লাভ করেছেন। তিনি তাঁর এহেন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে একদিন সারা দেশেও সম্মানিত হবেন, পাবেন তার সততার পুরস্কার, এমটাই প্রত্যাশা করছেন নেত্রকোনার আপামর জনতা।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: