নাগেশ্বরীতে বিয়ের প্রলোভনে যুবতীকে ধর্ষণের ভিডিও ভাইরাল

প্রকাশিত: ৩০ মে ২০২৩, ০৬:১৬ পিএম

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে বিয়ের প্রলোভনে এক যুবতীকে তিন বছর ধরে ধর্ষণ করে তার ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমিল করার অভিযোগ উঠেছে এক যুবকের বিরুদ্ধে। এরকম একটি ভিডিও ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার নেওয়াশী ইউনিয়নের পন্তাবাড়ী এলাকায়।

অভিযোগে জানা যায়, ওই এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য মৃত হযরত আলীর ছেলে জাকারিয়া ইসলাম (৩২)এর সাথে পার্শ্ববর্তী এক যুবতীর তিন বছর আগে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ সময় ওই যুবক তাকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে নিয়ে গিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারিরীক সম্পর্ক স্থাপন করে। এরই মধ্যে যুবক জাকারিয়া আলম যুবতীকে বিয়ে না করে অন্যত্র বিয়ে করে। এরই মধ্যে ওই যুবতিরও বিয়ে হলে তাদের দুজনের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে হয়ে যায়। এরই মধ্যে ওই যুবক যুবতীর স্বামীকে তাদের প্রেমের সম্পর্ক ও অবৈধ মেলামেশার বিষয়টি জানালে তার স্বামী তাকে ডিভোর্স দেয়। জাকারিয়া তাকে আবারও মেলামেশা করার প্রস্তাব জানালে সে তাতে রাজি না হলে ওই যুবক এতে ক্ষিপ্ত হয়ে জানায় যে তাদের অনৈতিক মেলামেশার ভিডিও তার কাছে আছে। পুনরায় এমন কাজে লিপ্ত না হলে এই ভিডিও ভাইরাল করার হুমকী দিয়ে আবারও একাধিকবার ধর্ষণ করে এবং তার দুই বন্ধুকে দিয়ে ধর্ষণের হুমকী দেয় ও অর্থ দাবি করে। পরে সে তাদেরকে ধার দেনা করে টাকা দিলেও তারা তাকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এতে রাজি না হওয়ায় ওই যুবক বিভিন্নভাবে তাদের অনৈতিক কার্যকলাপের ২ মিনিট ২ সেকেন্ডের একটি ভিডিও এবং ৩ মিনিট ১৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিও কল রেকর্ডে অশ্লীল দৃশ্যে কথা বলার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল করে। তবে একটি ভিডিওতে ওই যুবকের মুখাবয়ব ঝাপসা করা হয়েছে এবং ভিডিও কল রেকর্ডের ভিডিওতে যুবকের ছবির জায়গায় কুকুরের ছবি সংযুক্ত করে একটি মিউজিক ব্যবহার করে ভিডিও ছড়ানো হয়েছে। এখন মেয়েটি লোকলজ্জার ভয়ে বাড়ির বাইরে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। পরে বিষয়টি সোমবার নাগেশ্বরী থানায় জাকারিয়া হোসেন ও তার বন্ধু একই এলাকার আব্দুর রহিমের ছেলে শফিকুল ইসলাম (২৫)কে অভিযুক্ত করে অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী ওই যুবতী।

ওই যুবতী বলেন, আমার সাথে এতদিন সম্পর্ক করে আমাকে সে ব্যবহার করেছে, জাকারিয়ার আরও বন্ধুদেরকে দিয়েও আমার সাথে খারাপ কাজ করার প্রস্তাব দিয়েছে। আমাকে তারা বাজারের মেয়ের মতো বানাতে চাচ্ছে। আমার কী সম্মান নাই? আমি এ জন্য আজ (২৯ মে) সকাল ১১টার দিকে থানায় গিয়ে ওসি স্যারের কাছে গিয়ে অভিযোগ দিয়ে এসেছি। পরে থানা থেকে ২ জন পুলিশ এসে গেছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।

এ ব্যাপারে কথা বলতে জাকারিয়ার বাড়িতে গিয়ে তাকে ডাকলে তার ভাবি বের হয়ে এসে জানায় যে জাকারিয়া বাড়ির পাশের এক দোকানে গেছে। এরপর তার বড় ভাই আব্দুল মোতালেবসহ কয়েকজন এসে সাংবাদিকদের জানায় সে বাড়িতে নাই। তার আত্মীয়ের বাড়ি লালমনিরহাটে গেছে। এদিকে জাকারিয়ার একটি কল রেকর্ড পাওয়া গেছে যেখানে তার এই কার্যকলাপের স্বীকারোক্তি রয়েছে।

এ ব্যাপারে তার বড় ভাই আব্দুল মোতালেব জানায়, আমি বিষয়টি শুনেছি। তবে সঠিক জানা নেই। আমি সাবেক চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেনসহ মেয়ের বাড়িতে গিয়ে ঘটনা শুনব কী হয়েছে। তবে জাকারিয়া আলমের সাথে মোবাইলফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান মাহফুজার রহমান মুকুল বলেন, ওই মেয়ের এর আগে ২বার বিয়ে হয়েছে। ওই ছেলেও বিয়ে করে সংসার করে খাইতেছে। এর মধ্যে একটা ঝামেলা করতেছে। এটা কেমন একটা। এখন আমার কথা হইলো এই জিনিসগুলো সামাজিকভাবে কিছু হয়ে থাকলে বসে একটা সুষ্ঠু সমাধান করব। কিন্তু স্থানীয় সরকার হিসেবে জনপ্রতিনিধির একটা গুরুত্ব আছে, এটা গুরুত্ব দেয়া দরকার। আমরা গ্রামে বসে একটা সমাধান করে দিতে পারব।

নাগেশ্বরী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আশিকুর রহমান বলেন, মৌখিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

পাঠকের মন্তব্য: