• ঢাকা
  • ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৪
  • শেষ আপডেট ২৯ সেকেন্ড পূর্বে
নিউজ ডেস্ক
বিডি২৪লাইভ, ঢাকা
প্রকাশিত : ১৮ এপ্রিল, ২০২৪, ০৮:২২ সকাল
bd24live style=

৮৭ হাজার টাকার মদ খান পরীমণি, পার্সেল না দেওয়ায় চালান তাণ্ডব

সংগৃহীত ছবি

নায়িকা পরীমণির বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদের করা হত্যাচেষ্টা মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) এ মামলার প্রতিবেদন গ্রহণ বিষয়ে শুনানির জন্য দিন ধার্য রয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই ঢাকা জেলার পরিদর্শক মো. মনির হোসেন সম্প্রতি ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। প্রতিবেদনে আসামি পরীমণি ও তার কস্টিউম ডিজাইনার জুনায়েদ বোগদাদী জিমি ওরফে জিমের বিরুদ্ধে বাদীকে মারধর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে আরেক আসামি ফাতেমা তুজ জান্নাত বনির বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়নি বলা হয়েছে।

তদন্ত প্রতিবেদনে যা যা বলা হয়েছে—

মদপান করতে রাত সাড়ে বারোটার দিকে বোট ক্লাবে পরীমণি

এ মামলার ঘটনার চাক্ষুষ সাক্ষী তুহিন সিদ্দিকি অমির সঙ্গে জুনায়েদ বোগদাদী জিমি ওরফে জিমের পূর্ব পরিচয়ের সুবাদে মাঝে মধ্যে ম্যাসেঞ্জারে যোগাযোগ হতো এবং একে অপরের বাসায় আসা যাতায়াত ছিল। ২০২১ সালের ৮ জুন তুহিন সিদ্দিকি অমি রাত সাড়ে ৯টার দিকে বনানী কিংস বেকারি শপে অবস্থানকালে পরীমণির কস্টিউম ডিজাইনার জিম তাকে ম্যাসেঞ্জারে কল করে বনানীর বাসায় যেতে অনুরোধ করেন। বাসায় যাওয়ার পর অমির সঙ্গে পরীমণি এবং ফাতেমা তুজ জান্নাত বনিদের সাক্ষাৎ হয়।

এরপর তারা অমির কাছে জানতে চান এত রাতে উত্তরা ক্লাবে যাওয়া যাবে কি না? উত্তরে অমি জানান, রাত বেশি হচ্ছে তাই এখন উত্তরা ক্লাবে যাওয়া যাবে না। তখন জিমি জানতে চান যে, তাহলে বোট ক্লাবে যাওয়া যাবে কি না? জবাবে ঢাকা বোট ক্লাবে যাওয়া যাবে মর্মে জানান অমি। তখন পরীমণির অনুরোধে অমিসহ তারা চারজন অমির কালো রঙের জিপ গাড়িতে করে রাত ১২টা ২২ মিনিটে ঢাকা বোট ক্লাবে আসেন। গাড়ির পেছনে পরীমণির সাদা রঙের খালি জিপ গাড়ি বোট ক্লাবে প্রবেশ করে।

ক্লাবের দোতলায় উঠে প্রথমে পরীমণি ও ফাতেমা তুজ জান্নাত বনি বারের সামনে থাকা টয়লেট ব্যবহার শেষে বারের ভেতরে প্রবেশ করেন এবং টিভির সামনের টেবিলে বসেন। টেবিলে সাক্ষী অমিও বসেন। সৌজন্যতার খাতিরে অমি তাদেরকে স্ন্যাক্স জাতীয় খাবার নিজ খরচে পরিবেশন করে আপ্যায়ন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পরীমণি একটি এক লিটারের ব্লু-লেবেল মদের বোতল অর্ডার করেন। পরীমণি ও তার সঙ্গে থাকা জিম ও বনি নিমিষেই সেই বোতলের এ্যালকোহল পান করে বোতল খালি করে ফেলেন এবং অনুরূপ আরেকটি বোতলের অর্ডার করেন। তারা ঐ বোতলের আংশিক মদ পান করেন।

ঘটনার সূত্রপাত যেভাবে

আড্ডার একপর্যায়ে তাদের ২/৩ টেবিল পেছনে বোটক্লাবের নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং প্রতিষ্ঠাতা সদস্য নাছির উদ্দিন মাহমুদকে আরো দুইজন ব্যক্তির সঙ্গে বসা দেখতে পান অমি। তখন অমি পরীমণিকে নিয়ে নাছির মাহমুদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন এবং পুনরায় তাদের টেবিলে এসে বসে মদ্যপানসহ গল্পগুজব করতে থাকেন। কিছুক্ষণ পর নাছির মাহমুদ ও তার সঙ্গে থাকা আরো দুইজন যখন বার থেকে চলে যাচ্ছিলেন, তখন পরীমণি নাছির মাহমুদকে ডেকে বললেন, ‘ভাই আমি আসলাম, আর আপনি এক্ষুনি চলে যাচ্ছেন? আমাদের সঙ্গে আরেকটু বসেন। আসেন কিছুক্ষণ গল্প করি।’

তখন পরীমণির অনুরোধে নাছির মাহমুদ ফিরে এসে পুনরায় তার টেবিলে বসেন। কিছুক্ষণ পর ড্রিংকস শেষে পরীমণি ওয়েটারকে আরো এক লিটারের তিনটি ব্লু লেবেল মদের বোতলসহ দুই বোতল ওয়াইন পার্সেল দেওয়ার জন্য অর্ডার করেন। ওয়েটার তখন পরীমণিকে দুই বোতল ওয়াইন পার্সেল দিলেও ব্লু লেবেল মদের বোতল স্টকে না থাকায় পার্সেল দিতে পারেননি।

তখন পরীমণি ডিসপ্লেতে থাকা একটি ব্লু লেবেল বোতল পার্সেল করে দিতে বললে ওয়েটার জানান বোতলটি বিক্রির জন্য নয় এবং ক্লাবের মেম্বার ছাড়া পার্সেল দেওয়া যাবে না। কিন্তু পরীমণি জোর করে ঐ বোতল নিতে চান এবং টেবিলে হট্টগোল করতে থাকেন। পরীমণি উত্তেজিত হয়ে কার্ডহোল্ডার বের করে দুই-তিনটি ব্যাংক কার্ড দেখিয়ে বলেন, ‘আমি কি ফকিরনি? আমার বিল আমি পরিশোধ করব। আমি এটা নেবই।’

তখন পরীমণির সঙ্গে থাকা ফাতেমা বনি বলেন, ‘ওনাদের যদি রুলস থাকে, মেম্বার ছাড়া নেওয়া যাবে না, তাহলে তুমি নিও না।’ 

সেই রাতে ঢাকা বোট ক্লাবের সিসিটিভি ফুটেজে ঘটনার দৃশ্য

তখন পরীমণি বনিকে থাপ্পড় মেরে বলে, ‘আমাকে দেখে কি মাতাল মনে হয়?’ পরীমণির সঙ্গে থাকা জিম তাকে শান্ত করতে গেলে তাকেও পরীমণি থাপ্পড় মারেন। একপর্যায়ে পরীমণি খুবই উত্তেজিত হয়ে টেবিলের উপর থাকা গ্লাস, অ্যাশট্রে, বোতল ফ্লোরে এদিক ওদিক ছুঁড়তে থাকেন। তখন নাছির মাহমুদ ক্লাবের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার্থে পরীমণিকে বুঝিয়ে শান্ত করার চেষ্টা করেন। এতে পরীমণি আরো ক্ষেপে গিয়ে একটি অ্যাশট্রে নিয়ে তার দিকে ছুড়ে মারেন। যা তার ডান কানের উপরে মাথায় লাগে। তখন নাছির মাহমুদ ক্লাবে পরীমণিকে সঙ্গে করে আনায় অমির উপর রেগে যান এবং বলেন, ‘এরকম বেয়াদব মহিলা নিয়ে কেন ক্লাবে আসেন, কাল আপনার নামে নোটিশ হবে। এক্ষুনি এদেরকে নিয়ে বেরিয়ে যান।’

তখন জিম তেড়ে এসে বাদী নাছির মাহমুদকে গালমন্দ করতে করতে ২/৩ টা কিলঘুসি মারেন। এরপর আবারও পরীমণি বারের ভেতরে যত্রতত্র গ্লাস ছুড়ে ভাঙচুর করতে থাকেন। একটি গ্লাস নাছির মাহমুদের বুকে লাগলে তিনি আঘাতপ্রাপ্ত হন। তখন নাছির মাহমুদ বোট ক্লাব ত্যাগ করে চলে যান। ক্লাব ত্যাগ করার মুহূর্তে পরীমণিকে ক্লাব ছেড়ে চলে যেতে বলার জন্য ক্লাবের নিচে কর্মরত সিকিউরিটি গার্ডকে নির্দেশ দিয়ে যান। নাছির মাহমুদ আহত অবস্থায় ঐ রাতে আড়াইটার দিকে উত্তরা ক্রিসেন্ট হাসপাতালে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নেন।

মদের বিল না দিয়েই চলে যান পরীমণি

বার ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য সিকিউরিটি গার্ড পরীমণিকে বারবার বললেও তারা যেতে চাননি। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর সিকিউরিটি গার্ড বারের লাইট ও এসি কমিয়ে দেয়। তারপরও পরীমণি যেতে না চাইলে অমি তাকে বার থেকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন এবং পরীমণির সঙ্গে থাকা জিম ও সিকিউরিটি গার্ড তাকে ধরে গাড়িতে তুলে দেয়। ক্লাবে তাদের খাওয়া দুই বোতল ব্লু লেবেলের দাম ও পার্সেলে নেওয়া দুই বোতল ওয়াইনের দাম পরিশোধ না করেই তারা ক্লাব থেকে চলে যায়। এই চারটি বোতলের দাম ৮৭ হাজার ৬৫০ টাকা। এছাড়া ক্লাবের বারের ভেতরে গ্লাস, অ্যাশট্রে, বোতল ভাঙচুর করায় আনুমানিক ২০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়।

সেই রাতে ঢাকা বোট ক্লাবের সিসিটিভি ফুটেজে ঘটনার দৃশ্য
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই ঢাকা জেলার পরিদর্শক মো. মনির হোসেন বলেন, মামলার তদন্তভার পাওয়ার পর থেকে সচেতনতার সঙ্গে কাজ করেছি। বাদীর অভিযোগের বিষয়ে নিবিড় তদন্ত করে এ প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করেছি। ঘটনার চাক্ষুষ সাক্ষী আছে, মেডিকেল রিপোর্ট আছে। আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ ও তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিবেদন দাখিল করেছি।

বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) এ মামলার প্রতিবেদন গ্রহণ বিষয়ে শুনানির জন্য দিন ধার্য রয়েছে। ঢাকার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। 

বাদীর আইনজীবী আবুল কালাম মোহাম্মদ সোহেল বলেন, আসামিদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করেছি, পিবিআইয়ের তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। ১৮ এপ্রিল প্রতিবেদন গ্রহণ বিষয়ে শুনানির জন্য দিন ধার্য রয়েছে। আমরা পরীমণিসহ আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করব।

২০২১ সালের ৬ জুলাই ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজীব হাসানের আদালতে বোট ক্লাবের সভাপতি ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ বাদী হয়ে পরীমণিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন। এ মামলার অন্য দুই আসামি হলেন- পরীমণির সহযোগী ফাতেমা তুজ জান্নাত বনি ও জুনায়েদ বোগদাদী জিমি ওরফে জিম।

মামলায় নাসিরউদ্দিন উল্লেখ করেন, পরীমণি ও তার সহযোগীরা অ্যালকোহল সেবনে অভ্যস্ত। তারা সুযোগ বুঝে বিভিন্ন নামিদামি ক্লাবে ঢুকে অ্যালকোহল পান করেন এবং পার্সেল নিয়ে মূল্য পরিশোধ করেন না। এরপর পরীমণি তার পরিচিত পুলিশ কর্মকর্তাদের দিয়ে মিথ্যা মামলা করিয়ে হয়রানির ভয় দেখান। ২০২১ সালের ৯ জুন রাত ১২টার পর আসামিরা সাভারের বোট ক্লাবে ঢোকেন এবং দ্বিতীয় তলার ওয়াশরুম ব্যবহার করেন। পরে তারা ক্লাবের ভেতরে বসে অ্যালকোহল পান করেন।

এতে আরও বলা হয়, বাদী (নাসির উদ্দিন মাহমুদ) ও তার সহযোগী শাহ শহিদুল আলম রাত ১টা ১৫ মিনিটে যখন ক্লাব ত্যাগ করছিলেন, তখন পরীমণি উদ্দেশ্যমূলকভাবে নাসিরকে ডাক দেন। তাদের সঙ্গে কিছু সময় বসারও অনুরোধ করেন। একপর্যায়ে পরীমণি অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে নাসিরকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেন এবং একটি ব্লু লেবেল অ্যালকোহলের বোতল বিনামূল্যে পার্সেল দেওয়ার জন্য চাপ দেন। নাসির উদ্দিন এতে রাজি না হওয়ায় পরীমণি তাকে গালমন্দ করেন। নাসির এবং আসামিদের মধ্যে বাদানুবাদের একপর্যায়ে পরীমণি বাদীর দিকে একটি সারভিং গ্লাস ছুড়ে মারেন এবং হাতে থাকা মোবাইল ফোনও ছুড়ে মারেন। এতে নাসির মাথায় এবং বুকে আঘাতপ্রাপ্ত হন।

বাদী মামলায় আরও উল্লেখ করেন, পরীমণি ও তার সহযোগীরা তাকে (নাসির উদ্দিনকে) মারধর ও হত্যার হুমকি দিয়েছেন এবং বোট ক্লাবে ভাঙচুর করেছেন। এ ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য পরীমণি সাভার থানায় বাদী নাসির উদ্দিনসহ দুজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ তুলে মামলা করেন।

বাঁধন/সিইচা/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ [email protected]