
ফেনীর সোনাগাজীতে কলাগাছের ভেলায় ভাসমান অবস্থায় কাফনের কাপড় পরানো অজ্ঞাত এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। অজ্ঞাত ওই পুরুষের বয়স আনুমানিক ৬০ থেকে ৬৫ বছর, মুখে সাদা দাড়ি। অর্ধগলিত মরদেহটির সঙ্গে কফি কালারের একটি চাদর ছিল।
বুধবার (২৮ আগস্ট) বিকেলের দিকে উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের চরলামছি রাস্তার মাথায় মরদেহের দাফন সম্পন্ন করেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার বিকেলের দিকে ইউনিয়নের বাদামতলী এলাকার মুহুরী নদীর পাশে ঝোপের মধ্যে একটি মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয়রা। পরে সেখান থেকে উদ্ধার করে চরলামছি রাস্তার মাথায় বেড়িবাঁধের পূর্বপাশে মরদেহটি দাফন করা হয়েছে।
মোকাররম হোসেন নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, মৃত্যুর পর বন্যার কারণে দাফনের জায়গা না পাওয়ায় মরদেহটি ভাসিয়ে দিয়েছেন এমনটি ধারণা করছি। মরদেহটি নদীর উত্তর দিক থেকে এসেছে। অর্ধগলিত হওয়ায় বেশিক্ষণ দেরি না করে স্থানীয়ভাবে জানাজা শেষে দাফন করা হয়েছে।
এদিকে মরদেহ উদ্ধার ও দাফনের বিষয়টি অবগত নন বলে জানিয়েছেন সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুদ্বীপ রায়। তিনি বলেন, বন্যায় উপজেলায় এখন পর্যন্ত চারজনের মৃত্যুর তথ্য রয়েছে। তবে এ মরদেহের ব্যাপারে পুলিশ অবগত নয়।
এর আগে স্থানীয় সংবাদকর্মী নাজমুল হক শামীম একটি গণমাধ্যমকে জানান, গত শনিবার রাতে ফেনী শহরের মিজান রোডে সোনালী ব্যাংকের সামনে হাঁটু পানিতে একটি শিশুর (৫) মরদেহ ভেলায় ভাসতে দেখেন। কয়েকজন মানুষ সেই মরদেহটির জানাজা ও দাফনের জন্য নিয়ে যান। কিন্তু কোথায় সেটি দাফন করা হয়েছে তা আর জানা যায়নি।
এদিকে ওমানপ্রবাসী মাসুদ খান ফেসবুকে এক পোস্টে লেখেন, তার বাবা আলীম উল্লাহ (৭৩) মারা যাওয়ার পর মরদেহ কলাগাছের ভেলায় ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। আলীম উল্লাহ সদর উপজেলার মোটবী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাতসতী গ্রামের নাছির ভূঁইয়া বাড়ির বাসিন্দা। গত শুক্রবার ভোরে মারা যান তিনি। তখন পুরো গ্রাম পানিতে তলিয়ে থাকায় তার দাফনের ব্যবস্থা করা যায়নি। শনিবার স্বজনরা মরদেহ কলাগাছের ভেলায় ভাসিয়ে দেন। সঙ্গে একটি চিরকুটে তাকে দাফনের অনুরোধ করা হয়। সেখানে ঠিকানাও দেওয়া হয়।
ওই চিরকুটে লেখা ছিল, ‘এই মৃতদেহটি অতিরিক্ত বন্যার কারণে আমরা দাফন করতে পারিনি। দুদিন অতিবাহিত হওয়ার পর আমরা পানিতে ভাসিয়ে দিয়েছি। সঙ্গে আমাদের এলাকার নাম-ঠিকানাসহ ফোন নম্বর দেওয়া হয়েছে। যদি কেউ শুকনো জায়গা পান, তাকে কবর দিয়ে দেবেন এবং আমাদের এই ঠিকানায় যোগাযোগ করবেন। আপনাদের কাছে আমরা চিরকৃতজ্ঞ থাকব’।
বাঁধন/সিইচা/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর