
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে গাজী টায়ার্সের কারখানা ধ্বংসের বড় প্রভাব পড়তে পারে দেশের বাজারে। ব্যবসায়ীদের আশঙ্কা এতে সব ধরনের টায়ারের দাম বেড়ে যাবে। এমনকি কম দামে ভালো মানের পণ্য পাওয়ার সুযোগও কমে যেতে পারে।
এদিকে কারখানাটির ২ হাজারের বেশি শ্রমিক এখন কর্মহীন। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তারা ঘুরে দাঁড়াতে চান, তবে এর জন্য প্রয়োজন সরকারি সহযোগিতা।
বুয়েটের গবেষণা বলছে, দেশে প্রতিবছর প্রায় ২৫ লাখ টায়ারের চাহিদা রয়েছে। এতে টায়ার শিল্পের আকর্ষণীয় বাজারে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ।এই চাহিদা মেটাতে, দেশি কোম্পানি হিসেবে সবচেয়ে বেশি উৎপাদন ছিলো গাজী গ্রুপের। গত ২৬ আগস্ট একদল দুর্বৃত্ত কারখানাটিতে ব্যাপক লুটপাট চালিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়। আর এতে পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যায় কারখানাটি।
গাজী গ্রুপের চেয়ারম্যান গোলাম দস্তগীর গাজী বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী ছিলেন। তিনি রূপগঞ্জ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। ক্ষমতার পালাবদলের পর গত রোববার তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপরদিনই তার মালিকানাধীন এই কারখানায় আগুন দেওয়া হয়।
দেশের অন্যতম বৃহৎ এই টায়ার কারখানাটি ধ্বংসের কারণে দেশে পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
টায়ার বিক্রি করা প্রতিষ্ঠান বিএম এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আহসানুল করিম বলেন, ‘তারা (আমদানিকারক) এখন বলবে যে আগে তো দেশে হতো, এখন তো দেশে হচ্ছে না। আমরা ইমপোর্ট করে এনেছি, ডলারের দাম বেশি, আমাদেরকে ট্যাক্স দিতে হয়। এরকম অনেক কারণ দেখিয়ে তারা দাম বাড়িয়ে দেবে।’
এই খাতের ব্যবসায়ীরা আরও জানান, কম টাকায় যে মানের টায়ার দিতো গাজী গ্রুপ, আমদানি পণ্যে সে মান বজায় রাখা সম্ভব হবে না।
গাজী টায়ার্সের এই কারখানায় কাজ করতেন ২ হাজার ৩০০ শ্রমিক। এদের সবাই এখন কর্মহীন। এমন বাস্তবতায়ও ঘুরে দাঁড়াতে চায় প্রতিষ্ঠানটি। তবে এর জন্য সরকারের নীতি সহায়তা চেয়েছে তারা।
গাজী টায়ার্সের নির্বাহী পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘এরা কিন্তু সমস্ত ওয়ার্কার। আমরা কিন্তু এদেরকে রেখে দিয়েছি। আমি নিশ্চিত না, আগামী মাসে কোম্পানি এদেরকে বেতন কোথা থেকে দেবে। ওনাদের (সরকার) কাছে আমাদের সমস্ত বিষয়টার আদ্যপ্রান্ত তুলে ধরব। আমরা অবশ্যই তাদের সহযোগিতা চাইব। ওনাদের সুনজর ছাড়া, এলাকার মানুষের সুনজর ছাড়া আমাদের জন্য ঘুরে দাঁড়ানো সম্ভব না।’
কোম্পানির হিসাবে, দেশে ভারী যানবাহনের টায়ার বাজারের ৬০ শতাংশ আর ছোট টায়ার বাজারের ৪৫ শতাংশের জোগান হতো এই কারখানা থেকে। যার শুরুটা হয় ১৯৭৪ সালে।
রার/সা.এ
সর্বশেষ খবর