
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে ২০১৫ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের ডাকা দেশব্যাপী হরতাল-অবরোধের সময় মিয়া বাজার এলাকায় যাত্রীবাহী নৈশকোচে পেট্টোলবোমা হামলা চালিয়ে ঘুমন্ত আট যাত্রীকে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় তৎকালীন সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক রেলপথ মন্ত্রী মুজিবুল হক, সাবেক আইজিপি শহীদুল হকসহ ১৩০ জন নেতা-কর্মীর নামে উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত ৬০ জনের বিরুদ্ধে নতুন একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) কুমিল্লার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৫নং আমলী আদালতে এই মামলা দায়ের করা হয়েছে। আদালতের বিচারক আবু বকর সিদ্দিক মামলাটি এফআইআর হিসেবে গ্রহণ করার জন্য চৌদ্দগ্রাম থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন। মামলার বাদী অ্যাডভোকেট কাইমুল হক রিংকু মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলায় উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন, সাবেক রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক, সাবেক আইজিপি শহীদুল হক, সাবেক র্যাব প্রধান বেনজির আহমেদ, কুমিল্লার সাবেক এসপি আনোয়ার হোসেন, চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার সাবেক মেয়র মিজানুর রহমান, চৌদ্দগ্রাম থানার সাবেক ওসি উত্তম চক্রবর্তী, সাব ইন্সপেক্টর নুরুজ্জামান, সাব ইন্সপেক্টর ইব্রাহিম, সাব ইন্সপেক্টর মো: নাজমুল হক, পলিশ পরিদর্শক মো: ফিরোজ কবির, এএসআই কিশোর বড়–য়া, এএসআই মহসিন তালুকদার, এএসআই সহিদুর রহমান, পিপি এড. মজিবুর রহমান, মির হোসেন মিরু, সাবেক ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মোশারেফ হোসেন, আক্তার হোসেন, সোহেল মিয়া, খালেদ সাইফুল্লাহ, জেবিন, জুয়েল, আবু তাহের সর্দার, খন্দকার আলমগীর, হিরণ মিয়া, ইমরানসহ অন্যান্যরা।
বাস মালিক আবুল খায়ের বলেন, চালক ও তার সহকারীর সাথে কথা বলে জানেন, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রত্যক্ষ মদদে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়। এদিকে স্থানীয় এমপি রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক বাস মালিককে ডেকে নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতের নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করতে বলেন। তিনি রাজি না হওয়ায় মুজিবুল তাকে থাপ্পড় মেরে বলেন-এই লাইনে কিভাবে বাস চালাস তা দেখে নেবো। পরে তার লিজ নেয়া ৫টি বাস তারা নিয়ে যান। বাস মালিক ১০ বছর পালিয়ে ছিলেন। তিনি দোষীদের বিচার চান।
উল্লেখ্য, ২০২৫ সালের ঘটনায় চৌদ্দগ্রাম থানার উপপরিদর্শক নুরুজ্জামান হাওলাদার বাদী হয়ে দুটি মামলা করেন। এতে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা ও চৌদ্দগ্রামের সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহেরকে প্রধান আসামি এবং বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, দলের কেন্দ্রীয় নেতা ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, রুহুল কবির রিজভী ও সালাহউদ্দিন আহমেদকে হুকুমের আসামি করে দুটি মামলায় ১১২ জনের নাম উল্লেখসহ ১৪২ জনকে আসামি করা হয়। মামলাটির বিচার আদালতে চলমান রয়েছে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর