
কয়লা চোরাকারবারি ও চাঁদাবাজদের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার সীমান্ত এলাকার চারাগাও, লাকমা, কলাগাও, জঙ্গলবাড়ি, বাগলী, লালঘাট, চাঁনপুর, যাদুকাটা নদীসহ ২০টি পয়েন্ট।
ঐসব এলাকার চিহ্নিত চোরাচালানীরা চোরাই পথে অবৈধভাবে ভারত থেকে সরকারের রাজস্ব বঞ্চিত করে কোটি কোটি টাকার কয়লা ও ভারতীয় বিভিন্ন ব্যান্ডের মাদক বাংলাদেশ এনে নদী পথে পাচার করছে মধ্যনগর,কলমাকান্দা উপজেলায় ও তাহিরপুর উপজেলার আনোয়ার পুর বাজার থেকে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সড়ক পথে পাচার হচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে কোনো ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়না।
এরই একটি অংশ উপজেলার বালিজুড়ী ইউনিয়নের আনোয়ারপুর বাজারের দক্ষিণ দিকে গুদাম ঘর সড়ক এলাকায় প্রতিদিন সীমান্ত এলাকা থেকে নৌকায় বোঝায় করে এনে দিনে ও রাতে ১০-১৫ ট্রাকে করে কোটি টাকার কয়লা ও ভারতীয় বিভিন্ন ব্যান্ডের মাদক দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠাচ্ছে একটি চোরাচালানি চক্র। আর প্রতি ট্রাক থেকে স্থানীয় চাঁদাবাজ চক্র উঠাচ্ছে ৪-৫ হাজার টাকা।উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে একাধিক বার কিন্তু কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, দিনে যেমন তেমনি রাতে পাল্টে যায় এখানকার দৃশ্য। যেন শিল্পনগরীর মত কয়লা চোরাই পণ্যবাহী গাড়ি দাপিয়ে বেড়ায় সড়কে। আর নদীর পাড়েই কয়লার ডিপু করে রাখলেও সংঘবদ্ধরা চোরাচালানীরা এবার নৌকা থেকে সরাসরি ট্রাকে তুলে পাচার করে দিচ্ছে সড়ক পথে তাহিরপুর বিশ্বম্ভরপুর সুনামগঞ্জ সড়ক দিয়ে।
এই বিষয়টি বর্তমানে ওপেন সিক্রেট হলেও কেউ যেন এর দায় নিচ্ছে না। অবৈধ কয়লা পাচার ও চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে নিচ্ছেন না কোন পদক্ষেপ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। আর কোনো ভাবেই থামছেই না এই চোরাচালানের এই কর্যক্রম।
এ নিয়ে উপজেলার বড়ছড়া, চারাগাও ও বাগলী তিনটি শুল্ক স্টেশনের ৮শতাধিক বৈধ ব্যবসায়ী গণ ক্ষতি গ্রস্থ হচ্ছেন বলে জানিয়েছেন। এদিকে চোরাই পথে ভারতে গিয়ে কয়লা আনতে গিয়ে কয়লা গুহায় পাথর চাপা পরে গত ১ বছরে ৯ যুবকের মৃত্যু হয়েছে। তারা সবাই উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা।
তাহিরপুর কয়লা আমদানিকারক শফিক মিয়া,জমির মিয়াসহ অনেকেই জানান, সীমান্তের চিহ্নিত চোরাচালানীদের কারণে আমরা বৈধ কয়লা ব্যবসায়ীরা ক্ষতি গ্রস্থ হচ্ছি শুধু তাই নয় সরকার ও কোটি কোটি টাকার রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছেন। ঐসব চোরাচালানীদের কারণে সীমান্তের যুবকেরা ভারতের কয়লা গুহায় গিয়ে কয়লা মাদক আন্তে গিয়ে মৃত্যু হচ্ছে।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক আনোয়ারপুর বাজারের স্থানীয় বাসিন্দাগণ বলেন, এই চোরাচালানি সিন্ডিকেট ও চাঁদাবাজ চক্র খুবই শক্তিশালী। ভয়ে আমরা কিছু বলি না। তবে এভাবে চলতে থাকলে অপরাধীরা দিন দিন মাথাচড়া দিয়ে উঠবে সেই সাথে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হবে।
এই বিষয়ে তাহিরপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন জানান, এই বিষয়ে খোঁজ খবর নিয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। কোনো ছাড় দেয়া হবে না।
শাকিল/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর