
টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার কুরমুশী গ্রামের প্রবাসী নাজির উদ্দিন (৩৭) রাশিয়ায় চাকরির আশায় পাড়ি জমিয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে পৌঁছে বাস্তবতা হয় ভিন্ন।
চাকরির বদলে তাকে সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়ে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে পাঠানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তার পরিবার।
নাজিরের বাবা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক ফয়েজ উদ্দিন এবং স্ত্রী কুলসুম বেগম জানান, ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠান ‘এসপি গ্লোবাল’-এর এক ব্যক্তি মামুনের মাধ্যমে ১২ লাখ ২০ হাজার টাকায় নাজিরের রাশিয়ায় একটি প্যাকেজিং কোম্পানিতে চাকরির ব্যবস্থা করা হয়।
২০২৪ সালের ১৫ ডিসেম্বর রাশিয়ায় পৌঁছানোর পর নাজিরকে একটি ক্যাম্পে রাখা হয়। পরে তাকে ও আরও অনেক বাংলাদেশি যুবককে ১৪ দিনের একটি সামরিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এরপর তাদের নিয়ে যাওয়া হয় ইউক্রেন সীমান্তে। সেখানে নাজির তিন মাস সীমান্ত পাহারার কাজ করেন।
গত ১৬ এপ্রিল নাজির মোবাইল ফোনে তার বাবা ও স্ত্রীকে ফোন করে কেঁদে জানান, তাকে সম্মুখযুদ্ধে পাঠানো হবে এবং আর ফিরে আসার কোনো উপায় নেই। এরপর সেদিনই তাকে রণাঙ্গনে পাঠানো হয়। ওই সময়ের পর থেকে নাজিরের মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে।
এ খবরে নাজিরের পরিবারে নেমে এসেছে চরম দুশ্চিন্তা ও কান্নার রোল। স্ত্রী কুলসুম বেগম বলেন, “আল্লাহ যেন নাজিরের প্রাণভিক্ষা দেন। আমাদের তিন বছরের ছেলেটা বাবার মুখ দেখতে চায়। আল্লাহ আমাদের দুয়ারে ওকে ফিরিয়ে দিন।”
অন্যদিকে বাবা ফয়েজ উদ্দিন একমাত্র ছেলের সন্ধানে গত ১৫ দিন ধরে বিভিন্ন দপ্তর ও মানবাধিকার সংস্থায় যোগাযোগ করে চলেছেন। তিনি সরকারের কাছে দ্রুত নাজির উদ্দিনকে ফেরত আনার জন্য সাহায্য কামনা করেছেন।
এ ঘটনায় এলাকায় তীব্র প্রতিক্রিয়া ও উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও দূতাবাসের কার্যকর পদক্ষেপ না থাকলে আরও অনেক তরুণ একই পরিণতির শিকার হতে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে রাশিয়াস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস বা জনশক্তি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এখনো কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর