
২০১৮ সালের কোটা সংস্কার দাবির আন্দোলনের বছরে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কটুক্তি এবং ওই বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্যের বাসভবন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মামলায় ষড়যন্ত্রমূলক ছিল, বলে দাবি করেছেন গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও ঢাবির সাবেক শিক্ষার্থী মো. রাশেদ খাঁন।
এ ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান ও অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামালসহ ১৩ জনের নামে মামলা করেছেন রাশেদ।
রোববার (৪ মে) বিকেলে রাজধানীর শাহবাগ থানায় ওই মামলা দায়ের করেন মো. রাশেদ খাঁন। মামলার এজাহারে থাকা আসামীরা হলেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান, সাবেক প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রাব্বানী, আওয়ামীলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানক, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম, নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ, ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এস এম জাকির হোসাইন, ছাত্রলীগের ঢাবি শাখার সাবেক সভাপতি আবিদ আল হাসান।
এছাড়া একই সংগঠনের ঢাবি শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন প্রিন্স, নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় (পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় সভাপতি), নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ঢাকা কলেজ শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সাকিব হাসান সুইম, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ড কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মেহেদী হাসান, ঢাবি শিক্ষক সমিতির তৎকালীন সভাপতি অধ্যাপক মাকসুদ কামাল ( পরবর্তী উপাচার্য), ঢাবির সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মুহাম্মদ আবদুস সামাদ প্রমুখ। এছাড়াও অজ্ঞাতনামা ৫০০ ছাত্রলীগ কর্মীর বিরুদ্ধেও মামলায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার এজাহারে রাশেদ বলেন, ২০১৮ সালের ৮ এপ্রিল কোটা সংস্কার আন্দোলনের গণপদযাত্রা কর্মসূচি ছিলো। কর্মসূচি শাহবাগে চলাকালীন সময়ে সন্ধ্যা ৬.৩০ টার দিকে পুলিশ অতর্কিত হামলা ও টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে। এসময় আন্দোলন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ আশপাশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশের হামলার প্রতিবাদে ঢাবির বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে আসে। নারী শিক্ষার্থীরা হলের গেট ভেঙে এসে আন্দোলনে যোগ দেয়। আশপাশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্ত এই আন্দোলনে ঢাবির সাথে যুক্ত হয়। শিক্ষার্থীদের এই গণবিস্ফোরণ দেখে ভয় পেয়ে যায় শেখ হাসিনা। তখন আন্দোলন থামাতে তারা ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নেয়। হঠাৎ ৯ এপ্রিল রাত ১.০০ টার দিকে ঢাকা কলেজ ছাত্রলীগ লেখা টিশার্ট পরিহিত যুবকরা উপাচার্যের বাসভবনের গেট ভেঙে বাসভবনে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।
তিনি আরও বলেন, এই ঘটনায় ১০ এপ্রিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যেষ্ঠ নিরাপত্তা কর্মকর্তা এস এম কামরুল আহসান শাহবাগ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পরবর্তীতে ১ জুলাই শেখ হাসিনাকে কটুক্তির মামলায় আমাকে গ্রেফতারের পরে ৮ জুলাই উপাচার্যের বাসভবন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মামলায় আমাকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ। দুই মামলায় আদালত আমার ১৫ দিনের পুলিশি রিমান্ডে পাঠায়। পুলিশ হেফাজতে ও রিমান্ডে আমাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। কোন অন্যায় না করেও ষড়যন্ত্রমূলক মামলা দুটিতে আমাকে জেল ও রিমান্ড খাটতে হয়েছে।
এসময় তিনি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানান।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর