দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে সদ্য গত হওয়া এপ্রিল মাসে। গত মাসে ২ দশমিক ৭৫ বিলিয়ন বা ২৭৫ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে) যার পরিমাণ ৩৩ হাজার ৫৫০ কোটি টাকার বেশি। সে হিসেবে প্রতিদিন রেমিট্যান্সে এসেছে ৯ কোটি ডলারের বেশি।
রোববার (৪ মে) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান এ তথ্য জানিয়েছেন।
এর আগে ইতিহাসের সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল গত মার্চ মাসে। মার্চের পুরো সময়ে রেমিট্যান্স এসেছে ৩.২৯ বিলিয়ন (৩২৯ কোটি ডলার) ডলারের রেমিট্যান্স। বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২২ টাকা হিসাবে) যার পরিমাণ ছিল ৪০ হাজার ১৩৮ কোটি টাকা। সে হিসাবে প্রতিদিন এসেছিল প্রায় ১০.৬১ কোটি ডলার বা ১২৯৫ কোটি টাকা করে।
তথ্য বলছে, গত বছরের এপ্রিল মাসের পুরো সময়ে রেমিট্যান্স এসেছিল ২৪৫ কোটি ডলার। সে হিসাবে গত বছরের একই সময়ের চেয়ে সদ্য বিদায়ী এপ্রিলে ৩০ কোটি ডলার বেশি এসেছে। আর চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) রেমিট্যান্স এসেছে দুই হাজার ৪৫৩ কোটি ডলার। যা গত অর্থবছরে একই সময়ে এসেছিল দুই হাজার ৪৪ কোটি ডলার। সে হিসাবে গত অর্থবছরে একই সময়ের চেয়ে ৪০৯ কোটি ডলার বেশি এসেছে।
এর আগে গত ডিসেম্বরে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ২ দশমিক ৬৪ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছিল। সে রেকর্ড ভেঙে নতুন ইতিহাস গড়ে গত মার্চ মাস। আর এ নিয়ে অর্থবছরের দ্বিতীয় মাস আগস্ট থেকে টানা ৯ মাস দুই বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করছে।
চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে ১৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার রেমিট্যান্স আসে। এর পরের মাস আগস্টে এসেছিল ২২২ কোটি ১৩ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার, সেপ্টেম্বরে এসেছে ২৪০ কোটি ৪১ লাখ, অক্টোবরে এসেছে ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ মার্কিন ডলার, নভেম্বর মাসে এসেছে ২২০ কোটি ডলার, ডিসেম্বরে এসেছে ২৬৪ কোটি ডলার, জানুয়ারিতে ২১৯ কোটি ডলার এবং ফেব্রুয়ারিতে ২৫৩ কোটি ডলার ও মার্চে মার্চে এলো ৩২৯ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। আর সবশেষ এপ্রিলে এলো ২৭৫ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়। যা দেশের ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
এদিকে দেশে দীর্ঘদিন ধরেই উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ। তবে এবার তা ২৭ বিলিয়ন ছাড়িয়েছে। দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সাথে সাথে রিজার্ভের পরিমাণ বাড়তে থাকে। প্রবাসী আয়ের ইতিবাচক ধারায়সেই রিজার্ভ ২৭ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে।
গত ৩০ এপ্রিল পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ২৭ দশমিক ৪১ বিলিয়ন ডলার। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাব পদ্ধতি বিপিএম-৬ অনুযায়ী দেশের রিজার্ভ রয়েছে ২২ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলার।
২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ২১ বিলিয়নে নেমে যায় বিপিএম-৬ রিজার্ভ। এরপর ধারাবাহিক কমে ১৮ বিলিয়নে নামে। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অর্থপাচার কমে আসায় রিজার্ভ বাড়তে শুরু করে। ধীরগতিতে বেড়ে ১৯ মাস পর ২২ বিলিয়ন অতিক্রম করল রিজার্ভ। আর মোট রিজার্ভ ছাড়ায় ২৭ বিলিয়ন ডলার।
বাঁধন/সিইচা/সাএ