• ঢাকা
  • ঢাকা, রবিবার, ০৪ মে, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ১২ সেকেন্ড পূর্বে
এম. এ. আহমদ আজাদ
হাওরাঞ্চল প্রতিনিধি (সিলেট বিভাগ)
প্রকাশিত : ০৪ মে, ২০২৫, ১১:১৭ রাত

মহাসড়কের কাজ হঠাৎ থমকে গিয়ে যেন গলার কাটা

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

“মহাসড়কের কাজ হঠাৎ থমকে গিয়ে যেন গলার কাঁটা”- কৃষক রহিম উল্লার এই কথায় ফুটে উঠেছে নবীগঞ্জ ও বাহুবল উপজেলার কয়েক লক্ষ মানুষের সুখ-দুঃখ, কান্না আর বেদনার প্রতিচ্ছবি। ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ছয় লেনে উন্নয়নের কাজ শুরু হয় দুই বছর আগে। নবীগঞ্জ সীমান্তবর্তী শেরপুর থেকে শুরু করে বাহুবলের মীরপুর পর্যন্ত প্রায় ৬০ কিলোমিটার মহাসড়কজুড়ে চলছে উন্নয়ন কাজ।

এই প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ৫০টির অধিক বক্স কালভার্ট ও ১০টি সেতু, যেগুলো মূলত পানি নিষ্কাশনের সুবিধার্থে নির্মাণাধীন। কারণ, মহাসড়কের পশ্চিম পাশে রয়েছে ঘুঙ্গিয়াজুড়ি হাওর, আর পূর্ব পাশে দিনারপুর পাহাড়ি এলাকা—যেখান থেকে বর্ষায় প্রচুর পানি নেমে আসে। বিশেষ করে পুটিজুড়ি এলাকায় ঘন ঘন কালভার্ট নির্মাণ করা হচ্ছে পাহাড়ি ঢলের পানি সরাতে।

তবে সম্প্রতি হঠাৎ করেই মহাসড়ক প্রকল্পের কাজ থমকে গেছে। বড় সেতু দুটির কাজ চলছে ধীরগতিতে, আর কালভার্ট নির্মাণ পুরোপুরি বন্ধ। এতে মহাসড়কটি এখন স্থানীয়দের জন্য একপ্রকার গলার কাঁটায় পরিণত হয়েছে। কারণ, নির্মিত ডিভাইডার ও অন্যান্য বাঁধে বৃষ্টির পানি আটকে যাচ্ছে, ফলে পানি সঠিকভাবে হাওরে নামতে পারছে না।

স্থানীয় উদ্বেগ বাড়ছে বর্ষা মৌসুম ঘনিয়ে আসায়। পাহাড়ি ঢলের পানি আটকে পড়লে সৃষ্টি হতে পারে আকস্মিক বন্যা ও দীর্ঘস্থায়ী জলাবদ্ধতা। এতে ফসলহানির শঙ্কা প্রবল।

দেবপাড়া গ্রামের কৃষক রহিম উল্লাহ বলেন, “মহাসড়ক যেন গলার কাঁটা না হয়। সড়কের নিচ দিয়ে আমাদের পাহাড়ি এলাকার পানি হাওরে যেত, কিন্তু এখন তারা ডিভাইডার দিয়ে আটকে রেখেছে। এগুলো না কাটলে মহাসড়ক ডুবে যাবে, ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হবে।”

ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানরাও জানাচ্ছেন গভীর উদ্বেগ। পানিউমদা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইজাজুর রহমান জানান, “নির্মাণ কাজ থমকে যাওয়ায় এবং ডিভাইডারগুলো না কাটায় পানি আটকে যাচ্ছে। পাহাড়ি এলাকার পানি নামার আর বিকল্প পথ নেই। বিষয়টি জরুরি হস্তক্ষেপ দাবি করে।”

দেবপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহরিয়াজ সুমন বলেন, “যেখানে সেতু ও কালভার্ট নির্মাণের কথা ছিল, সেখানে কিছু কাজ দৃশ্যমান হলেও বিজনা ও করাঙ্গী নদীর সেতু ছাড়া সবকিছু বন্ধ রয়েছে।”

পরিদর্শনে দেখা গেছে, আগে যেসব খাল ও খাড়ি দিয়ে পানি সরাসরি ঘুঙ্গিয়াজুড়ি হাওরে নামতো, সেগুলোর মুখ বন্ধ হয়ে গেছে ডিভাইডার ও নির্মাণ সামগ্রীতে। অনেক স্থানে কালভার্টের মুখেই স্থাপনা তৈরি হয়েছে। আবার কিছু স্থানে পানি প্রবাহ না থাকা সত্ত্বেও বিশাল কালভার্ট নির্মাণ চলছে।

আউশকান্দি সিএনজি ফিলিং স্টেশনের পাশে বিশাল প্রাচীরঘেরা এলাকায় একটি কালভার্ট নির্মিত হচ্ছে—যেখানে কোনো পানির ধারা নেই। স্থানীয়রা বলছেন, এটি সম্পূর্ণভাবে অপচয় এবং অপ্রয়োজনীয়।

উমরপুর গ্রামে আশিকুর রহমান বলেন, “উত্তর দিকের কুশিয়ারা নদী এবং দক্ষিণ দিকের হাওরের পানির স্তরে পার্থক্য থাকার কারণে পানি সহজে নিষ্কাশন হচ্ছে না। এতে জলাবদ্ধতা দীর্ঘস্থায়ী হচ্ছে।”

ঢাকা–সিলেট মহাসড়ক ছয় লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পের সিলেট অংশের প্রকল্প ব্যবস্থাপক দেবাশিস রায় বলেন, “সেতু ও কালভার্টগুলো পরিকল্পনা অনুসারেই নির্মাণ হচ্ছে। ডিভাইডারগুলো এখনই কাটা হচ্ছে না, কারণ কাজ চলমান। বর্ষার আগে সেগুলো কেটে দেওয়া হবে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হয়তো শ্রমিক সংকটে কাজ বন্ধ রেখেছে, খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

তবে স্থানীয়দের প্রশ্ন—বর্ষা মৌসুমের ঠিক আগে কেন এই স্থবিরতা? আর কেনো দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ছাড়াই এমন অবকাঠামো নির্মাণ শুরু হলো?

সালাউদ্দিন/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com