
চট্টগ্রামের রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলের (সিইপিজেড) থিয়ানিস অ্যাপারেলস লিমিটেড নামে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন।
শিল্প পুলিশ ও বেপজা বলছে, পাঁচ দফায় বেতনের তারিখ পিছিয়ে এখন কোনোভাবেই শ্রমিকদের শান্ত করা যাচ্ছে না। অন্যদিকে, আগামী সোমবারের আগে বেতন দিতে অপারগ মালিকপক্ষ।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) সকাল সাড়ে ১০টায় সিইপিজেডের দুই নম্বর সড়কের থিআনিস এ্যাপারেলস লিমিটেড নামে একটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা বিক্ষোভ শুরু করেন। মূল ফটক শ্রমিকরা অবরুদ্ধ করে রাখায় সিইপিজেডে কোনো গাড়ি প্রবেশ করতে পারছে না। ভেতরে থাকা পণ্যবোঝাই ট্রাক, কাভার্ডভ্যানসহ বিভিন্ন যানবাহন আটকা পড়েছে।
অন্যদিকে নগরের ২ নম্বর গেট এলাকায় সড়কে অবস্থান নিয়ে বকেয়া বেতনের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শ্রমিকেরা। বৃহস্পতিবার সকালে তারা জড়ো হয়ে বায়েজিদ বোস্তামি থেকে ফ্লাইওভারে ওঠার মুখে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে পুলিশ এবং কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে আধা ঘণ্টা পর তারা সড়ক ছেড়ে দেন।
জানা গেছে, থিয়ানিস অ্যাপারেলস লিমিটেড নামে কারখানাটি সিইপিজেডের ৩ নম্বর সেক্টরের ২ নম্বর সড়কে। কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে আছেন আনিসুর রহমান খান। এ কারখানায় কর্মরত আছেন প্রায় ৭শ’ শ্রমিক। গত মার্চ মাস থেকেই তাদের বেতন বকেয়া। এরইমধ্যে পাঁচবার বেতন পরিশোধের তারিখ নির্ধারণ করেও পরিশোধ করেনি মালিকপক্ষ।
সিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. আবদুস সোবহান বলেন, ‘কারখানাটির প্রোডাকশন-এক্সপোর্ট নেই। বর্তমানে বন্ধ রয়েছে। গত মার্চ মাসের বেতন দেওয়ার কথা ছিল গতকাল (বুধবার)। কিন্তু পারিবারিক সমস্যার কারণে দিতে পারেনি। আগামী সোমবারে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। শ্রমিকরা চাচ্ছে, মালিকপক্ষ সামনাসামনি এসে বলুক। কারণ এর আগেও একাধিকবার তারিখ ফেল হয়েছে। এখন বেপজার সামনে অল্প কয়েকজন শ্রমিক আছেন।’
শিল্পাঞ্চল পুলিশের চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বলেন, ‘থিয়ানিস অ্যাপারেলস নামে কারখানাটিতে প্রায় সাড়ে ৭শ’ শ্রমিক আছে। সেখানে মার্চ এবং এপ্রিল মাসের বেতন বকেয়া আছে। মালিকপক্ষ এ পর্যন্ত পাঁচবার তারিখ দিয়েও বেতন দেয়নি। সবশেষ গতকাল (বুধবার) বেতন পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু শ্রমিকরা বেতন না পেয়ে আজকে (বৃহস্পতিবার) সকাল থেকে বেপজার সামনে বিক্ষোভ শুরু করে।’
তিনি বলেন, ‘মালিকপক্ষের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করেছি। আগামী সোমবার তারা বেতন পরিশোধের আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু শ্রমিকরা এখন আর বিশ্বাস করতে পারছে না। কীভাবে সমাধান করা যায়, তা নিয়ে বেপজা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমাদের আলোচনা চলছে। এখনো কিছু শ্রমিক রাস্তায় আছেন। তারাও চলে যাবে হয়ত।’
এদিকে, সকাল থেকে ২ নম্বর গেট এলাকার অবস্থান কর্মসূচির কারণে বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজট হয়। বিশেষ করে মোড় থেকে অক্সিজেনগামী সড়কে শত শত গাড়ি আটকা পড়ে এবং ভোগান্তিতে পড়ে বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে বের হওয়া লোকজন।
বিক্ষোভকারীরা জানান, কর্তৃপক্ষ তাদের ৩ মাস ধরে বেতন দিচ্ছে না। বিভিন্ন সময় আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। সবশেষ বাধ্য হয়ে পেটের তাগিদে তারা রাস্তায় নেমেছেন।
খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফতাব হোসেন বলেন, সকালে জড়ো হয়ে শ্রমিকেরা কর্মসূচি পালন করে। পরে বুঝিয়ে তাদের সড়ক থেকে সরানো হয়েছে।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর