
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে এবং বিগত আওয়ামী শাসনামলে দমন-পীড়নের অভিযোগ তুলে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি তুলে প্রায় ১২ঘন্টা বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রেখেছেন ছাত্র-জনতা।
সেই অবরোধ সাড়ে তিন ঘণ্টা পার হতে চললেও নিষিদ্ধের ব্যাপারে চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত না পাওয়াতে শাহবাগ ছাড়েননি আন্দোলনকারীরা। যার ফলে স্তিমিত হয়ে আছে শাহবাগের যানচলাচল। এদিকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে থেমে নেই আন্দোলনকারীদের স্লোগান।
শুক্রবার (৯ মে) রাত পৌনে ১০টার সরেজমিনে গিয়ে এমন চিত্র চোখে পড়ে। এছাড়া একটি মুহুর্তের জন্য থেমে নেই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে স্লোগান। আন্দোলনকারীদের দাবি, যতক্ষণ না পর্যন্ত আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের ব্যাপারে চূড়ান্ত কোন সিদ্ধান্ত না আসছে, তারা শাহবাগ সরছেন না।
এসময় অবরোধ কর্মসূচিতে অংশ নেয়ারা আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ‘ওয়ান টু থ্রি ফোর, আওয়ামী লীগ নো মোর’, ‘খুনি লীগের ঠিকানা, এই বাংলায় হবে না’, ‘ব্যান-ব্যান, আওয়ামী লীগ’, ‘আপোষ না সংগ্রাম, ক্ষমতা না জনতা’সহ নানা স্লোগান দিতে থাকেন। এ রিপোর্ট লিখা পর্যন্ত এমন অসংখ্য স্লোগানে উত্তাল ছিল শাহবাগ, সঙ্গে বন্ধ ছিল চারদিকের যানচলাচল।
এর আগে বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে বিক্ষুব্ধ জনতা শাহবাগ অবরোধ করেন। যদিও এর আগে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ শাহবাগ ব্লকেড কর্মসূচি পালনের ঘোষণা করেন।
বেলা ৪টা ৩৫ মিনিটে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার পূর্ব পাশে ফোয়ারার সামনের সমাবেশ জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ বক্তব্য চলাকালীন ব্লকেড কর্মসূচি ঘোষণা করে বলেন, ‘আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলতে চাই, আওয়ামী লীগ নামক ভাইরাসটি যেন আজই শেষ হয়। এখানে যদি একজন মাত্র লোক থাকে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না করা পর্যন্ত আমরা এই ময়দান ছাড়ব না। আমরা মানুষের সমাগম করার জন্য এই জায়গাটি বেছে নিয়েছিলোম, কিছুক্ষণ পর আমরা রাস্তা ব্লকেড করব। আমরা এখান থেকে শাহবাগ অবরোধ করব, যতক্ষণ পর্যন্ত আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের কোন ঘোষণা না আসছে আমরা শাহবাগ ব্লকেড থেকে সরছি না।’
বক্তব্যে শেষ হলে হাসনাত আব্দুল্লাহর নেতৃত্বে একটি মিছিল যায় শাহবাগের দিকে অগ্রসর হয়। তার এমন ঘোষণা পরপরই বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা শাহবাগে মোড়ে গিয়ে সেখানে আওয়ামী লীগের নিষিদ্ধের দাবিতে সড়ক ব্লক করে। এর পরপরই শাহবাগ মোড়ের চারপাশের যানচলাচল পুরোপুরিভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
এইদিন বেলা ১২টার পর আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে যমুনার সামনে থেকে সরে এসে মঞ্চের সামনে অবস্থান নেয় আন্দোলনকারীরা। পরে সেখানে নিষিদ্ধের দাবিতে সমাবেশ করেন। সকাল ৮টায় আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বড় জমায়েতের ডাক দেয় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাতে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে যমুনার সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচিতে অংশ নেয় জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), ছাত্রশিবির, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, জুলাই ঐক্য, ইনকিলাব মঞ্চ, হেফাজতে ইসলামসহ কয়েকটি সংগঠনের নেতা-কর্মী এবং সাধারণ ছাত্র-জনতা। সেখানে আওয়ামী লীগের বিচার ও দলটির রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের বিষয়ে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ (পথনকশা) ঘোষণার দাবিতে রাতভর যমুনার সামনে অবস্থান নেন।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের ব্যাপারে অন্তর্বর্তী সরকার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করছে জানিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে সবাইকে ধৈর্য ধরতে বলা হয়েছে। শুক্রবার দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়।
মুনতাসির/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর