
কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার পর থেকেই পাকিস্তানকে দায়ী করে আসছে ভারত। যদিও ইসলামাবাদ শুরু থেকেই হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। এমনকি প্রমাণ ছাড়াই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক পদক্ষেপ নেয় ভারত। পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানায় পাকিস্তানও। টানা দুই সপ্তাহ উত্তেজনার পর পরিস্থিতি সংঘাতে রূপ নেয়। দুই দেশের পাল্টাপাল্টি হামলায় প্রায় যুদ্ধ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
এই অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় টানা ৪৮ ঘণ্টার আলোচনার পর শনিবার (১০ মে) দুই দেশ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়।
সোমবার (১২ মে) পাকিস্তানের শীর্ষ গণমাধ্যম ‘দ্য ডন’-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানানো হয়, যুদ্ধবিরতির আগে চারদিন ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে চরম উত্তেজনা ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এই পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে মুখ খোলে পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনী।
সেখানে দেশটির আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর)–এর মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী বলেন, “দেশের জনগণকে যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, তা পূরণ করেছে পাকিস্তান সশস্ত্র বাহিনী।”
তিনি জানান, ৬ ও ৭ মে রাতের ভারতীয় হামলায় নারী, শিশু ও বৃদ্ধসহ নিরীহ নাগরিক নিহত হন। ভারতের সেই হামলার জবাব দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন বুনইয়ানুম মারসুস’-এর মাধ্যমে, যার আওতায় ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীর ও মূল ভূখণ্ডের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে হামলা চালানো হয়।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ও তার মন্ত্রিসভাকে ধন্যবাদ জানিয়ে আইএসপিআরের মহাপরিচালক বলেন, “প্রধানমন্ত্রী যেভাবে জাতিকে প্রতিশোধের সুযোগ করে দিয়েছেন, তা ছিল এক যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। জনগণের মনোবল, দোয়া এবং সংহতি আমাদের সামরিক শক্তিকে আরও বলীয়ান করেছে।”
জেনারেল শরিফ আরও দাবি করেন, পাকিস্তান ২৬টি ভারতীয় সামরিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছে, ধ্বংস করেছে দুটি এস-৪০০ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, এবং ভূপাতিত করেছে ৮৪টি ভারতীয় ড্রোন।
তিনি হুঁশিয়ার করে বলেন, “পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বে আঘাত এলে জবাব হবে চূড়ান্ত ও প্রতিশোধমূলক। আমাদের বাহিনী সর্বদা প্রস্তুত, এবং ভবিষ্যতে আরও কঠোর জবাব দেওয়া হবে।”
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “ভারতের কোনো পাইলট পাকিস্তানের হেফাজতে নেই—এটি একটি ভিত্তিহীন গুজব। যুদ্ধবিরতির বিষয়ে পাকিস্তান কখনো যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ করেনি; বরং ভারতের পক্ষ থেকেই আমেরিকার সহায়তা চাওয়া হয়েছিল।”
সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তান নৌবাহিনীর ভাইস অ্যাডমিরাল রব নওয়াজ বলেন, “সংখ্যায় শক্তিশালী শত্রুর মুখোমুখি হয়েও আমাদের বাহিনী সাহসিকতার সঙ্গে সমুদ্র সীমান্ত রক্ষা করেছে।” তিনি আরও জানান, নৌবাহিনী যে কোনো সময় যুদ্ধ পরিস্থিতিতে অভিযোজন করতে প্রস্তুত।
এয়ার ভাইস মার্শাল আওরঙ্গজেব বলেন, “আমরা আমাদের সময়, স্থান ও কৌশল অনুসারে ভারতীয় বিমানবাহিনীর বিরুদ্ধে পাল্টা জবাব দিয়েছি। সামরিক নেতৃত্বের নির্দেশনা অনুযায়ী আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে অপারেশন সম্পন্ন হয়েছে।”
সর্বশেষ খবর
সারাবিশ্ব এর সর্বশেষ খবর