• ঢাকা
  • ঢাকা, সোমবার, ১২ মে, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ১৫ মিনিট পূর্বে
আরমান হোসেন
সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশিত : ১২ মে, ২০২৫, ১২:৫২ দুপুর

শেখ হাসিনার রাজনৈতিক ভুলে সব শেষ, খেসারত দিচ্ছেন সাধারণ কর্মীরা

ফাইল ফটো

চব্বিশের গণ-আন্দোলন যখন তুঙ্গে, তখন শেখ হাসিনা যদি ছাত্রদের দাবিগুলো আমলে নিতেন কিংবা সংলাপে বসে সমাধানের পথ খুঁজতেন—তাহলে আজকের এই রাজনৈতিক পরিস্থিতি হয়তো এড়ানো যেত। কিন্তু তিনি গো ধরে বসে থাকেন এবং দলের সিনিয়র নেতাদের পরামর্শে চলেন, এমন অভিযোগ সাধারণ কর্মীদের। তারা মনে করেন, দলের এই পরিণতির জন্য প্রধানত শেখ হাসিনাই দায়ী। এখন দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ায় কর্মীদের প্রশ্ন—তারা কোথায় যাবেন?

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে ফেরার সম্ভাবনা নিজেই নষ্ট করে দিয়েছেন শেখ হাসিনা। তার চরম দাম্ভিকতা এবং প্রতিপক্ষকে দমন করার দুরভিসন্ধিই দলকে আজকের এই পরিস্থিতিতে ঠেলে দিয়েছে।

ছাত্র-জনতার প্রবল আন্দোলনের মুখে উপদেষ্টা পরিষদের এক জরুরি বৈঠকে শনিবার আওয়ামী লীগের সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। একইসঙ্গে শুরু হয়েছে দলটির নিবন্ধন বাতিলের প্রক্রিয়া। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন একাধিক জ্যেষ্ঠ রাজনীতিক ও বিশ্লেষক।

একজন রাজনৈতিক বিশ্লেষক গণমাধ্যমকে বলেন, ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ পেলেও শেখ হাসিনা দেশে রেখে যাওয়া দল ও কর্মীদের রক্ষায় কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেননি।

তার দীর্ঘ শাসনামলের মানবাধিকার লঙ্ঘন, দুর্নীতি ও দুঃশাসনের দায় স্বীকার করে জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়ার পরিবর্তে তিনি ভারতে বসেই অন্তর্বর্তী সরকারকে উৎখাতের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় অন্তর্বর্তী সরকার আওয়ামী লীগের সব রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করে। এর ফলে ‘আওয়ামী লীগ’ নামে দলটির নেতাকর্মীরা আর বাংলাদেশে রাজনীতি করতে পারবেন না। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইনে দলের বিচার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। দল নিষিদ্ধ থাকাকালে দলের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের কার্যক্রমও বন্ধ থাকবে। একইদিন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করে একটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়, যাতে রাজনৈতিক দল ও সমর্থকদের বিরুদ্ধে বিচার প্রক্রিয়া চালানোর ক্ষমতা দেওয়া হয় ট্রাইব্যুনালকে।

গণফোরামের প্রতিষ্ঠাতা ও সংবিধান প্রণেতা ড. কামাল হোসেন বলেন, শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগে পরিবারতন্ত্র কায়েম করেছিলেন এবং ধীরে ধীরে একনায়কতন্ত্রে রূপ নেন। যার পরিণতিতে আজ দলটি এই বিপর্যয়ের মুখে।

জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, গণহত্যার বিচারই নির্ধারণ করবে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেন, শেখ হাসিনার অপকর্মের দায় আজ আওয়ামী লীগকে বহন করতে হচ্ছে। ভারতে বসেই তিনি দলের নেতাকর্মীদের উসকানি দিয়ে পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলেছেন। তার উচিত ছিল দুঃশাসনের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাওয়া, কিন্তু তিনি উল্টো প্রতিবিপ্লবের স্বপ্ন দেখেছেন।

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, শেখ হাসিনা অন্যায় করেছেন এবং অনুশোচনা না করে আজও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন। তাই দেশের মানুষ এবং রাজনৈতিক শক্তিগুলো চরমভাবে ক্ষুব্ধ। এরই ফল আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়া।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য ডা. জাহেদ-উর রহমান বলেন, শেখ হাসিনার ভুল সিদ্ধান্তের জন্যই দল হিসেবে আওয়ামী লীগ আজ দায়ের মুখে।

তবে সিনিয়র সাংবাদিক মাসুদ কামাল বলেন, "গত নয় মাসে আওয়ামী লীগ কতটুকু রাজনৈতিক তৎপরতা দেখিয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়। তারপরও বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত দলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।"

প্রসঙ্গত, ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ হিসেবে দলটির যাত্রা শুরু হয়। মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং শামসুল হক ছিলেন সাধারণ সম্পাদক। শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। ১৯৫৫ সালে ‘মুসলিম’ শব্দটি বাদ দিয়ে দলটির নাম হয় ‘আওয়ামী লীগ’।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে দলটির ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। তবে স্বাধীনতার পর বাকশাল গঠনের মাধ্যমে সব রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ ঘটায় দলটি। এরপর বিভিন্ন সময় বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের জন্য সমালোচিত হয় আওয়ামী লীগ।

আজ আবার সেই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি—তবে এবার অন্য প্রেক্ষাপটে এবং অন্য বাস্তবতায়।

তথ্য সুত্র: দৈনিক যু গান্তর 

মুনতাসির/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ info@bd24live.com
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯১
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬৭৮৬৭৭১৯০
ইমেইলঃ office.bd24live@gmail.com