
নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) বিগত সাড়ে পনেরো বছরে সংঘটিত দুর্নীতি, নিপীড়ন এবং প্রশাসনিক-আর্থিক অনিয়মের তদন্তে গঠিত ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি তাদের আংশিক প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। তবে কমিটির কার্যকর অগ্রগতি না থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত এক মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের সহযোগী হিসেবে চিহ্নিত কিছু শিক্ষক, কর্মকর্তা ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বরং তদন্তের আশ্বাস দিয়ে বারবার বিষয়গুলো ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, “ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি কার্যত নিষ্ক্রিয়। প্রতিবেদন দিতেও তারা টালবাহানা করছে। যারা অপরাধ করেছে, তাদের রক্ষার উদ্দেশ্যে পুরো প্রক্রিয়া বিলম্বিত করা হচ্ছে।”
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন নোয়াখালী’ সদস্য সচিব বনী ইয়ামিন বলেন, “বিপ্লবের নয় মাস পেরিয়ে গেলেও কোনো দৃশ্যমান বিচার দেখতে পাইনি। আহতরা কষ্টে দিন কাটাচ্ছে, অথচ অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা প্রশাসনের অনুমতিতে পরীক্ষা দিচ্ছে। বিচার চাইলে আমাদের মবোক্রেসি বলা হয়, অথচ অন্যায়ের বিরুদ্ধে সুশীল সমাজ নীরব।”
বক্তারা আরও বলেন, যতদিন না নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের বিচার নিশ্চিত হবে, ততদিন তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।শিক্ষার্থীদের কণ্ঠ রোধ করা যাবে না। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আমাদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে আন্দোলন চালিয়ে যাব।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ে গত সাড়ে পনেরো বছরে সংঘটিত অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্তে ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি পুনর্গঠন করা হয়।
কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল কাইয়ুম মাসুদ বলেন, “আমাদের কাছে শিক্ষকদের বিরুদ্ধে প্রায় ৫০টির অধিক অভিযোগ জমা পড়ে। এই অভিযোগগুলোর মধ্যে কিছু ছিল বিগত ১৫ বছরে প্রমোশন না পাওয়া, কিছু শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগসহ নানা ধরনের অভিযোগ। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা এই অভিযোগগুলো দায়ের করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরাও ৬ থেকে ৮ জন শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে। আজকে আমরা যে প্রতিবেদন জমা দিয়েছি, তাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনজন শিক্ষক বিগত সরকারের আমলে প্রমোশন না পাওয়ায় অভিযোগ করেছিলেন। বাকি অভিযোগগুলোর ঘটনা তদন্ত করে আমরা খুব শিগগিরই পরবর্তী প্রতিবেদন জমা দেব। কিছু সংখ্যক অভিযোগে পর্যাপ্ত তথ্য না থাকায় আমরা সেসব অভিযোগ আমলে নিচ্ছি না।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইসমাইল বলেন, “ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি আমাদের কাছে শিক্ষকদের অভিযোগের বিষয়ে তদন্তসাপেক্ষে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রিজেন্ট বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নেব।”
আরমান/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর