
বান্দরবানের লামা উপজেলায় আলোচিত আবুল খায়ের টোব্যাকো কোম্পানির অফিসের লুট হওয়া ১ কোটি ৭২ লাখ ৭৫ হাজার ৬৩৮ টাকা এবং সংঘটিত ডাকাতির ঘটনায় এই পর্যন্ত ৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ। অভিযানে লামা ও পার্শ্ববর্তী কক্সবাজারের চকরিয়ার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। আটককৃতদের দেয়া তথ্য মতে এই পর্যন্ত পৃথক দুইটি অভিযানে ৩ লাখ ১৭ হাজার ২০০ টাকা উদ্ধার করেছে পুলিশ।
লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তোফাজ্জল হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার বান্দরবান পুলিশ সুপার মোঃ শহিদুল্লাহ কাওছার লামা থানায় আসেন এবং এই ডাকাতির ঘটনায় বিশেষ নির্দেশনা প্রদান করেন। বৃহস্পতিবার এক অভিযানে লামা পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের আব্দুর রহিম (৩৬) এর কাছ থেকে ৫০ হাজার ২০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। তার দেয়া তথ্য মতে শুক্রবার (১৬ মে) রাত ৭টায় লামা পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ড সাবেক বিলছড়ি সিলেটি পাড়ার ওয়াসির আলীর পাহাড় হতে মাটি খুঁড়ে ২ লাখ ৬৭ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। ওয়াসের আলীর ছেলে মোঃ করিম দক্ষিণ চট্টগ্রামের আন্তঃজেলা ডাকার দলের অন্যতম সদস্য। সে এই ডাকাতির ঘটনা ও টাকার লুটের প্রধান মাস্টারমাইন্ড বলে ধারণা করা হচ্ছে।
আটককৃতরা হলেন, চকরিয়া উপজেলার পূর্ব ভেউলা ইউনিয়নের পদ্মাছড়া এলাকার মারুফুল ওরফে আরিফ (৩৩), একই উপজেলার লক্ষ্যাচর ইউনিয়নের নাঈমুল ইসলাম ওরফে সাগর (৩১), লামা পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের আব্দুর রহিম (৩৬), একই এলাকার আব্দুল ওহাব এর ছেলে মোঃ সুজন (২৫) এবং সাবেক বিলছড়ি সিলেটি পাড়ার ওয়াসের আলীর স্ত্রী আনোয়ারা বেগম (৪৫)।
ডাকাতির মামলার তদন্তকারী অফিসার ও পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) এনামুল হক জানায়, ৯ মে ভোরে দেশীয় অস্ত্রধারী একদল ডাকাত লামার লাইনঝিরি এলাকায় অবস্থিত আবুল খায়ের টোব্যাকো কোম্পানির অফিসে হামলা চালায়। তারা অফিসের এক কর্মচারীকে মারধর করে বেঁধে রেখে আলমারিতে থাকা ১ কোটি ৭২ লাখ ৭৫ হাজার ৬৩৮ টাকা লুট করে নেয়।
ডাকাতরা চেষ্টা করেছিল আরও সাড়ে ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা থাকা লোহার সিন্ধুক ভাঙার, তবে ব্যর্থ হয়। ঘটনার পরদিন (১০ মে) লামা থানায় অজ্ঞাতনামা ১৫-২০ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়।
তিনি আরো বলেন, তদন্তে নেমে ১২ মে পুলিশ অভিযান চালিয়ে তিনজন এবং ১৬ মে দুইজনকে গ্রেফতার করে। পরে আদালতে হাজির করা হলে তাদের মধ্যে ১ জনকে বান্দরবান জেল হাজতে পাঠানো হয় এবং দুইজনকে রিমান্ডে নেওয়ার আদেশ দেন আদালত।
মামলার বাদী আবুল খায়ের টোব্যাকো কোম্পানি লিমিটেড লামা জোন ইনচার্জ মোঃ আব্দুর রব আরো জানান, পুলিশ অনেক আন্তরিকতার সাথে কাজ করছে। বাংলাদেশ পুলিশকে ধন্যবাদ। আশা করি জড়িত সবাই গ্রেফতার হবে এবং সম্পূর্ণ টাকা উদ্ধার হবে।
লামা থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘মামলার পর থেকেই পুলিশ সুপার মহোদয়ের নিবিড় তত্ত্বাবধানে তদন্ত চলছে। ইতোমধ্যে পাঁচ জনকে আটক করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
প্রসঙ্গত, বান্দরবানের লামা উপজেলার লাইনঝিরি এলাকায় অবস্থিত আবুল খায়ের টোব্যাকো কোম্পানি লিমিটেডের তামাক ক্রয় কেন্দ্রের অফিসে দূর্র্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (০৯ মে ২০২৫ইং) ভোর রাতে ১৫/২০ জনের সশস্ত্র ডাকাত দল অস্ত্রের মুখে হিসাবরক্ষক সহ অন্যদের জিম্মি করে ১ কোটি ৭২ লাখ ৭৫ হাজার ৬৩৮ টাকা লুট করে নিয়ে যায়। লকারে (বোল্ট) থাকার কারণে ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা ডাকাতের হাত রক্ষা পায়। ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর