
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহের অনুমতি ছাড়াই তার কার্যালয়ের সামনে একটি সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। উপ-উপাচার্য কার্যালয়ের নির্দেশে ক্যামেরাটি লাগানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী বিষয়টি অস্বীকার করে বলেছেন, সম্প্রতি সিসি ক্যামেরা নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। আসলে বিষয়টি ক্যামেরা মিস্ত্রিরা ভুল করেছে। তারা মূলত আমার নির্দেশনার বাহিরে গিয়ে ক্যামরাটি সেখানে লাগিয়েছেন এবং তারা সেটি খুলেও ফেলেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি যদি মনে করেন ভুলটি আমার হয়েছে। তাহলে আমি তার কাছে ক্ষমা প্রার্থী। শনিবার (১৭ মে) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মরত সাংবাদিকদের সাথে এই কথা বলেন তিনি। পরে তিনি সাংবাদিকদের সিসি ক্যামেরা লাগানোর জায়গাগুলো ঘুরে ঘুরে দেখান।
এসময় ইবি প্রো-ভিসি বলেন, সাবেক প্রো-ভিসির সময় প্রো-ভিসি অফিসে সাতটা ক্যামেরা ছিল, যা জুলাই আন্দোলনসহ বিভিন্ন আন্দোলনের সময় নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। শুধু অফিসের ভিতরের দুইটা সচল ছিল তাই আমি আমার পিএসকে বলি ক্যামেরাগুলো নতুন করে লাগাতে। পুরাতন ক্যামেরাগুলো সংস্কার এবং নতুন করে লাগানোর জন্য নোট জমা দেই। যা গত দেড় মাসেও শেষ হয়নি। একজন উপ-উপাচার্যের কাজের নোটের রেজাল্ট আসতে যদি দেড় মাসের বেশি সময় লাগে তা হলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাজের ক্ষেত্রে তা কি হতে পারে? শেষ পর্যন্ত শুনেছি যে জমা দেওয়া নোট এসেছে। তখন আমি ঢাকায় চিকিৎসার জন্য যাচ্ছিলাম তখন দেখি ক্যামেরা লাগাচ্ছে, আমি পুরাতনগুলো সংস্কার করতে পারলে তা করতে বলি আর টাকার মধ্যে হলে নতুন কিনে লাগাতে বলি। মিস্ত্রিকে বলেছি, তিন তালার সিঁড়ির মাঝখানে একটি ক্যামেরা লাগাতে। কিন্তু তারা তা ভিসির কার্যালয়ের সিঁড়ির শেষ দিকে গিয়ে লাগায়। তা লাগানো উচিত হয়নি। তারা যখন ভুল বুঝতে পারে তখন তা সরিয়ে নেয়।
তিনি আরো বলেন, আমার তো ভিসির কার্যালয়ে ক্যামেরা লাগানোর দরকার নেই। এছাড়াও তিনি বলেন, প্রো-ভিসির জন্য ৭টি সিসি ক্যামেরা থাকে, তার ভিতরে থেকে ৪টি সিসি ক্যামেরা খুলে নেওয়া হয়। আমি এর বিচার চাই।
প্রসঙ্গত, কিছুদিন আগে উপ-উপাচার্যের কার্যালয়ে সিসি ক্যামেরা মেরামতের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি সেলে নোট পাঠানো হয়। পরে কাজ শুরু করতে দেরি করায় আইসিটি সেলের ইলিয়াস জোয়ার্দারের মাধ্যমে কুষ্টিয়ার ‘ইউনিক কম্পিউটার’ নামক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এই কাজ করার নির্দেশ দেন উপ-উপাচার্য। ওই দিন প্রশাসন ভবনের বিভিন্ন জায়গায় মোট আটটি ক্যামেরা লাগানো হয়। এর মধ্যে উপাচার্যের কক্ষে দুইটি, তার পিএসের কক্ষে একটি ও তৃতীয় তলার করিডোরে একটি, সিঁড়িতে একটি লাগানো হয়। এছাড়া উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে একটি ও প্রশাসন ভবনের সামনে ও পিছনের গেটে দুইটি লাগানো হয়।
এসব ক্যামেরার সবগুলো নিয়ন্ত্রণের সিস্টেম রাখা হয়েছে প্রো-ভিসি কার্যালয়ে। এর মধ্যে উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে লাগানো ক্যামেরাটির নিয়ন্ত্রণ উপ-উপাচার্যের কার্যালয়ে থাকার ইখতিয়ার নেই বলে জানা গেছে। একদিকে উপ-উপাচার্যের নির্দেশনার বাহিরে গিয়ে ক্যামেরাটি মিস্ত্রিরা লাগিয়েছেন বলে দাবি করছেন তিনি। অপরদিকে ক্যামেরা মিস্ত্রিরা দাবি করছেন, উপ-উপাচার্যের কার্যালয়ের নির্দেশেই ক্যামরাটি লাগানো হয়েছে।
এ বিষয়ে 'ইউনিক কম্পিউটার' কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রো-ভিসি কার্যালয়ের নির্দেশে আমরা দুই থেকে তিন দিন আগে ক্যামেরাগুলো লাগিয়েছিলাম। এরমধ্যে একটি ক্যামেরা ভিসি স্যারের ভিসি অফিসের সামনে লাগানো হয়েছিল। অন্যগুলো প্রো-ভিসি কার্যালয়সহ বিভিন্ন জায়গায় লাগানো হয়। পরবর্তীতে ভিসি স্যার অভিযোগ করলে খুলে নেওয়া হয়।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর