
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, "যে তরুণ প্রজন্ম আপোষহীনভাবে জীবন বাজি রেখে শেখ হাসিনার মত স্বৈরাচারকে পতন ঘটিয়েছে, তাদের ওপর আস্থা রাখার আহ্বান জানাচ্ছি। এই তরুণদের কেউ লোভ বা স্বার্থ দিয়ে টলাতে পারেনি। তারা দলমত নির্বিশেষে জনগণকে নিয়ে জুলাইয়ের অভ্যুত্থান ঘটিয়েছে।"
তিনি আরও বলেন, "আগামীর বাংলাদেশে প্রতিটি নির্বাচনে নিজের বিবেককে কাজে লাগিয়ে, সেটি বিক্রি না করে সবচেয়ে ভাল মানুষটিকে জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত করবেন। তাহলে যে আকাঙ্ক্ষা নিয়ে হাজারের অধিক সন্তান প্রাণ দিয়েছে, তাদের আত্মত্যাগ সার্থক হবে।"
সোমবার রাতে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে এক পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সারজিস আলম বলেন, "অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে যেসব বাবা-মা সন্তান হারিয়েছেন, তারাই জানেন সেই ব্যথা। যে খুনির নির্দেশে হাজারের অধিক মানুষ নিহত হয়েছে, তার বিচারের দাবিতে আপনাদের আপোষহীন থাকতে হবে। সেই খুনি হাসিনার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আপনারা যেন মুখে অন্য কিছু না বলেন। ৫ আগস্ট যে শর্তে মানুষ গুলির সামনে বুক পেতে দিয়েছিল, সেই সংস্কারের আকাঙ্ক্ষাগুলো বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আপনারা যেন অন্য কিছু ভাবেন না।"
তিনি আরও বলেন, "আপনাদের সন্তানরা, ভাইয়েরা আগামীর বাংলাদেশকে নতুন করে গড়তে চায়। যদি মনে করেন তাদের দ্বারা তা সম্ভব, তাহলে একবার আস্থা রেখে দেখুন। অনেক কিছু তো দেখেছেন, এবার একবারের জন্য তাদের ওপর ভরসা রাখুন। যদি তারা কাজ না করতে পারে, তখন ছুঁড়ে ফেলে দেবেন। তবে দয়া করে লোভ বা টাকার কাছে নিজের বিবেক বিক্রি করবেন না।"
তিনি বলেন, "এলাকার মানুষ এতদিন শুধু প্রতিশ্রুতি শুনেছে, কিন্তু উন্নয়ন হয়নি। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সাধারণ মানুষকে দাস মনে করে। যারা জনগণকে জিম্মি করে টাকা খায়, দুর্নীতি করে—তাদের মুখোশ উন্মোচন করতে হবে। যারা জনপ্রতিনিধি হতে চান, তারা যেন এসব কালোচরিত্রদের অপকর্ম লিখে রাখেন, যাতে তারা ভবিষ্যতে জনপ্রতিনিধি হতে না পারে।"
তিনি আরও বলেন, "যে নেতা চাঁদাবাজি করে, জমি দখল করে, মানুষের টাকা মেরে খায়, মামলা করে মানুষকে হয়রানি করে—সে কখনোই আমার বা আপনার নেতা হতে পারে না। বাংলাদেশের এই অভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে আপনি সেই নেতাকে আর মানতে পারেন না। সে যেই হোক, মার্কা যেটাই হোক, তাকে ভোট দেবেন না। যিনি ভাল মানুষ, কাজ করতে চান, আগে চুরি বা প্রতারণা করেননি—তাঁর ওপরই আস্থা রাখতে হবে।"
পথসভায় আরও বক্তব্য রাখেন মুখ্য সংগঠক আলী নাসের খান, দিনাজপুর অঞ্চলের নীলফামারী জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত আবু সায়েদ লিয়ন, এবং কিশোরগঞ্জ উপজেলা এনসিপির আব্দুল কাইয়ুম।
পরে সারজিস আলমের নেতৃত্বে একটি মিছিল উপজেলা উপশহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর