প্রখ্যাত সাংবাদিক, কবি ও সাহিত্য সংগঠক মুহম্মদ রেজাউর রহমান (বাবুল) মঙ্গলবার ভোর সাড়ে পাঁচটায় কিশোরগঞ্জ শহরের নগুয়া এতিমখানা রোডের নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, তিনি বেশ কিছুদিন ধরে বিভিন্ন রোগে ভুগছিলেন। সম্প্রতি তিনি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হন। ঈদের ছুটিতে হাসপাতালে পর্যাপ্ত ডাক্তার না থাকায় বাসায় তাঁর চিকিৎসা চলছিল। শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার প্রস্তুতি চলকালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

আজ বুধবার বাদ জোহর কিশোরগঞ্জ শহরের শহীদী মসজিদ প্রাঙ্গণে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে তাঁকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

মুহম্মদ রেজাউর রহমানের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন জেলা বিএনপি'র সভাপতি মো: শরিফুল আলম, সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক মো: রমজান আলী, কিশোরগঞ্জ সেন্ট্রাল প্রেস ক্লাবের সভাপতি আশরাফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো: আল আমিন, কিশোরগঞ্জ সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদের সভাপতি মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নুরুল আউয়াল তারামিঞা সহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।

সত্তরের দশক থেকে মুহম্মদ রেজাউর রহমান গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ, রম্যরচনা ও শিশুসাহিত্যে অবদান রেখেছেন। সাংবাদিক হিসেবে তিনি দীর্ঘদিন দৈনিক সংগ্রামে স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রকাশিত শিশুতোষ পত্রিকা সবুজ পাতায় তিনি কুরআন ও হাদিসের সহজ অনুবাদ লিখতেন।

মুহম্মদ রেজাউর রহমান ১৯৫৫ সালের ১১ জানুয়ারি করিমগঞ্জে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি 'সুধাকর' নামে একটি সাহিত্য সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেন এবং 'রক্তের স্বরলিপি' নামে একটি সংকলন সম্পাদনা করেন। এছাড়াও তিনি সাপ্তাহিক বাংলার দর্পন, দৈনিক জাহান, সাহিত্য মাসিক চন্দ্রাকাশ, অঙ্গীকার ডাইজেস্ট, সাপ্তাহিক মাটির বাংলা ও ইসতিকলাল, সাহিত্য পত্রিকা উত্তরকাল সম্পাদনা করেছেন। কিশোরগঞ্জ সাহিত্য সংস্কৃতি পরিষদ গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল।

মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে (নরওয়ে প্রবাসী), এক মেয়ে, চার ভাই ও তিন বোন রেখে গেছেন।

সালাউদ্দিন/সাএ