
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও নাশকতার অভিযোগে জেল খেটে আসার পরও তিনি স্বপদে বহাল রয়েছেন। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে রেজুলেশন জালিয়াতি, স্বজনপ্রীতি, সরকারী আদেশ অমান্য এবং ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের নাম সদরুল আলম বাবু। তিনি চর-ভূরুঙ্গামারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এবং স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও বর্তমান সহ-সভাপতি।
জানা যায়, গত ১৮ মে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও নাশকতার অভিযোগে ভূরুঙ্গামারী থানা পুলিশ তাকে আটক করে জেল হাজতে প্রেরণ করে। তবে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি বিধি মোতাবেক তাকে সাময়িক বরখাস্ত না করায় ২৮ মে জামিনে মুক্তি পেয়ে তিনি পুনরায় স্ব-পদে যোগদান করেন এবং দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।
প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে পূর্বেও বিদ্যালয়ের ল্যাব থেকে দুটি ল্যাপটপ ও একটি মনিটর চুরির ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এ বিষয়ে কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, বিদ্যালয়ের নৈশ প্রহরী রাজু মিয়া প্রধান শিক্ষকের শ্যালক হওয়ায় তাকে বাঁচাতে চুরির মামলা করা হয়নি।
এছাড়াও, এনটিআরসিএ কর্তৃক সুপারিশকৃত সহকারী শিক্ষক নিয়োগে জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ অনুযায়ী, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি রেজুলেশনের মাধ্যমে কুলসুম খাতুনকে সহকারী শিক্ষক (বাংলা) শূন্যপদে এবং জাহিদুল ইসলামকে সহকারী শিক্ষক (বাংলা শাখা) পদে নিয়োগের সুপারিশ করলেও প্রধান শিক্ষক রেজুলেশন ঘষামাজা করে কুলসুমকে শাখা পদে এবং জাহিদুলকে শূন্যপদে নিয়োগ দেখিয়ে এমপিওভুক্তির আবেদন করেছেন।
সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করে গত ১৭ ও ২৪ মে বিদ্যালয় বন্ধ রাখার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
অন্যদিকে, বিদ্যালয়ের একজন সহকারী শিক্ষক মজনুর রহমানের বিরুদ্ধে অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীর সাথে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে বিয়ে করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষক অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার সাইফুর রহমান জানান, প্রধান শিক্ষক জামিনে থাকায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা সম্ভব নয়। তবে ম্যানেজিং কমিটিকে সাময়িক বরখাস্ত করার জন্য বলা হলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
চর-ভূরুঙ্গামারী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সদরুল আলম বাবু নৈশ প্রহরী রাজু তার শ্যালক হওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, "সে হারানো জিনিস কিনে দিতে চাওয়ায় মামলা করা হয়নি। মানবিক কারণে রেজুলেশন ঘষামাজা করা হয়েছে। শিক্ষকের সাথে ছাত্রীর প্রেম ঘটিত বিষয়টি মীমাংসা হওয়ায় কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি।"
উপজেলা নির্বাহী অফিসার গোলাম ফেরদৌস জানান, মাধ্যমিক শিক্ষা বিভাগে অফিসার না থাকায় কার্যক্রম সময় মতো করা যাচ্ছে না। তিনি জানান, কমিটিকে দু'দফা ডেকে মিটিং করার কথা বলা হলেও তারা আসেননি। তবে এ ব্যাপারে আজ ১৯ জুন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির মিটিং আহ্বান করা হয়েছে এবং সেখানে সকল বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর