
দেশ গঠনে রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, রাজনৈতিক নেতা, সুশীল সমাজ এবং গণমাধ্যম সংশ্লিষ্টদের সমন্বিতভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক সম্মেলনে বক্তারা এই তাগিদ দেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনে দুই দিনব্যাপী ‘দ্য স্টেট রিফর্মস অ্যান্ড ইলেকশন ডিসকোর্স ইন ট্রানজিশনাল ডেমোক্রেসিজ: ফ্রম মাস আপরাইজিং টু ইলেকশন অ্যান্ড স্টেট বিল্ডিং’ শীর্ষক প্রথম পলিটিক্যাল কনফারেন্সের দ্বিতীয় দিনে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। শ্যাডো রিফর্ম কমিশন, শ্যাডো ন্যাশনাল কনসেনসাস কমিশন এবং পলিটিক্যাল অ্যান্ড পলিসি সায়েন্স রিসার্চ ফাউন্ডেশন যৌথভাবে এই কনফারেন্সের আয়োজন করে।
সমাপনী দিনে ‘গণতান্ত্রিক উত্তরণে গণমাধ্যম, রাজনৈতিক এবং সিভিল সোসাইটির ভূমিকা’ শীর্ষক একটি বিশেষ অধিবেশন ছিল।
সম্মেলনের আহ্বায়ক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কাজী মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান ১১টি ছায়া সংস্কার কমিশনের রিপোর্টের সারসংক্ষেপ তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এই কনফারেন্সকে একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ হিসেবে নিয়ে জ্ঞান আহরণ, মতবিনিময় এবং ন্যায়ভিত্তিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করতে হবে। তিনি জানান, ছায়া সংস্কার কমিশনগুলোর রিপোর্ট দ্রুত প্রকাশ করা হবে এবং আশা করা যায়, দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে এই কনফারেন্স ও রিপোর্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
অধিবেশনে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সংস্কার কমিশনগুলোর মধ্যে আলোচনা চলছে এবং খুব শীঘ্রই আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে একটি সন্তোষজনক সমাধানে পৌঁছানো যাবে। এর মাধ্যমে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পথ প্রশস্ত হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মামুন আহমেদ বলেন, প্রতিটি সরকার জনগণের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হলে সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। তবে প্রায়শই কমিশনের সংস্কার প্রস্তাবগুলো জনগণের প্রত্যাশা পূরণে সম্পূর্ণরূপে সফল হয় না।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম বলেন, বিএনপি দেশে প্রথম বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রবর্তন করেছে। দেশে একটি রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বিপ্লব প্রয়োজন, যা দেশের উন্নয়ন ঘটাতে পারে।
আমার বাংলাদেশ পার্টির সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, সংকটের গভীরে প্রবেশ করতে হবে এবং নাগরিকদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। জনগণের সঙ্গে ক্ষমতার সম্পর্ক উন্নয়নের ওপর তিনি জোর দেন।
সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহরুখ মহিউদ্দিন, জবান ম্যাগাজিনের সম্পাদক রেজাউল করিম রনি, জাতীয় নাগরিক পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব আকরাম হোসাইন এবং সিটিজেন কোয়ালিশনের সদস্য জিয়া হাসান। অধিবেশনটি সঞ্চালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক রোবায়েত ফেরদৌস।
কনফারেন্সে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ইয়াহইয়া আখতারের সমাপনী বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে, সম্মেলনের প্রথম দিনে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান বক্তব্য রাখেন। দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষকগণ প্রায় ৬০টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
ক্যাম্পাস এর সর্বশেষ খবর