
ঝিনাইদহ: একসময়ে ‘ভিক্ষুকমুক্ত উপজেলা’ হিসেবে পরিচিত ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলায় বর্তমানে বেড়েছে ভিক্ষুকের সংখ্যা। শহরের প্রধান সড়কে সাইনবোর্ড এখনো সেই পরিচয়ের কথা জানালেও বাস্তবে এর চিত্র ভিন্ন।
শহরবাসীর ভাষ্য অনুযায়ী, প্রতিদিন শতাধিক ভিক্ষুক তাদের দৈনন্দিন জীবনে বিড়ম্বনা সৃষ্টি করছে। সমাজসেবা অফিসের তালিকায় ভিক্ষুকের সংখ্যা ১২৯ জন উল্লেখ করা হলেও বাস্তবে এই সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি। অভিযোগ রয়েছে, নোয়াপাড়া, যশোর, কালীগঞ্জ, চৌগাছা থেকে ট্রেনে করে ভিক্ষুকেরা নিয়মিতভাবে কোটচাঁদপুরে আসছে। এদের মধ্যে শিশু, বৃদ্ধ ও শারীরিক প্রতিবন্ধী যেমন আছেন, তেমনি অনেক সুস্থ ও কর্মক্ষম ব্যক্তিও এই পেশায় জড়িত হয়েছেন।
ভুক্তভোগী ভিক্ষুকদের ভাষ্য, কেউ সন্তান কর্তৃক অবহেলিত, কেউ স্বামীহারা, আবার কেউ অসুস্থ স্বজনের চিকিৎসার খরচ জোগাতে ভিক্ষা করতে বাধ্য হচ্ছেন। তবে স্থানীয়দের মতে, অনেকে এখন এই পেশাকে সহজ আয়ের উৎস হিসেবে বেছে নেওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে।
পৌর শহরের ব্যবসায়ীরা জানান, অতিরিক্ত ভিক্ষুকের কারণে ক্রেতারা বিড়ম্বনায় পড়েন এবং ভিক্ষার জন্য ক্রমাগত অনুরোধ তাদের জন্য বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
উপজেলা সমাজসেবা অফিস সূত্রে জানা গেছে, ভিক্ষুক পুনর্বাসনের জন্য এ বছর বরাদ্দ মাত্র ১ লক্ষ ৭ হাজার টাকা, যা মাথাপিছু ৮২৯ টাকা। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, এই সামান্য অর্থ দিয়ে কার্যকর পুনর্বাসন সম্ভব নয়।
স্থানীয় মানবাধিকার কর্মী রেজাউল করিম বলেন, ভিক্ষাবৃত্তি কমাতে সহানুভূতিশীল সমাজ এবং সরকারি সহায়তার সুষ্ঠু বণ্টন প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, বরাদ্দকৃত অর্থ লুটপাট হলে ভিক্ষুকমুক্তির স্বপ্ন কেবল সাইনবোর্ডেই থেকে যাবে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর