
কক্সবাজারের রামুতে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম, চাঁদাবাজি ও ভীতি প্রদর্শনের অভিযোগে দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক আব্দুল্লাহ ভুট্টোকে শোকজ করেছে যুবদল।
রামু উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক জহির আলম ও সদস্য সচিব তৌহিদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, সংগঠনের শৃঙ্খলা ও নির্দেশনা লঙ্ঘনের অভিযোগে ভুট্টোর বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে। তাকে তিন দিনের মধ্যে স্বশরীরে হাজির হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত শুক্রবার রাতে দক্ষিণ মিঠাছড়ি স্টেশনে প্রতিপক্ষকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন ভুট্টো ও তার সহযোগীরা। এতে হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
ভুক্তভোগী আহমদ উল্লাহ জানান, ইউপি নির্বাচনে পরাজিত প্রার্থী দুদু মিয়ার পক্ষে কাজ করায় ভুট্টো তার ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন। কিছুদিন আগে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন এবং না দিলে পুলিশ দিয়ে হয়রানির হুমকি দেন।
আহমদ আরও জানান, তার ভাই সালামত উল্লাহ বাজারে গেলে ভুট্টো তাকে অস্ত্র উঁচিয়ে ধাওয়া করেন এবং পরে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ভুট্টো রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ব্যবসায়ী ও বিত্তশালীদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করছেন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে রাজনৈতিক মামলা অথবা হত্যা মামলায় জড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেন।
শফি আলম নামের এক গাছ ব্যবসায়ী জানান, ভুট্টো ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সম্পৃক্ত দাবি করে তার কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা দিতে বাধ্য না হলে রাজনৈতিক মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেন।
স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, ভুট্টো পুরো দক্ষিণ মিঠাছড়িকে নিজের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে চাঁদাবাজি, বালু উত্তোলন ও মাদক ব্যবসার মাধ্যমে ত্রাসের রাজত্ব চালাচ্ছেন। তিনি এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা বসিয়েছেন এবং ওয়াকি-টকি ব্যবহার করেন।
স্থানীয় যুবদল নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেন, ভুট্টো নিজেকে সাবেক এক সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় যুবদল নেতার পিএস-এর ঘনিষ্ঠ দাবি করে এলাকায় চাঁদাবাজি, জমি দখল করছেন এবং ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানছেন।
তবে আব্দুল্লাহ ভুট্টো অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তাকে হেয় করার জন্য এসব ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।
রামু উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক জহির আলম জানান, ভুট্টোর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। তাকে ব্যাখ্যা দিতে বলা হলেও তিনি এখনো হাজির হননি। দলীয় নির্দেশনা অনুযায়ী, দলীয় নাম ভাঙিয়ে কেউ অপরাধে জড়ালে তাকে বহিষ্কার করা হবে।
বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির মৎস্যজীবী বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য লুৎফুর রহমান কাজল জানান, দল কাউকে গুলি করার অধিকার দেয়নি। অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর