
গাজা উপত্যকায় চলমান ইসরায়েলি হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে একে ‘শিশুদের কবরস্থান’ এবং ‘ক্ষুধার্ত মানুষের সমাধিক্ষেত্র’ বলে আখ্যা দিয়েছেন জাতিসংঘের প্যালেস্টাইনি শরণার্থী সংস্থা (UNRWA)-র কমিশনার জেনারেল ফিলিপ লাজারিনি।
শুক্রবার এক্স (পূর্বে টুইটার)–এ দেওয়া এক বার্তায় লাজারিনি বলেন, “মানুষকে এখন দুটি মৃত্যুর একটি বেছে নিতে হচ্ছে — ক্ষুধায় মারা যাওয়া, না-হয় বোমা ও গুলিতে প্রাণ হারানো।” তিনি এই পরিস্থিতিকে “ইসরায়েলের নৃশংস ও ষড়যন্ত্রমূলক হত্যাযজ্ঞ” বলে আখ্যায়িত করেন।
"গাজা এখন শিশুদের জন্য কবরস্থান, আর ক্ষুধার্ত জনগণের জন্য মৃত্যুর মাঠে পরিণত হয়েছে।"
লাজারিনি আরও বলেন, “এটা একটা নিষ্ঠুর ও পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চোখের সামনেই একটি মানবিক বিপর্যয় ধ্বংসযজ্ঞে পরিণত হয়েছে।”
এই মন্তব্যের পেছনে কারণ রয়েছে। বৃহস্পতিবার গাজার দেইর আল-বালাহ এলাকায় মানবিক সহায়তার জন্য অপেক্ষমাণ মানুষের ওপর চালানো ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত হন। নিহতদের মধ্যে ৯ জন শিশু এবং ৪ জন নারী রয়েছেন বলে জানিয়েছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, মে মাস থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত, গাজায় খাদ্য সহায়তা সংগ্রহ করতে গিয়ে অন্তত ৮১৯ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৬৩৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন মানবিক ত্রাণ কেন্দ্রগুলোর কাছে, বাকিরা নিহত হয়েছেন বিভিন্ন খাদ্যবাহী ট্রাক ও বিতরণ পয়েন্টে হামলার ঘটনায়।
গাজার মানবিক পরিস্থিতি আরও জটিল করে তুলছে ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’ (GHF)-এর বিতর্কিত কার্যক্রম। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সমর্থনে চালিত এই সংস্থার বিতরণ ব্যবস্থাকে ঘিরেও প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে, যা UNRWA-এর কার্যক্রমকে সরিয়ে দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস জানায়, গাজায় খাদ্য, চিকিৎসা ও নিরাপত্তাহীনতা এখন এমন এক চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, সাধারণ মানুষ পর্যন্ত নিজেদের জীবন বাঁচাতে গিয়েই মৃত্যুবরণ করছেন।
সর্বশেষ খবর
সারাবিশ্ব এর সর্বশেষ খবর