
বায়েজিদ রৌফাবাদ এলাকায় স্ত্রীকে নৃশংসভাবে হত্যার পর লাশ ১১ টুকরো করে গুম করার চেষ্টার অভিযোগে স্বামী সুমনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
শুক্রবার রাতে র্যাব-৭ ও র্যাব-৯-এর যৌথ অভিযানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার ফুলবাড়িয়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার র্যাব-৭ এর পক্ষ থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানানো হয়।
গ্রেপ্তারকৃত সুমন কুমিল্লা জেলার সদর দক্ষিণ সুয়াগাজী এলাকার সুন্দর আলীর ছেলে। তার আট বছর বয়সী একটি সন্তান রয়েছে।
র্যাব-৭ জানায়, গত ৯ জুলাই রৌফাবাদ পাহাড়িকা হাউজিং সোসাইটির একটি ফ্ল্যাটে সুমন ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তার স্ত্রীকে হত্যা করে এবং লাশ ১১ টুকরো করে ঘরের বিভিন্ন স্থানে ফেলে রেখে গুম করার চেষ্টা করে।
ঘটনার সূত্রপাত হয় যখন সিকিউরিটি গার্ড মশিউর রহমান ফ্ল্যাট থেকে দুর্গন্ধ ও অস্বাভাবিক নড়াচড়া এবং পানির শব্দ শুনতে পান। তিনি সুমনের ভাড়াকৃত ফ্ল্যাটে গিয়ে ডাকাডাকি করলে প্রায় ৩০ মিনিট পর সুমন দরজা খোলে। মশিউর রহমানের সন্দেহ হলে তিনি জোর করে ভেতরে ঢুকে রুমের বিভিন্ন স্থানে রক্তের দাগ, বাথরুমে রক্তমাখা কাপড় এবং কমোডে মাংস দেখতে পান। এরপর তিনি বাসাটি বাইরে থেকে তালাবদ্ধ করে দেন। এসময় সুমন গ্রিল ভেঙে পালিয়ে যায়। পরে মশিউর রহমান বায়েজিদ থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহত ফাতেমা বেগমের (৩২) খণ্ড-বিখণ্ড মরদেহ এবং খাটের নিচ থেকে পায়ের অংশ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ফাতেমার বড় ভাই মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন রুবেল বায়েজিদ বোস্তামী থানায় একটি মামলা করেন।
র্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক এ আর এম মোজাফ্ফর হোসেন জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সুমন জানিয়েছে, ১০ বছর আগে তাদের পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। এরপর সুমন কর্মসংস্থানের জন্য সৌদি আরব যায়। ভিসা জটিলতায় ২০২৪ সালের মাঝামাঝি সময়ে দেশে ফিরে এসে চট্টগ্রামে পিকআপ চালানো শুরু করে। দেশে ফেরার পর থেকে তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো, যা নিয়ে উভয় পরিবারে একাধিকবার আপোষ মীমাংসা করা হয়। গত ৯ জুলাই রাতে অজ্ঞাতনামা ৬-৭ জন যুবক তার বাসায় আসাকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে আবারও বাগবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে সুমন দুটি ধারালো চাকু দিয়ে ফাতেমাকে আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে এবং পরবর্তীতে লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে ১১ টুকরো করে।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর