
৩ বছর বয়সে চিরদিনের জন্য হারিয়েছে বাবাকে। মায়ের স্নেহ ও তত্ত্বাবধানে বেড়ে উঠেছিলেন তাজনীন মেহেজাবীন চৌধুরী। পিতৃহীন শৈশবেই তাকে দেখতে হয়েছে জীবনের নানা প্রতিকূলতা। তবে, সে কখনো হাল ছাড়েনি। কঠোর পরিশ্রম আর মায়ের অনুপ্রেরণায় এগিয়ে চলেছে। জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা এসএসসিতে ধরা দিয়েছে সাফল্য।
গ্রামের স্কুল থেকে অংশ নিয়ে ১৩০০ নম্বরের মধ্যে ১২৩৭ নম্বর পেয়েছে মেহেজাবীন। নানা বাধা-বিপত্তি সত্ত্বেও তার এই সাফল্য একটি বড় উদাহরণ বলে মনে করছেন অনেকেই। তার এই অর্জনে উচ্ছ্বসিত পুরো পরিবার, শিক্ষক ও এলাকাবাসী।
চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার চাতরী ইউনিয়নের ডুমুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা মেহেজাবীন। তার মা শাহীন আক্তার একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। মেহেজাবীন স্থানীয় আনোয়ারা সরকারি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়।
মেয়ের এমন সাফল্যে গর্বিত শাহীন আক্তার বলেন, বাবা হারা মেয়েকে অনেক কষ্টে বড় করেছি। ওর অনেক শখ পূরণ করতে পারিনি। কিন্তু ও কোনোদিন অভিযোগ করেনি। আজ আমার মেয়ের কৃতিত্বে আমি শুধু গর্বিত মা নই, পুরো আনোয়ারা গর্বিত।
নিজের অনুভূতি জানাতে গিয়ে মেহেজাবীন বলে, নির্বাচনী পরীক্ষার পর কিছু কো-কারিকুলার কার্যক্রমে অংশ নিই, তাতে একাডেমিক পড়ায় কিছুটা পিছিয়ে পড়েছিলাম। আবার রমজানে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলাম। তখন সহপাঠীরা প্রস্তুতিতে ব্যস্ত, আর আমি বিছানায়। তবু আল্লাহর রহমতে এই ফল করতে পেরেছি। আমি কখনো দিনে ৫-৬ ঘণ্টার বেশি পড়িনি। শারীরিক অসুস্থতা আর বিভিন্ন কাজে ব্যস্ততার কারণে ফল আরও ভালো হতে পারত। আশা করেছিলাম ১২৫০-এর ওপরে পাবো।
আনোয়ারা সরকারি আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম নাসির উদ্দীন বলেন, বেসরকারিভাবে আমরা তার ফল জানতে পেরেছি। তার এই অর্জন আমাদের বিদ্যালয়ের জন্য গর্বের।
সিনিয়র শিক্ষক আজগর আলী বলেন, আমরা আগেই জানতাম সে ভালো কিছু করবে। সবসময় পরিশ্রম করেছে, মেধা ও নিষ্ঠায় কখনো কমতি ছিল না। সে যে সাফল্য ছিনিয়ে আনবে, তা আমরা বিশ্বাস করতাম।
রার/সা.এ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর