
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় মশাবাহিত রোগ ম্যালেরিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। জেলা ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে প্রায় প্রতিদিনই ম্যালেরিয়া রোগী পাওয়া যাচ্ছে।
খাগড়াছড়ি জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত ৩৪৪ জন ম্যালেরিয়া রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে শুধু জুন মাসেই শনাক্ত হয়েছে ১৭৬ জন। জুন মাসে পানছড়ি উপজেলায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, জীবাণু শনাক্ত করতে দেরি হওয়ায় তার মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া, মাটিরাঙ্গা উপজেলা থেকে গুরুতর অবস্থায় একজনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
দীঘিনালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তনয় তালুকদার জানান, খাগড়াছড়িতে সবচেয়ে বেশি ম্যালেরিয়া রোগী শনাক্ত হয়েছে দীঘিনালায়। গত ৬ মাসে এখানে ১৭৬ জন রোগী শনাক্ত হয়েছেন, যাদের মধ্যে বাবুছড়া ইউনিয়নের রোগীর সংখ্যা বেশি। এছাড়াও পার্শ্ববর্তী লংগদু ও বাঘাইছড়ি উপজেলা এবং বাঘাইছড়ির সাজেক, বাঘাইহাট থেকেও রোগীরা এখানে চিকিৎসা নিতে এসেছেন। বর্ষায় মশার উপদ্রব বাড়ায় ম্যালেরিয়া আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে।
জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল কর্মসূচির সার্ভিল্যান্স মেডিকেল অফিসার ডা. বিশ্ব জ্যোতি চাকমা জানান, বাংলাদেশের ১৩টি জেলায় ম্যালেরিয়ার প্রকোপ থাকলেও পার্বত্য জেলাগুলোতে এর বিস্তার সবচেয়ে বেশি। সারাদেশে ম্যালেরিয়া আক্রান্তের ৯০-৯৫ ভাগ রোগীই এই তিন পার্বত্য জেলার। ম্যালেরিয়া নিয়ন্ত্রণে দ্রুত রোগ শনাক্তকরণ, চিকিৎসা এবং মশারী বিতরণের মাধ্যমে প্রতিরোধের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পাশাপাশি, মানুষকে সচেতন করার জন্য মাঠ পর্যায়ে কার্যক্রম চলছে।
খাগড়াছড়ি জেলা সিভিল সার্জন মোহাম্মদ ছাবের জানান, ম্যালেরিয়া মশাবাহিত একটি প্রাণঘাতী সংক্রামক রোগ। বর্ষা মৌসুমে এ রোগের প্রকোপ বাড়ে। জ্বর হলে অবহেলা না করে দ্রুত রক্ত পরীক্ষা করার পরামর্শ দেন তিনি। পাশাপাশি, বাড়ির আশেপাশে ঝোপঝাড় পরিষ্কার রাখা, জমে থাকা পানি সরিয়ে ফেলা এবং রাতে মশারী ব্যবহারের ওপর জোর দেন তিনি।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর