
পাবনা-৩ আসনে স্থানীয় প্রার্থীকে মনোনয়নের দাবিতে এবার মাঠে নেমেছেন চাটমোহর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব হাসাদুল ইসলাম হীরা।
বুধবার (২৩ জুলাই) বিকেলে তিনি বিশাল মোটরসাইকেল শোডাউন দিয়ে ফরিদপুর, ভাঙ্গুড়া ও চাটমোহর প্রদক্ষিণ করেন।
এর আগে তিনি ঢাকা থেকে সড়কপথে ফরিদপুর এসে পৌঁছান। এরপর চাটমোহর থেকে প্রায় সহস্রাধিক মোটরসাইকেল নিয়ে নেতাকর্মীরা ফরিদপুর থেকে তাকে স্বাগত জানান। সেখান থেকে মোটরসাইকেল শোডাউন ও গাড়ি বহর নিয়ে ফরিদপুর বাজার হয়ে ভেড়ামারা বাজার, ভাঙ্গুড়া বাজার হয়ে চাটমোহর পৌর সদরের প্রধান সড়ক ঘুরে সন্ধ্যায় চাটমোহর বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে পৌঁছান।
সেখানে পথসভায় নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করে বক্তব্য দেন হাসাদুল ইসলাম হীরা। তিনি বলেন, "আমাকে নিয়ে বলা হয় আমি নাকি তুহিন ভাইকে সমর্থন করেছি, তার জনসভায় গিয়েছি। আমি দলের নগন্য একজন কর্মী মাত্র। যখন কেন্দ্রীয় নেতারা একটা প্রোগ্রামে আসে, সেখানে আমার মতো একজন কর্মী যেতে বাধ্য। সে কারণে তুহিন ভাইয়ের জনসভায় আমি গিয়েছি। হয়তো আমি বুঝতাম যদি তুহিন ভাই একটা কাগজ দেখাতেন যে তাকে মনোনয়ন দিয়েছে বা প্রাথমিক মনোনয়ন দিয়েছে। আমি ভেবেছিলাম তিনি হয়তো কোনো কাগজ দেখাবেন, কিন্তু উনি কোনো কাগজ দেখাননি।"
হীরা বলেন, "আমি কাউকে সমর্থন করিনি, কাউকে সমর্থন করার জন্য আমি নই। আমি হীরা দলের দুঃসময়ে হাজত খেটেছি, জেল খেটেছি, মামলা খেয়েছি। একের পর এক নির্যাতন আমার উপরে চলেছে, পুলিশ প্রশাসন থেকে শুরু করে আ'লীগের নেতাকর্মীদের দ্বারা। তারপরও আমি বিএনপি থেকে একবিন্দুও সরে দাঁড়াইনি। আমার বিএনপির সকল নেতৃবৃন্দ আজকে যেমন আমার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে, ঠিক দুঃসময়েও অক্টোপাসের মতো আমাকে ধরে রেখেছিলেন এবং সামনে এগিয়ে নিয়েছিলেন। আমার বিএনপি দলের দুঃসময়ে নেতাকর্মী যারা নির্যাতিত হয়েছিলেন, জেলজুলুম, হামলা, মামলা খেয়েছেন, সেইসব জেলজুলুমের হামলা মামলার দায়ভার আমি গ্রহণ করেছি। এমনকি কোর্টের উকিল থেকে শুরু করে বাড়ির সংসার খরচ পর্যন্ত আমি দিয়েছি। আমি প্রত্যেকটা নেতাকর্মীর খোঁজ নিয়েছি। সে দুঃসময়ে আমি ছিলাম, এখনো আছি, শেষ পর্যন্ত আমি থাকব ইনশাআল্লাহ।"
হাসানুল ইসলাম হীরা বলেন, "আমাদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান ২০১৮ সালে চাটমোহর থেকে ধানের শীষের দুইজনকে মনোনয়ন দিয়েছিলেন – আমাকে এবং সাবেক সংসদ সদস্য কে এম আনোয়ারুল ইসলামকে। অতএব আমার বিশ্বাস, মনেপ্রাণে বিশ্বাস করি চাটমোহরবাসী এখনো যেন সেই বিশ্বাসটুকু নিয়ে থাকে যে আমার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান এবারও ধানের শীষের মনোনয়ন চাটমোহর থেকেই দেবেন ইনশাআল্লাহ। কারণ চাটমোহর উপজেলায় ওই ভাঙ্গুড়া-ফরিদপুরের চেয়েও ৩০-৩৫ হাজার ভোট বেশি। সেই উপজেলায় দীর্ঘদিন এমপি নেই। চাটমোহর নির্যাতিত একটা উপজেলা, যেখানে কোনো উন্নয়ন নেই। দীর্ঘ ২০ বছরের উন্নয়নের ছোঁয়া যেখানে থাকে না, সে উপজেলা একটা গ্রামে পরিণত হয়ে গেছে। অতএব আমার দলের নেতা, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে বলব, আপনি আসুন, মাঠ পর্যায়ে জরিপ করুন। আপনি যাকে পছন্দ হয় তাকে ধানের শীষের মনোনয়ন দেবেন, আমি তারই নির্বাচন করব ইনশাআল্লাহ। আমি পাবনা-৩ আসনের স্থানীয় প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানাই। আমরা চাটমোহরবাসীর স্বার্থে চাটমোহর থেকে এমপি প্রার্থী দেবার দাবি করছি। বহিরাগত কাউকে আমরা মানবো না। এই দাবিতে আমাদের আন্দোলন আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।"
এ সময় উপস্থিত ছিলেন চাটমোহর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম তাইজুল, গুনাইগাছা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম মওলা, পৌর যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মুত্তালিব হোসেন, উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব আরিফ, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক ইমরান হোসেন, যুগ্ম আহ্বায়ক রাকিবুল ইসলাম হৃদয়, পৌর ছাত্রদলের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম রাহুল সহ অনেকে।
এর আগে দীর্ঘদিন ধরে চাটমোহর থেকে ধানের শীষের প্রার্থী দেবার দাবিতে নিয়মিত উঠান বৈঠক, পথসভা, লিফলেট বিতরণ সহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করছেন পাবনা-৩ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী ও জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা হাসানুল ইসলাম রাজা। এছাড়া চাটমোহরের ছাত্রদল, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল সহ বিভিন্ন সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল সহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করে আসছেন।
উল্লেখ্য, কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিনকে পাবনা-৩ আসনে প্রাথমিক মনোনয়ন দিয়েছে বিএনপি।
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর