
বগুড়া প্রতিনিধি: বগুড়ার শেরপুর উপজেলার সুঘাট ইউনিয়নের চককল্যাণী এলাকার কাটাখালি বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় প্রায় ৫০০ বিঘা আবাদি জমি এবং সাতটি গ্রামের ৩০০ বাড়িঘর হুমকির মুখে পড়েছে। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে চরম উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা নাগাদ বাঁধটি ভাঙার পর পানিপ্রবাহের চাপ এতটাই বেশি ছিল যে রাস্তা ভেঙে দোকানপাট পানিতে ভেসে গেছে। দ্রুত এই বাঁধের পুনর্নির্মাণের জন্য প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা জানান, কাটাখালি খাল দিয়ে নদীর পানি প্রবেশ করে বিলজয় সাগর, জয়লা, আওলাকান্দি, জালশুকা, কইগাতী, যুগিগাতি, রুদ্রবাড়িয়া-সহ আশেপাশের সকল এলাকায় বন্যা হওয়ায় তারা জমিতে চাষাবাদ করতে পারতেন না। সেখানে পাকিস্তানি আমলে চককল্যাণী গ্রামে প্রায় ১০০ মিটার বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছিল। বিগত ৩০ বছর আগে সেই বাঁধ ভেঙে গিয়ে আবারও দুর্ভোগে পড়েছিল ঐ এলাকার হাজার হাজার মানুষ। পরে এলাকার মানুষ সরকারি সহায়তায় আবারও বাঁধটি নির্মাণ করে। অতিরিক্ত পানির চাপ হলে সেটি খাল থেকে পাইপ সংযোগ দিয়ে পানি বের করা হচ্ছিল। হঠাৎই সেই পাইপের মুখ বন্ধ হয়ে যায়। গত সপ্তাহের অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে বাঁধের নিচে থাকা পাইপের মুখ বন্ধ থাকায় পানি বের হতে না পারায় দক্ষিণ পাশের অংশে চরম চাপ সৃষ্টি হয়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে একপর্যায়ে বাঁধটি ভেঙে পানি বাঙালি নদীতে যায়। এতে বাঁধের দুই অংশের রাস্তা ভেঙে দোকানপাট পানিতে ভেসে যায়। নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে বাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করে আবাদি জমি ও বসতবাড়ি ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। খুব দ্রুত এই বাঁধের পুনর্নির্মাণের জন্য প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন এলাকাবাসী।
রিপন নামের একজন জানান, বাঁধের সঙ্গে লাগানো তার মুরগির খামার ছিল, গতকাল বাঁধের সঙ্গে খামারটিও ভেঙে গেছে। এতে তিনি দুই দিকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন; একদিকে খামার নষ্ট, অন্যদিকে ব্যবসা বন্ধ। ভাঙন এলাকার বাসিন্দা আরমান, আরিফুল ও আলমগীর হোসেন বলেন, কাটাখালি বাঁধে একটি সুইচগেট নির্মাণের জন্য বেশ কিছুদিন আগে আমরা মানববন্ধন করেছিলাম। এমনকি পানি উন্নয়ন বোর্ড পর্যন্ত বিষয়টি অবগত করেছিলাম। কিন্তু দুঃখের বিষয় এখনো তার কোনো কার্যক্রম শুরু হয়নি। তাই ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যেন দ্রুত আমাদের এই সমস্যা সমাধান করে স্বাভাবিক চলাচল ও নির্বিঘ্নে বসবাসের ব্যবস্থা করা হয়। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আশিক খান বলেন, কাটাখালির ওই বাঁধ ভাঙনের খবর পেয়েছি, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে যেন দ্রুত সকল কিছুর ব্যবস্থা করা হয়।
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর