• ঢাকা
  • ঢাকা, রবিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৩৮ মিনিট পূর্বে
মোহাম্মদ ফয়সাল
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২৬ জুলাই, ২০২৫, ১০:৩৫ রাত

জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের মূল নায়ক তারেক রহমান : আমীর খসরু

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের মূল নায়ক তারেক রহমান এবং সবচেয়ে বেশি ভূমিকা বিএনপির বলে দাবি করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

শনিবার বিকালে নগরীর জিইসি মোড়ে অবস্থিত জিইসি কনভেনশন সেন্টারে সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদ চট্টগ্রাম শাখার উদ্যোগে জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও পেশাজীবী মহাসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, "জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের মূল নায়ক ছিলেন তো তারেক রহমান এবং যার সবচেয়ে বেশি আত্মত্যাগ, সেটা হচ্ছে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। বক্তৃতা এটা দিয়ে শুরু করতে হবে। যাদের কারণে আজ শেখ হাসিনা পালাতে বাধ্য হয়েছেন। জুলাই-আগস্টের আন্দোলন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবশ্যই, কিন্তু সে আন্দোলনেও সবচেয়ে বেশি ভূমিকা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ও তার অঙ্গসংগঠনের।"

আমীর খসরু বলেন, "১৬ বছরের আন্দোলন সংগ্রামে, আমাদের (বিএনপি) এত মানুষের যে আত্মত্যাগ, সেটা এখন আবার অনেকে ভুলে যেতে বসেছেন। এখন জুলাই-আগস্ট নিয়ে যে আলোচনা হচ্ছে, তাতে ১৬ বছর ধরে যে মানুষগুলো একটা কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে সবচেয়ে বেশি ত্যাগ স্বীকার করেছে, সেটা কিন্তু আলোচনায় আসছে না। তাদের ব্যবসা-বাণিজ্য ধ্বংস হয়ে গেছে, পরিবার ধ্বংস হয়ে গেছে, চাকরিচ্যুত হয়েছে, বাড়িঘরে থাকতে পারেনি, বেশিরভাগ সময় কোর্ট-কাচারিতে কাটিয়েছে। বলতে কষ্ট হচ্ছে - এমন অনেকে আছেন, স্ত্রী স্বামীকে ত্যাগ করে চলে গেছেন, বছরের পর বছর স্বামী ঘরে না থাকার কারণে, এরকম ঘটনা আছে। সেগুলো কিন্তু আলোচনায় আসছে না।"

আগামী নির্বাচনে জনগণের রায় নিয়ে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে প্রথম ১৮ মাসে এক কোটি মানুষের কর্মসংস্থান করার কথা পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, "আগামীর বাংলাদেশের তরুণদের ভবিষ্যৎ কী হবে, সেই চিন্তা আমরা করে রেখেছি। আমরা এক কোটি তরুণের কর্মসংস্থানের কথা বলছি প্রথম ১৮ মাসে। আমরা কিন্তু এই কথাটা পলিটিক্যাল স্টেটমেন্ট হিসেবে বলছি না, অঙ্কের হিসাব-কিতাব করে, কোন সেক্টরে কত চাকরি হবে, দেশে কত হবে, বিদেশে কত হবে, আত্মকর্মসংস্থান কত হবে, আমরা হিসাব-কিতাব করে বের করেছি। এগুলোর জন্য রাষ্ট্রীয় নীতিমালায় পরিবর্তন আনব, সেটাও আমরা রেডি করেছি।"

তিনি বলেন, "সুতরাং আমরা যা বলছি সেগুলো পলিটিক্যাল স্টেটমেন্ট না, এগুলো তারেক রহমান সাহেব নীতিনির্ধারকদের নিয়ে এ কাজগুলো প্রায় সমাপ্ত করে ফেলেছেন। স্বাস্থ্য খাতে কী হবে, শিক্ষা খাতে কী হবে, আইটি সেক্টর, ইন্ডাস্ট্রিতে, কৃষি খাতে কী হবে - সব আমরা হোমওয়ার্ক করে রেখেছি। আমরা এক কোটি চাকরির কথাও আমরা হোমওয়ার্ক করেই বলেছি। এজন্য যেসব এক্সপার্ট আছেন, তারাও আমাদের সাথে কাজ করছেন। আমাদের তো দেশ গড়তে হবে। পলিটিক্যাল স্লোগান দিয়ে তো দেশ গড়া যাবে না। এখন আমাদের মানুষের কাছে পরিষ্কার করতে হবে যে আমরা কীভাবে আগামীর বাংলাদেশ গড়ব।"

এখন দেশ গড়ার সময় মন্তব্য করে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, "আজকের প্রেক্ষাপটে বিএনপির ৩১ দফার ভিত্তিতে এখন আমাদের দেশ গড়ার সময়, জাতি গঠনের সময়। এতদিন শেখ হাসিনার পতন ছিল আমাদের মূল লক্ষ্য। এখন তারেক রহমান বলছেন, রাজনীতিতে সহনশীলতার কথা। ভিন্নমত পোষণ করেও অপরের মতকে সম্মান জানানোর কথা বলছেন। কারণ রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন না হলে একশ সংস্কার করেও কোনো লাভ হবে না।"

তিনি বলেন, "নেতাকর্মীদের বলব - অপরের সাথে দ্বিমত করেও তার মতের প্রতি সম্মান জানাবেন, অসুবিধা নেই। আমরা তো যুদ্ধক্ষেত্রে নেই, আমাদের দেশ গড়তে হবে। নির্বাচনের পর তো আমাদের দেশটাকে গড়তে হবে। জিয়াউর রহমান সাহেব যেভাবে দেশ গড়েছেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যেভাবে দেশ গড়েছেন, তারেক রহমান সাহেব দেশ গড়ার যে স্বপ্ন জাতির সামনে তুলে ধরছেন, সেই গল্প জনগণকে বলতে হবে, দেশবাসীর সামনে ৩১ দফার গল্প তুলে ধরতে হবে।"

তিনি বলেন, "জুলাই বিপ্লবের কথা বলতে গেলে ১৬ বছরের আন্দোলনে যাদের অবদান আছে, তাদের সবার কথা বলতে হবে এবং এটা শুরু করতে হবে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে দিয়ে। এই আন্দোলনের এক নম্বর অবদান দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার, এটাও কিন্তু অনেকে বলতে ভুলে গেছেন। দেশনায়ক তারেক রহমান বছরের পর বছর এ আন্দোলনের জন্য জাতিকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে সক্ষম হয়েছেন, সেই কথাটাও কিন্তু জুলাইয়ের আলোচনায় খুব কম করে আসছে। আসলে এই আন্দোলনের মূল নায়ক তো ছিলেন তারেক রহমান আর সবচেয়ে বেশি আত্মত্যাগ যেটা, সেটা করেছেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া। বক্তব্য এটা দিয়েই শুরু করতে হবে, যাদের কারণে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন।"

তিনি বলেন, "জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের, যুবদলের, শ্রমিক দলের, ছাত্রদলের, স্বেচ্ছাসেবক দলের, সমস্ত অঙ্গসংগঠনের। সবচেয়ে বেশি মানুষের প্রাণহানি হয়েছে, বিএনপির সাথে সম্পর্কিত যারা রাজনীতি করেছেন তারা। যারা জেলে গেছেন, তাদের নব্বই শতাংশ ছিল বিএনপির। আমার সঙ্গে জেলে বন্দি ছিল কমপক্ষে ১০ হাজারের মতো, সেখানে ৯ হাজার হচ্ছে বিএনপি নেতাকর্মী। আর বাকি এক হাজারের মতো ছিল রিকশাওয়ালা ভাই, ঠেলাওয়ালা ভাই, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন মানুষ আছে।"

আমীর খসরু বলেন, "এই যে চরম কঠিন একটা সময়, আমরা সবাই অতিক্রম করেছি, বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা, এই কথাগুলো জুলাই-আগস্টের আলোচনায় কোথাও আসছে না। শহিদ ওয়াসিমের নামটা পর্যন্ত আমি ঢাকায় কোথাও দেখি না। যে জুলাই আন্দোলনে প্রথম শহিদ ওয়াসিম, তার নামটা কোথাও আলোচনায় নেই।"

আন্দোলনের কৃতিত্ব বিএনপি কখনো এককভাবে দাবি করে না জানিয়ে তিনি বলেন, "এই যে বিএনপির কথা আলোচনায় আসছে না, এটা নিয়ে আমরা বাড়াবাড়ি করিনি। কারণ এই বিপ্লব, এই আন্দোলনকে আমরা বিএনপির কৃতিত্ব হিসেবে দেখাতে চাই না। সমস্ত জাতি, সবাই একসাথে আন্দোলন করে সরকারের পতন ঘটিয়েছে, আমরা সেটাকে সেভাবে দেখাতে চেয়েছি। কৃতিত্বের দাবিদার যে সবচেয়ে বেশি বিএনপি, এটা আজ পর্যন্ত তারেক রহমান সাহেবও বলেননি, আমরাও বলিনি। একটাই কারণ - আন্দোলনকে দ্বিধাবিভক্ত আমরা করতে চাই না। আন্দোলনে বিভাজন আমরা করতে চাই না। আমরা এ আন্দোলনকে দেশের সকল মানুষের আন্দোলন হিসেবে দেখাতে চেয়েছি, যে কারণে বিএনপি কখনো কৃতিত্ব দাবি করে না এবং করবেও না। এটা বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের আন্দোলন হিসেবে আমরা আখ্যা দিয়েছি।"

আমীর খসরু বলেন, "আমার সবসময় শেখ হাসিনার মুক্তিযুদ্ধের কৃতিত্ব দাবির কথা মনে পড়ে। মুক্তিযুদ্ধ করল কারা আর সারাজীবন সেটার কৃতিত্ব দাবি করল শেখ হাসিনা। ত্রিশ লাখ মানুষ প্রাণ দিয়েছে, মহিলারা রেপের শিকার হয়েছে, অথচ শেখ হাসিনা কৃতিত্ব দাবি করেছেন শুধু তার নিজের এবং পরিবারের। এখনও সেই অবস্থা যাতে না হয়, সেজন্য বিএনপি কখনও একক কৃতিত্ব দাবি করছে না। তবে রেকর্ডের জন্য আমাদের নেতাকর্মীদের সবাইকে জানতে হবে।"

সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক জাহিদুল করিম কচির সভাপতিত্বে ও আইনজীবী ফোরামের সদস্য সচিব এড. হাসান আলী চৌধুরী এবং মহানগর ড্যাবের সাধারণ সম্পাদক ডা. ইফতেখার ইসলাম লিটনের পরিচালনায় এতে প্রধান বক্তার বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক অধ্যাপক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এস এম ফজলুল হক। উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির সদস্য ইসরাফিল খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

এছাড়া বক্তব্য রাখেন সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব ডা. খুরশীদ জামিল চৌধুরী, প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির ভিসি অধ্যাপক ড. নসরুল কাদির, অ্যাবের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার জানে আলম সেলিম, সিএমইউজে'র সাবেক সভাপতি শামসুল হক হায়দরী, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সহকারী মহাসচিব মুস্তাফা নঈম, বার কাউন্সিলের সদস্য এড. এ এস এম বদরুল আনোয়ার, সিএমইউজে'র সাধারণ সম্পাদক সালেহ নোমান, জেলা ড্যাবের সাবেক সভাপতি ডা. আশরাফুল কবির ভূইয়া, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এড. আবদুল সাত্তার, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের আহ্বায়ক এড. তারিক আহমেদ, মহানগর পিপি এড. মুফিজুল হক ভূইয়া, ড্যাব নেতা ডা. ঈসা চৌধুরী, ইঞ্জিনিয়ার মেজবাউল আলম, সিটি করপোরেশন কলেজ শিক্ষক সমিতির আহ্বায়ক আবদুল হক, ব্যাংকার মেহরাব হোসেন খান, ইঞ্জিনিয়ার মো. ওসমান, সিদ্দিক আল মামুন প্রমুখ।

আলোচনা সভা শুরুর আগে আওয়ামী দুঃশাসন ও জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের ওপর নির্মিত ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।

রার/সা.এ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ [email protected]