
কাঁচা হাতে আঁকা পাকা শিল্প। শৈল্পিকতা দেখে বোঝার উপায় নেই, এগুলো শিশুদের হাতে আঁকা চিত্র। এ যেন জীবন্ত ছবি। শিশুদের ক্যানভাসে আঁকা ছবিতে ফুটে উঠেছে জুলাই গণঅভ্যুত্থান। দৃশ্যগুলো চোখে পড়েছে বৃহস্পতিবার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে। প্রাথমিকের শিশুরা চিত্রাঙ্কনের মাধ্যমে তুলে ধরেছে জুলাই বিপ্লব। জুলাই পুনর্জাগরণ প্রতিযোগিতায় শিশু শহিদদের স্মরণে ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা তাদের চিত্রাঙ্কনে তুলে ধরেছে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের দৃশ্য। তা দেখে অভিভূত শিক্ষকসহ সকলে।
নীলফামারীর কিশোরগঞ্জে জুলাই পুনর্জাগরণ উপলক্ষে শিশু শহিদদের স্মরণে ১৭৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে জুলাই-কেন্দ্রিক কবিতা, গান, রচনা, আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কনসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এতে প্রথম শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণির কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে মাগুরা দর্জিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, কোমলমতি শিশু শিক্ষার্থীরা আনন্দে জুলাই অভ্যুত্থানের চিত্র অঙ্কন করছে। তারা কবিতা, গান, রচনা, আবৃত্তিতেও তুলে ধরেছে জুলাই বিপ্লব। একই দৃশ্য দেখা গেছে কিশোরগঞ্জ কেন্দ্রীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাগুরা মাস্টারপাড়া বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বেশ কটি বিদ্যালয়ে।
মাগুরা দর্জিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থী পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রী মারিয়া জানান, "আমাদের ছোট ছোট ভাইবোনকে মেরে ফেলা হয়েছে। তাদের স্মরণে আমরা চিত্রাঙ্কনে জুলাই অভ্যুত্থান ফুটে তোলার চেষ্টা করেছি।"
একই বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থী পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র লাবিব বলেন, "আর যাতে কোনো শিশু এভাবে শহিদ না হয়। শিশুবান্ধব নতুন দেশ গড়ে উঠুক।"
মাগুরা দর্জিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাজ্জাদুল করিম বলেন, "কচিকাঁচা শিক্ষার্থীরা ভবিষ্যতে দেশ আলোকিত করবে। তাদের হাত ধরে শহিদ শিশুরাসহ শহিদ আবু সাঈদ-মুগ্ধরা চিরদিন বেঁচে থাকবেন সবার হৃদয়ে। শিশুরা এত সুন্দরভাবে জুলাই অভ্যুত্থানের চিত্র ফুটে তুলে ধরবে, কল্পনাই করতে পারিনি।"
উপজেলা শিক্ষা অফিসার ড. মাহমুদা খাতুন বলেন, "জুলাই পুনর্জাগরণ অনুষ্ঠান উপলক্ষে শিশু শহিদদের স্মরণে উপজেলার ১৭৫টি বিদ্যালয়ে এ অনুষ্ঠান হয়েছে। শিশুরা এত সুন্দর করে চিত্রাঙ্কন, কবিতা, গান, রচনা, আবৃত্তিসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে জুলাই অভ্যুত্থান ফুটে তুলে ধরেছে, তা দেখে আমি বিস্মিত। কচিকাঁচা শিশু শিক্ষার্থীরা এত সুন্দর ছবি আঁকতে পারে না দেখলে বোঝা যেত না। তাদের হাতে ফুটে উঠেছে জীবন্ত জুলাই বিপ্লব।"
উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা বলেন, "ছোট ছোট সোনামনিরা ও ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা জুলাইয়ের চেতনাকে ধারণ করে এতো চমৎকার ছবি এঁকেছে যা সত্যি আমাদেরকে অভিভূত করেছে। আগামী দিনে এই শিশুরাই আমাদের দেশকে একটি বৈষম্যমুক্ত ও উন্নত বাংলাদেশ হিসেবে বিনির্মাণে ভূমিকা রাখবে।"
সর্বশেষ খবর