
দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকে সংসারে অশান্তি বেড়ে গিয়েছিল। গৃহবধূ হনুফা বেগমের জীবনে নামতে থাকে নির্যাতনের অন্ধকার। শেষমেশ সেই নির্যাতনেরই পরিণতি কি মৃত্যুই?-এই প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে গাজীপুরের টঙ্গী পশ্চিম থানার গুটিয়া নর্থ টাউন এলাকায়।
গত বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে নিজ কক্ষে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায় ৪৫ বছর বয়সী হনুফার মরদেহ। ঘটনাটি প্রথমে আত্মহত্যা বলে মনে করা হলেও, পরিবার ও প্রতিবেশীদের সন্দেহ—এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
নিহতের ভাই মো. রাব্বি জানান, প্রায় পাঁচ বছর আগে হনুফার স্বামী কবির হোসেন গোপনে দ্বিতীয় বিয়ে করেন সেলিনা আক্তারকে। সেই থেকেই হনুফার জীবনে নেমে আসে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। "আমার বোনকে প্রায়ই মারধর করা হতো, গালিগালাজ করত। আমরা আগেও থানায় অভিযোগ করেছিলাম।
এদিকে নিহত হনুফার স্বামীর পরিবারের দাবি, ঘটনার দিন হনুফা নিজের কক্ষে ছিলেন। দুপুরে তার ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পেয়ে পরিবারের লোকজন ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার খবর পেয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়, পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
ময়নাতদন্তের প্রাথমিক প্রতিবেদনে চিকিৎসকরা সন্দেহ প্রকাশ করে বলেন, এটি হয়তো সাধারণ আত্মহত্যা নয়।
এ ঘটনায় শুক্রবার (১ আগস্ট) রাতে নিহতের ভাই রাব্বি বাদী হয়ে টঙ্গী পশ্চিম থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে কবির হোসেন এবং তার দ্বিতীয় স্ত্রী সেলিনা আক্তারকে।
ঘটনার পর থেকেই এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয়দের অনেকে বলছেন, “হনুফার জীবনে যে অশান্তি ছিল, তা অনেকেই জানত। কিন্তু এমন পরিণতি কেউ কল্পনা করেনি।
টঙ্গী পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসকান্দার হাবিবুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর