
নিরাপদ ক্যাম্পাস ও সাজিদ আবদুল্লাহর মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) শাখা ছাত্রশিবির। শনিবার দুপুরে ৩টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। পরে এটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্রধান ফটকে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়। এতে সংগঠনটির সহস্রাধিক শিক্ষার্থী যোগ দেন। সমাবেশে সংগঠনটির নেতারা জুলাই বিপ্লবের আলোকে ক্যাম্পাস সংস্কার, ইকসু গঠন, সাজিদের মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্ত ও গুম হওয়া শিক্ষার্থী ওয়ালি উল্লাহ ও আল মুকাদ্দাসের সন্ধ্যান দাবি করেছেন।
সমাবেশে সংগঠনটি সেক্রেটারি ইউসুব আলীর সঞ্চালনায় উপস্থিত ছিলেন অফিস সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম রাফি, আন্তর্জাতিক ও স্কিল ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক হাসানুল বান্না ও প্রচার সম্পাদক নুর হামযাসহ সহস্রাধিক নেতাকর্মী।
সমাবেশে সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, জুলাই বিপ্লবের এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ে উল্লেখযোগ্য কোনো সংস্কার দেখা যায়নি। আমরা ভেবেছিলাম, জুলাইয়ের পর অন্তত আমাদের নিরাপত্তা নিয়ে আর ভাবতে হবে না, মুক্তভাবে কথা বলার অধিকার পাবো, সনদ তুলতে আর দুর্ভোগ পোহাতে হবে না, স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নত হবে এবং ক্যাম্পাস ফ্যাসিবাদমুক্ত হবে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে এই প্রত্যাশাগুলোর কোনো বাস্তবায়ন হয়নি।
একটা ক্যাম্পাস কতটা অনিরাপদ হলে একজন শিক্ষার্থীর লাশ পুকুরে ভেসে উঠে? সেই ঘটনার নির্ভরযোগ্য কোনো ফুটেজ বা তথ্য আজও প্রশাসন দিতে পারেনি। ক্যাম্পাস সংস্কারের দাবি নিয়ে আবার আমাদের কেন মাঠে নামতে হবে? আমরা তো জুলাইয়েই মাঠে নেমেছিলাম। এবার প্রশাসনের দায়িত্ব—ক্যাম্পাস সংস্কারে মনোযোগ দেওয়া, শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ লাঘব করা, বহিরাগত প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ করা। এসব করতে না পারলে আপনাদের বিদায় জানাতেই আমরা বাধ্য হব।
তিনি আরো বলেন, সেশনজট নিরসনের কথা বলে শুধুমাত্র সার্কুলার প্রকাশ করা হয়েছে, অথচ শিক্ষক নিয়োগের বাস্তব কোনো পদক্ষেপ আজও দেখা যাচ্ছে না। প্রশ্ন জাগে—আপনাদের উদ্দেশ্য কী? সুযোগ বুঝে নিয়োগ দিয়ে অর্থ লেনদেন করবেন? শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে এই ধরনের তালবাহানা চলতে পারে না।
গুম হওয়া দুই ভাই ওয়ালি উল্লাহ ও আল-মুকাদ্দেসের বিষয়ে আজও কোনো সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এর মাধ্যমে প্রশাসন যেন সরাসরি জুলাই বিপ্লবের চেতনায় আঘাত করেছে। শিক্ষকের অভাবে সেশনজট চলছে, অথচ দীর্ঘদিন ধরে সার্কুলার দিয়েও নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
এছাড়াও তিনি বলেন, একইসাথে আমরা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ গঠনের দাবি জানাচ্ছি। এটি শুধু আমাদের নয়—প্রত্যেক শিক্ষার্থীর ন্যায্য দাবি। ছাত্র সংসদ না গঠন করলে আমরা কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো। ছাত্রদের সর্বজনীন প্রতিনিধিত্বের এই প্ল্যাটফর্ম গড়ে তুলতেই হবে, ইকসু নিশ্চিত করতেই হবে। যদি এই প্রশাসন বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়, তাহলে এই প্রশাসনের আর প্রয়োজন নেই।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর