
মানুষ একা থাকতে পারে না। সে কারণে মানুষ একে অন্যের সঙ্গে ভালোবাসার সম্পর্ক গড়ে তোলে। কোনো সম্পর্ক তৈরি করার জন্য সময় দিতে হয়। কিন্তু মাত্র কয়েক মুহূর্তেই সম্পর্ক ভেঙে যেতে পারে। যেমন ধরুন, সঙ্গীর পছন্দকে অপমান বা অবজ্ঞা করা, কথায় ঘৃণা প্রকাশ করা কিংবা সঙ্গীকে উপহাস করা। সব কিছু মুখের ওপর বলে ফেলা ঠিক না।
কিছু কথা আছে যেগুলো বলার ধরনটাই বলে দেয় সম্পর্কটা আপনি গড়তে চান, না ভাঙতে চান।
দাম্পত্য সম্পর্ক এমন এক জায়গা, যেখানে একটুখানি কোমলতা অনেক দূর নিয়ে যায়। আবার একটুখানি কটু কথা দীর্ঘদিনের ভালোবাসাও নষ্ট করে দিতে পারে।
যেমন-
১. তুমি সব সময় এ রকম করো’ বা ‘তুমি কখনোই এটা পার না
এ ধরনের কথা না বললেই মঙ্গল। বরং সমস্যাটা বুঝিয়ে বলুন, পরিণতিটা বুঝিয়ে আলোচনায় বসুন। আর তা না করলে সঙ্গী ভাববে, তিনি কখনোই ভালো কিছু করেন না। আর এতেই সম্পর্ক শেষের সূচনা হতে পারে। তাই একে অপরকে তিরস্কার না করে কীভাবে সম্পর্কের ভীত শক্ত করা যায়, সে চেষ্টা করুন।
২. তুমি তো কোনো কাজেই লাগ না
হয়তো সঙ্গী ভুল করেছে। হয়তো কাজটা আপনার প্রত্যাশামতো হয়নি। কিন্তু তাই বলে তাকে পুরোপুরি ‘অকার্যকর’ বলাটা ঠিক কেমন লাগে?
এটা শুধু কথার আঘাত নয়- এটা আত্মবিশ্বাস ভাঙার মতো। এমন কথা মানুষকে ভেতর থেকে ছোট করে দেয়। সম্পর্ক তখন ভালোবাসার জায়গা না হয়ে দাঁড়ায় বিচার-বিশ্লেষণের মঞ্চে। বরং বলুন- ‘তুমি চেষ্টাটা করেছো, তবে আমি ভাবছিলাম এটা আরেকভাবে করলে কেমন হয়?’
২. তোমার পরিবারটাই এমন
রাগের সময় হয়তো বলে ফেলেন- তোমার মা-ও তো এমন করতেন বা তোমাদের বাসাতেই তো কেউ কারও কথা শোনে না।’ এই কথাটা শুধু সঙ্গীকে নয়, তার শিকড়কেও অপমান করা। এমন কথা শুনে কেউ আর নিরাপদ অনুভব করে না। বলুন-তোমার এক আত্মীয়ের কথাটা আমার মনে কষ্ট দিয়েছে। একটু বলি কেন?
৩. তোমাকে বিয়েই করা উচিত হয়নি
এটা শুধুই একটা রাগের কথা নয়। এটা সম্পর্কের অস্তিত্বে আঘাত। এমন বাক্য সঙ্গীর মনে গেঁথে যায় দীর্ঘদিন। এমনকি ঝগড়া মিটে যাওয়ার পরও কথাটা রয়ে যায়। বরং বলুন-আমাদের মধ্যে কিছু জিনিস নিয়ে মতভেদ হচ্ছে। চলো, একটু সময় নিয়ে কথা বলি।
৫. তুমি যদি আমায় ভালোবাসতে, তাহলে এটা করতে
এটা আবেগ দিয়ে কাউকে চাপ দেওয়ার মতো। ভালোবাসা যদি পরীক্ষার মুখে পড়ে, তাহলে সেটা ভালোবাসা নয়, বরং নিয়ন্ত্রণ। বলুন-তুমি যদি আজকের সন্ধ্যাটা আমার সঙ্গে কাটাতে, আমি সত্যি খুশি হতাম।
৬. তুমি বদলে গেছো
হ্যাঁ, মানুষ বদলায়। সময় বদলায়, দায়িত্ব বাড়ে, ভাবনাও বদলায়। কিন্তু এভাবে বললে মনে হয়, সঙ্গীর পরিবর্তনটা খারাপ কিছু। বরং বলুন-তুমি আগে যেভাবে আমার খেয়াল রাখতে, সেটা মাঝে মাঝে মিস করি।
৭. তারকাদের সঙ্গে তুলনা করা
সিনেমায় যা হয়, তা বাস্তবে চাইলেও সম্ভব না। এমনকি আজকাল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আমরা যেসব তারকাদের দেখি, তাদের সঙ্গে বাস্তবের জীবনযাপনের সম্পর্ক সামান্যই। তাই তারকাদের সঙ্গে সঙ্গীর তুলনা করে কিছু প্রত্যাশা করলে স্বাভাবিকভাবেই হতাশ হবেন। পর্দার তারকা এবং বাস্তবের জীবনসঙ্গী যে এক নয়, তা আপনাকে বুঝতে হবে। আর এসব বিষয় নিয়ে সঙ্গীর সঙ্গে তর্ক করা মোটেও বুদ্ধিমানের কাজ নয়। সম্পর্ক বাঁচিয়ে রাখতে চাইলে বাস্তবের মাটিতে পা রাখুন, সঙ্গীর প্রতি প্রত্যাশা হোক যুক্তিসংগত।
বিয়ে মানেই বুঝিয়ে বলা, বোঝার চেষ্টা করা। সম্পর্ক মানেই দায়িত্ব- শুধু খরচ ভাগ করা নয়, কষ্ট-ভালোবাসাও ভাগ করে নেওয়া।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর