দীর্ঘ দেড় বছরের বেশি সময় পর বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম সীমান্ত ফের গোলাগুলির শব্দে কেঁপে উঠেছে। রবিবার রাত ১০টার পর মিয়ানমার অভ্যন্তরে আকস্মিকভাবে ৭ থেকে ১০ মিনিট ধরে টানা গুলি বিনিময় হয়। সীমান্তের এপারে (বাংলাদেশের ভেতরে) গুলি না এলেও স্থানীয়রা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
বিজিবির কক্সবাজার ৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এস এম খায়রুল আলম জানান, গোলাগুলি হয় সীমান্ত পিলার ৩৪ ও ৩৫-এর মাঝামাঝি, শূন্যরেখা থেকে প্রায় ৩০০-৩৫০ মিটার দূরে মিয়ানমার অভ্যন্তরে। অন্তত ৩০ থেকে ৪০ রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে রোহিঙ্গা সশস্ত্র সংগঠন আরসা বা আরএসও'র মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে।
ঘুমধুম ইউনিয়নের ইউপি সদস্য নুর মোহাম্মদ ভূট্টো বলেন, "দীর্ঘ দেড় বছর পর সীমান্তে এত গুলির শব্দ শুনলাম। ঠিক কী ঘটছে তা বোঝা যাচ্ছে না। আমরা আতঙ্কে আছি।" বিজিবি জানিয়েছে, সীমান্তে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।
অন্যদিকে, সোমবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে কক্সবাজারের উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের বালুখালী সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশের সময় আরাকান আর্মির এক সদস্যকে আটক করে বিজিবি।
বিজিবির উখিয়া ৬৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন জানান, আটক জীবন তঞ্চঙ্গা (২১) মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বাসিন্দা ও আরাকান আর্মির সদস্য। তাঁর কাছ থেকে একটি বিদেশি ভারী আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।
বিজিবি কর্মকর্তা জানান, জীবন তঞ্চঙ্গা শূন্যরেখা অতিক্রম করে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে বালুখালী ক্যাম্পসংলগ্ন একটি চৌকিতে গিয়ে বিজিবির হাতে অস্ত্র সমর্পণ করেন। তিনি জানান, ব্যক্তিগত নিরাপত্তার হুমকির কারণে অস্ত্রসহ পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে এসেছেন।
আটক ব্যক্তিকে অবৈধ অনুপ্রবেশের অভিযোগে উখিয়া থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে আরাকান আর্মি দাবি করে, মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্তের রাখাইন অংশের ২৭১ কিলোমিটার এলাকা তারা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। সীমান্তের সাম্প্রতিক গোলাগুলি ও অনুপ্রবেশের ঘটনা নিয়ে আবারও স্থানীয়দের মধ্যে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা বেড়েছে।
সর্বশেষ খবর