
দ্বীপ জেলা ভোলার মানচিত্র দিন দিন ছোট হয়ে আসছে অবৈধ বালু উত্তোলনের কারণে। সদর উপজেলার পাতাবুনিয়া ও বাঘমারা চরের শত শত ভূমিহীন কৃষকের চাষের জমি ও বসতবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পথে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, পূর্ববর্তী ফ্যাসিবাদী সরকারের সময় চিহ্নিত প্রভাবশালীদের সহায়তায় একদল ভূমিদস্যু সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে কৃষকদের উৎখাত করে জমি দখল করে নেয়। জমিতে থাকা ফসল লুটপাট করা হয়, আর আইনি আশ্রয় নিলেও ভুক্তভোগীরা নির্যাতন ও হয়রানির শিকার হন।
বর্তমানে প্রভাবশালী বালু খেকো চক্র নদীতে ৭-৮টি অবৈধ ড্রেজার মেশিন বসিয়ে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মেট্রিক টন বালু তুলে বিক্রি করছে। এতে প্রতিদিন প্রায় ৬০-৭০ লাখ টাকার বালু বিক্রি হচ্ছে, আর চরগুলো দ্রুত বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ফলে নতুন বসতি গড়ে ওঠা বন্ধ হয়ে দারিদ্র্যতা আরও বাড়ছে।
১১ আগস্ট সকালে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে ভুক্তভোগী কৃষকরা মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করেন। তারা জানান, জমি চাষাবাদে বাধা ও হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। সরকার কর্তৃক বন্দোবস্তকৃত জমি নদীগর্ভে চলে গেলে তারা আবারও ভূমিহীন হয়ে পড়বেন।
বিগত ১৭ বছরে ভোলা সদরসহ বিভিন্ন এলাকায় অবৈধ বালু উত্তোলনে একাধিক চর বিলীন হয়ে গেছে। বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন—এভাবে চর ধ্বংস হলে নতুন গ্যাস কূপ আবিষ্কারের সম্ভাবনাও নষ্ট হবে। বর্তমানে ভোলায় ৯টি গ্যাস কূপ চিহ্নিত হলেও আরও আবিষ্কারের সুযোগ রয়েছে।
উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, ভোলা শহরের ডিসি অফিস, এসপি অফিস, থানা, সিভিল সার্জন অফিসসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ভাঙন কবলিত এলাকা থেকে মাত্র ২ কিলোমিটার দূরে। এতটা হুমকির মুখে থাকলেও সরকারি উদ্যোগ অপ্রতুল।
গত জুলাইয়ে জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপে পাতাবুনিয়া চর থেকে দুইজনকে আটক, এক লক্ষ টাকা জরিমানা এবং চারটি ড্রেজার মেশিন জব্দ করা হলেও মাত্র ১০ দিনের মধ্যে অদৃশ্য প্রভাবশালীদের প্রভাবে সেগুলো ফেরত দিয়ে পুনরায় বালু উত্তোলন শুরু হয়েছে। ফলে ভোলার ভৌগোলিক সীমানা প্রতিদিনই সঙ্কুচিত হচ্ছে।
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর