
কারাবন্দী নজরুল ইসলাম মজুমদারের নাসা গ্রুপের রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাক কারখানাগুলো সচলে উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। শ্রম সচিব বলছেন, শিল্পাঞ্চলে অস্থিরতা রোধ এবং শ্রমিকদের কর্মসংস্থান ও রপ্তানি আয়কে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এজন্য নাসার কারখানাগুলো ব্যাংক থেকে ব্যাক-টু-ব্যাক এলসি সুবিধা পাবে। বিশেষ ব্যবস্থায় কারগার থেকেই ব্যবসার প্রয়োজনীয় নথিতে সই করতে পারবেন প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান।
তৈরি পোশাক খাতে অন্যতম বড় শিল্পগ্রুপ নাসা। আবাসন ও ব্যাংকিং খাতেও তাদের ব্যবসা রয়েছে। নাসার শতভাগ রপ্তানিমুখী কারখানাগুলো ২০২৩ সালে ৪ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা, এবং ২০২৪ সালে ৩ হাজার ২০০ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানি করেছে। কিন্তু গত অক্টোবরে জুলাই অভ্যুত্থানের হত্যা মামলায় গ্রুপের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদার গ্রেপ্তার হন। তাঁর বিরুদ্ধে বড় অংকের অর্থপাচারের অভিযোগও আছে।
চেয়ারম্যান জেলে যাওয়ার পর নাসা গ্রুপের অনেক প্রতিষ্ঠান ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে খেলাপি হয়ে পরে। তখন থেকেই কারখানাগুলো বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ব্যাক-টু ব্যাক এলসি সুবিধা পাচ্ছে না। ফলে রপ্তানি বাজার থেকে সরাসরি ক্রয়াদেশ পাচ্ছেনা তারা। গ্রুপটির এক শীর্ষ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সাব কন্ট্র্যাক্ট কাজ করে বেতন হচ্ছিল ২৫ হাজার শ্রমিকের। তবে আর্থিক সংকটে গত মাসের বেতন বাকি, বেশিরভাগ শ্রমিককে ছুটি দেওয়া হয়েছে। শ্রম সচিব জানান, শিল্পাঞ্চলে অস্থিরতা ঠেকাতে নাসাকে সহায়তা করবে সরকার।
শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ‘গত রোববার আমাদের সিদ্ধান্তের পর বাংলাদেশ ব্যাংক বৈঠক করেছে। তারা সেই সাপোর্ট দিচ্ছে যাতে তারা এলসি খুলে ব্যবসাটা চালু করতে পারে। শ্রমিকদের ব্যকারত্ব ঠেকানো, শ্রমিক বিক্ষোভ ঠেকানো এবং রপ্তানিটা ধরে রাখায় আমাদের মুখ্য বিষয়।’
গ্রুপের কিছু সম্পদ বিক্রিসহ প্রতিষ্ঠানগুলো সচল রাখার স্বার্থে নথিপত্রে স্বাক্ষর লাগবে গ্রুপ চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের। শ্রম সচিব জানান, কারাবন্দী চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর নেওয়ার বিশেষ সুবিধা দিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে আহ্বান করা হয়েছে।
শ্রম মন্ত্রণালয়ের সচিব বলেন, ‘এই ডকুমেন্টেশনের জন্য তাঁর যেখানে সই-স্বাক্ষর লাগবে, সেই সাপোর্ট যেন তাদের ম্যানেজমেন্ট পেতে পারে সে জন্য নজরুল ইসলাম মজুমদারের কাছ থেকে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার মাধ্যমে আইজি প্রিজনকে বলেছি।’
এর আগে সরকার বেক্সিমকো গ্রুপের শ্রমিকদের পাওনা মেটাতে এগিয়ে এসেছিল। ১৪টি শিল্প ইউনিটের ২৭ হাজারের বেশি শ্রমিকের পাওনা মেটাতে সরকার ৫২৫ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়।
রার/সা.এ
সর্বশেষ খবর