ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর) আসনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার এম ইকবাল হোসাইন এবং মনোনয়ন বঞ্চিত উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব হাফেজ আজিজুল হক একজোট হয়ে ধানের শীষের বিজয়ের লক্ষ্যে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছেন। গত মঙ্গলবার রাতে কলতাপাড়াস্থ নিজ কার্যালয়ে উপজেলা ও পৌর বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় হাফেজ আজিজুল হক বলেন, "এই আসনে মনোনয়ন না পেলেও আমি ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে কাজ করব। রাজপথে আমার রক্ত ঝরেছে, গুলিবর্ষণের শিকার হয়েছি। কিন্তু তারেক রহমান আমাদের অভিভাবক — তাঁর নির্দেশনাই আমাদের কাছে চূড়ান্ত। আমরা ব্যক্তি নয়, ধানের শীষকে বিজয়ী করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করব।"
বৈঠকে উপজেলা বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন পৌর বিএনপির আহ্বায়ক আলী আকবর আনিছ, যুগ্ম আহ্বায়ক শাহ্জাহান কবির হিরা, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক এস. এম. দুলাল, সিরাজুল ইসলাম ফকির, আরিফুল হক আহাদ, ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম. এ. হান্নান সরকার, বিএনপি নেতা মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী, আব্দুল মান্নান মণ্ডল, উত্তর জেলা যুবদলের নেতা উসমান গনি তান্না, ডৌহাখলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক খুররম খান ও উপজেলা জাসাসের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক খোকন প্রমুখ।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকা থেকে গৌরীপুর আসনে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার এম ইকবাল হোসাইনের নাম ঘোষণা করেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। মনোনয়ন বঞ্চিতদের মধ্যে ছিলেন আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণ, অ্যাডভোকেট নুরুল হক এবং হাফেজ আজিজুল হক। মনোনয়ন ঘোষণার পর আহাম্মদ তায়েবুর রহমান হিরণপন্থী নেতাকর্মীরা রেলপথ ও সড়ক অবরোধসহ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। তবে সাম্প্রতিক এই বৈঠকে হাফেজ আজিজুল হকের ঘোষণা বিএনপির স্থানীয় রাজনীতিতে নতুন করে ঐক্যের বার্তা দিয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
গৌরীপুর উপজেলা নিয়ে গঠিত ময়মনসিংহ-৩ আসনে মোট ভোটার ২ লাখ ৯৪ হাজার ৬০৮ জন, এর মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ৪৮ হাজার ৪৬৯ জন এবং মহিলা ১ লাখ ৪৬ হাজার ১৩৯ জন। নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ৯২টি কেন্দ্র ও ৫৩৮টি বুথ।
এই আসনে বিএনপি প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার এম ইকবাল হোসাইনের পাশাপাশি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন— মাওলানা মো. বদরুজ্জামান (জামায়াতে ইসলামী), মো. নজরুল ইসলাম (জাকের পার্টি), হারুন আল বারী (সিপিবি), আলহাজ মো. ফজলুর রহমান (খেলাফত মজলিস), মুফতি নাজিম উদ্দিন (জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ) ও মো. আইয়ুব আলী নূরানী (ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ)।
বিএনপির মনোনীত ও মনোনয়ন বঞ্চিত দুই প্রার্থীর একজোট হওয়ার ঘোষণা গৌরীপুরে দলের ঘরোয়া দ্বন্দ্ব প্রশমনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন। দলীয় প্রতীক ‘ধানের শীষ’ ঘিরে ঐক্যের এই বার্তা আসন্ন নির্বাচনে বিএনপিকে নতুন গতি দিতে পারে।
সর্বশেষ খবর