• ঢাকা
  • ঢাকা, শুক্রবার, ২২ আগস্ট, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৫ সেকেন্ড পূর্বে
আরিফ জাওয়াদ
ঢাবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২২ আগস্ট, ২০২৫, ১০:২৯ দুপুর

ডাকসুতে দাঁড়াইছে সবাই, বসে আছে আশিক!

ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন নিয়ে চলছে ব্যাপক তোড়জোড়। ডাকসু নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন বিভিন্ন সংগঠনের ও স্বতন্ত্র প্যানেলের প্রার্থীরা। প্যানেলগুলোর প্রার্থী চূড়ান্ত হয়ে যাওয়ায় নির্বাচনী আমেজে সরগরম ঢাবি ক্যাম্পাস।

বুধবার (২০ আগস্ট) ছিল মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ দিন। ডাকসুর ২৮টি পদের বিপরীতে মোট ৫০৯টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে। এর আগে ডাকসুর জন্য বিক্রি হয়েছিল ৬৫৮টি মনোনয়নপত্র।

মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার কাজ সম্পন্ন হলেও ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের প্রচার-প্রচারণা এখনও শুরু হয়নি। তবে এর মধ্যেই সামাজিকমাধ্যমে অভিনব প্রচারণার মাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান।

আসন্ন ডাকসু নির্বাচনে কেন্দ্রীয় জিএস (সাধারণ সম্পাদক) পদে প্রার্থিতার (স্বতন্ত্র) ঘোষণা দিয়ে সামাজিকমাধ্যম ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন আশিক। বুধবার রাতে দেয়া পোস্টের সাথে ব্যতিক্রমধর্মী একটি পোস্টারও যুক্ত করে দেন তিনি।

পোস্টারে দেখা যায়, প্লাস্টিকের একটি চেয়ারে পায়ের ওপর পা তুলে হেলান দিয়ে বসে আছেন আশিক। চোখে সানগ্লাস, হাতে লাইটার আর ঠোঁটে জ্বলন্ত সিগারেট। ঢাবি শিক্ষার্থীকে দেখে মনে হতে পারে– গ্যাংস্টার সিনেমার সাক্ষাৎ কোনো ক্যারেক্টার!

আর তার হিউমার মিশ্রিত লেখাও পিছিয়ে থাকবে কেন? সেই লেখা ফোনের কীবোর্ড দিয়ে সম্পন্ন কিনা, ঠাওর করা মুশকিল। জাপানিজ সামুরাই দিয়ে অক্ষরগুলো আঁকা বলে কারও যদি ভ্রম হয়, দোষ দেয়া যাবে কি? এক কথায়, স্বভাবসুলভ ‘জেন-জি’ স্টাইলেই তিনি প্রচারণা চালিয়েছেন।

নির্বাচনী ইশতেহারে আশিক ‘অ্যাটেনডেন্স নম্বর শিথিলকরণ’কেই সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিয়েছেন, যেটাকে সাধুবাদ জানিয়েছে অনেক শিক্ষার্থী। তারা আশিকুর রহমানের পোস্টে এ বিষয়ে নিজেদের ইতিবাচক মতামত তুলে ধরেন।

ফেসবুকে তিনি লেখেন– আই ডিক্লেয়ার ওয়ার অন মাই ফ্যাকাল্টিজ। কেন আমাকে ওই ৫ মার্কের জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা বস্তাপঁচা লেকচার শোনা লাগবে? এর থেকে ক্লাস না করে ভালো রেজাল্ট করা যায়। অ্যাটেনডেন্স ৭০-৭৫% হলেই ফুল মার্ক দেয়া উচিত। আর ৫০% থাকলেও পরীক্ষায় বসতে দেয়া উচিত। কিউএস র‍্যাঙ্কিং দিয়ে আদৌ কিছু হয়? আমাদের ঘাড়ের ওপর পা দিয়ে জাতে ওঠার চেষ্টা করলে হবে না। অবশ্যই শিক্ষার্থীদের সুবিধা আগে।

এই একটা কারণই যথেষ্ট ডাকসুতে দাঁড়ানোর। আরও পয়েন্ট আছে। যেগুলা সবাই দিয়েছে, অমুক উন্নয়ন, তমুক উন্নয়ন, এগুলা চাইলেই কপি করে এখানে যোগ করে দেয়া যাবে। কিন্তু আমি ওই ‘উদ্দীপকের গুরুত্ব অপরিসীম’ টাইপ লোক না।

তিনি আরও লেখেন, বাস্তবতা হলো সদস্য হিসেবে তেমন পরিবর্তন আনার কারোরই সেরকম সুযোগ/মুরোদ নাই। সর্বোচ্চ প্রেশারাইজ করতে পারবে তারা। আর সমস্যাগুলো খুঁজবেন আপনারা। আমি রিপ্রেজেন্টেটিভ। আপনারা আমাকে সমস্যাগুলো বলবেন, সেটা নিয়ে দায়িত্বশীলদের সাথে ফাডাফাডি করার দায়িত্ব আমার। ফাডাফাডি, প্রেসারাইজ, আলোচনা করে দাবি আদায় আমার কাজ, সোফায় বসে আরাম করে তামাশা দেখা আপনার কাজ। কিন্তু হয় উল্টোটা। সমস্যা বের করে নেতারা আর তার জন্য রাস্তায় কষ্ট করে আন্দোলন করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা।

আশিক লেখেন– মেয়েদের যাতায়াত, নিরাপত্তা, বিশেষ করে আবাসন সমস্যার জন্য ক্যাম্পাসে হল নির্মাণ অথবা কর্মচারীদের যেকোনো একটি ভবন হোস্টেলে (হল না) রূপান্তরের বিষয়ে কাজ করব। এছাড়াও, ক্যাম্পাস যেন বহিরাগত জনসমাবেশের পার্কিং স্লট আর মূত্র বিসর্জনের জায়গা না হয়ে যায়, একাডেমিক এরিয়ায় সকল মিটিং মিছিল শব্দদূষণ বন্ধ আর সর্বোচ্চ রাজুতে (রাজু ভাস্কর্য) প্রশাসনের অনুমতি সাপেক্ষে করার এখতিয়ার, সেই চেষ্টা করব।

ইনক্লুসিভ কালচারের প্রসঙ্গ তুলে তিনি লেখেন– ঢাবিতে কুরআন তেলাওয়াত হবে, সাহিত্য-সংস্কৃতি চর্চা হবে, কনসার্ট সব হবে। কেউ কারও ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানবে না। এছাড়াও, এনিমে কসপ্লে, ড্রোন মেকিং ইভেন্টসহ নানা কম্পিটিশন হবে।

তাকে কেন ভোট দেয়া হবে, সে প্রসঙ্গে আশিক লেখেন– আর্থিক সততা: ইনভেস্টমেন্ট সে-ই করে, যে লাভের আশায় থাকে। আমার এখানে কোনো ইনভেস্টমেন্ট নাই, সুতরাং লাভও নাই। আর আমি কেমন হিসাবী লোক, আমার বন্ধুরা জানে। ১৭ জুলাই হল দখলের দিনেও গণিমতের মাল হিসেবে কিছুই নেইনি। যেখানে অন্যরা বাইকের তালা ভেঙে..

ঢাবির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী দাবি করেন– তার নামে নারী কেলেঙ্কারি নেই, ভাই-ব্রাদার কোরাম নেই বরং তার আছে স্ট্র্যাটেজিক দক্ষতা। তিনি বলেন, নেতার পরিবর্তে একজন রাজনৈতিক আমলা হিসেবে কাজ করতে চাই। ডাকসু জিএসের কাজও মোটাদাগে এমনই। সো আমি এখানে মূলত ‘দ্য ওয়ারটাইম কনসিলিয়ার’ ফ্রম গডফাদার।

তাকে কেন ভোট দেয়া হবে না, আশিক নজর দেন সেখানেও– আনরেস্পনসিভ: গভীর রাতে কোনো সমস্যায় পড়লে ফোন দিলে আমাকে অবশ্যই পাবেন না। কারণ, আমি তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ি। বাইকও নাই যে, একটান দিয়ে চলে যাব।

এক্সপোজ করার ব্যাপারে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি পোস্টে লেখেন– যেহেতু অন্যায়-অনিয়ম একদমই সহ্য করতে পারি না, তো যদি অন্য সদস্যরা একটুও অনিয়ম বা সিকি পয়সার কমিশনবাজি করে, তাদের এক্সপোজ করে দেব। তো যাদের সিলেটের পাথরচুরির সর্বদলীয় ঐক্যর মতো কিছু করার ইচ্ছা আছে, তারা আমাকে ভোট দেবেন না।

ফেসবুক পোস্টের শেষে এই জিএস পদপ্রার্থী লেখেন, অনেকেরই পোস্টারে আমার ছবি নিয়ে আপত্তি আছে। কিন্তু দুইটা ভোট কম পাব— এই ভয়ে যদি পিছপা হতাম, তাহলে আমি নিজেকে আর রেসপেক্ট করতাম না। আমার পোস্টার, প্রচারণা সব ‘জেন-জি’ স্টাইলেই হবে।

উল্লেখ্য, আগামী ২৬ আগস্ট বিকেল চারটায় ডাকসু নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। আর প্রচারণা চালানো যাবে ভোটের দিনের (৯ সেপ্টেম্বর) ২৪ ঘণ্টা আগ পর্যন্ত।

রার/সা.এ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ [email protected]