
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ী ইউনিয়নের ৬নং শংকরকাটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি গত চার বছর ধরে জলাবদ্ধতায় ভুগছে। বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বিদ্যালয়ে স্থায়ী জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের পাঠদানে গুরুতর সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। একটি ভবন সম্পূর্ণ পানিতে ডুবে যাওয়ায় শিক্ষার্থীদের অন্য একটি ভবনের বারান্দায় পরীক্ষা দিতে হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, স্কুলের মাঠ সম্পূর্ণ পানিতে ডুবে আছে। বিদ্যালয়ের একটি টিনশেড ভবনের ভেতরে পানি প্রবেশ করায় কর্তৃপক্ষ ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করেছে। ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের প্রতিদিন এই জলাবদ্ধ মাঠ পেরিয়ে মূল ভবনে আসতে হয়। শিক্ষকরা জানিয়েছেন, বর্তমানে একটি ভবনেই সকল শ্রেণির ক্লাস নেওয়া হয় এবং শ্রেণিকক্ষ সংকটের কারণে বারান্দাতেও পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র অভি সর্দার জানায়, "আমাদের স্কুলের মাঠে বর্ষাকালে পানি জমে থাকে, এই পানি সরে না, আমরা খুব কষ্ট করে স্কুলে আসি। আমাদের সবার পায়ে ঘা হয়ে গেছে। আমরা নিয়মিত স্কুলে আসতে পারি না। আমরা আমাদের স্কুলের এই সমস্যার সমাধান চাই।" পঞ্চম শ্রেণির লামিয়া খাতুন ও মো. সামি সহ উপস্থিত সকল ছাত্রছাত্রী একই কথা জানায়।
বিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী স্থানীয় বাসিন্দা মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, "অনেক আগে এই বিদ্যালয়ের মাঠের পাশ দিয়ে একটি কালভার্ট ছিল। কিন্তু চার বছর আগে বিদ্যালয়ের মাঠ বড় করার জন্য মাঠ সংলগ্ন পুকুরটি ভরাট করা হয়। তখন সাথে থাকা কালভার্টটি মাটি ভরাট হওয়ায় বন্ধ হয়ে যায়। যে কারণে বিদ্যালয়ে স্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। বিদ্যালয়ের টিনশেড ভবনটি পানি ঢুকে যাওয়ায় ক্লাস নেওয়া বন্ধ হয়ে আছে। আমরা এলাকাবাসী এটার স্থায়ী সমাধান চাই।"
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. রিয়াজুল ইসলাম বাচ্চু বলেন, "আমাদের এই বিদ্যালয়ে গত চার বছর ধরে জলাবদ্ধতা। প্রতি বছর আষাঢ় মাসের শুরু থেকে স্কুল মাঠের জলাবদ্ধতার শুরু হয় এবং কার্তিক মাস পর্যন্ত থাকে। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও এই পাঁচ মাস সকল শিক্ষার্থী ও শিক্ষকগণ প্রায় হাঁটু পানি পেরিয়ে বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করতে হবে। আমাদের একটি ভবন পরিত্যক্ত হয়ে আছে, যে কারণে উঁচু এই ভবনের সবকয়টি রুম সহ বারান্দাতেও ক্লাস নেওয়া হয়। আর বর্তমানে পরীক্ষাও নেওয়া হচ্ছে। বদ্ধ এই পানি পেরিয়ে প্রতিনিয়ত আসা-যাওয়ার কারণে বাচ্চাদের পায়ে ক্ষত সৃষ্টি হয়ে গেছে। আমরা এই জলাবদ্ধতার স্থায়ী সমাধান চাই।"
শ্যামনগর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মোছাঃ রনী খাতুন বলেন, "বিষয়টা জানার পরে আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সমাধান করার চেষ্টা করব।"
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর
জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর