
খাগড়াছড়ির রামগড়ে ঘরের ভেতর থেকে বৃদ্ধা আমেনা খাতুন (৮৮) ও মেয়ে রাহেনা আক্তার (৪০)-এর গলাকাটা মরদেহ উদ্ধারের ৭ দিন পর ঘাতক সাইফুলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ঘাতক সাইফুল (৩৫) নিহত বৃদ্ধা আমেনা খাতুনের বড় ছেলে শাহাবুদ্দিনের ছেলে এবং অপর ভিকটিম রাহেনা আক্তারের ভাতিজা।
ঘটনার দিন আসামি সাইফুল তার দাদীর বাড়িতে এসে টাকা চাইলে ভিকটিমদ্বয় তাকে গালমন্দ করে। এরপর আসামি না খেয়ে দাদীর ঘরে শুয়ে থাকে এবং হত্যার পরিকল্পনা করে। রাত গভীর হলে আসামীর দাদী এবং ফুফু পার্শ্ববর্তী দুটি কক্ষে ঘুমিয়ে গেলে আসামি ২১ আগস্ট রাতে দাদীর ঘরে থাকা বাঁশ কাটার দা দিয়ে প্রথমে ফুফু রাহেনা আক্তার এর গলায় সজোরে কোপ দিয়ে হত্যা করে। এরপর দাদীকেও একইভাবে হত্যা করে পালিয়ে যায়। পালিয়ে যাওয়ার সময় ফুফু রাহেনা বেগমের মোবাইল ফোনটিও সে নিয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল।
পুলিশ সুপার বলেন, 'হত্যাকাণ্ডের পরের দিন ভিকটিম রাহেনা আক্তারের ছেলে মো. হাসান অজ্ঞাতদের আসামি করে রামগড় থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলা দায়েরের পর তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে চট্টগ্রাম জেলার ভুজপুরের দাঁতমারা এলাকার জনৈক নুর আলমের কাছ থেকে ভিকটিম রাহেনা আক্তারের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। ঘাতক সাইফুল ৪০০ টাকার বিনিময়ে নুর আলমের কাছে মোবাইল ফোনটি বিক্রি করে আত্মগোপনে চলে যায়। এ মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে আসামি শনাক্তের পর তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে বুধবার রাতে ছাগলনাইয়ার ঘোপাল এলাকা থেকে সাইফুলকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ সুপার বলেন, 'প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তার সাইফুল হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত দা উদ্ধার করা হয়েছে। আসামিকে আরও অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন জানানো হয়েছে আদালতে।
স্থানীয়রা জানান, আমেনা বেগমের ৫ ছেলে ও ২ মেয়ে। ছেলেদের মধ্যে দুজন প্রবাসী। কর্মসূত্রে একজন ফেনীর ছাগলনাইয়া ও একজন ঢাকায় থাকেন। এলাকায় আলাদা ঘরে থাকেন আবুল বশর নামের এক ছেলে। তিনি কৃষিকাজ করেন। আমেনার মেয়েদের মধ্যে রাহেনা বেগম মায়ের সঙ্গে বাবার বাড়িতে বসবাস করে আসছেন। রাহেনার স্বামী ওমান প্রবাসী। জমিজমা নিয়ে আমেনা বেগমের ছেলে-মেয়েদের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এ বিষয়ে গ্রামে একাধিকবার সালিশও হয়েছে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (২১ আগস্ট) সকালে রামগড় পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব বাগানটিলা এলাকায় ঘরের শয়নকক্ষ থেকে আমেনা বেগম নামের এক বৃদ্ধা ও তার মেয়ে রাহেনা বেগমের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর