
গাজীপুরের শ্রীপুর পৌরসভার ১নং সিএনবি এলাকায় সড়ক ও জনপথের ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের ফুটপাতের জায়গা দখল করে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা দোকানপাটসহ অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১ টা থেকে সড়ক ও জনপদ বিভাগ মহাসড়কের পূর্ব পাশে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান শুরু করে।
উচ্ছেদ শুরু হওয়ার দুই ঘন্টা পর দুপুর দেড়টার দিকে দখলকারী স্থানীয় আজিজুল ইসলামের নেতৃত্বে ব্যবসায়ীরা সড়ক ও জনপথ বিভাগের সার্ভেয়ার রবিউল ইসলামকে মাধর করে আহত করে। এ সময় তিনি দৌড়ে সড়কের পাশে পলক সিএনজি পাম্পের একটি কক্ষে গিয়ে আশ্রয় নেয়।
হামলাকারীরা তার গায়ের শার্ট টেনে হিঁচড়ে ছিড়ে লান্চিত কেের এবং এলোপাতারীভাবে কিল, ঘুষি দিয়ে মারধর করে আহত করে। ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উপস্থিত থাকলেও হামলাকারীদের ঠেকাতে কোন ধরনের পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।
স্থানীয়রা অভিযোগ করেন আজিজুল ইসলাম দীর্ঘদিন যাবত ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের (সড়ক ও জনপথের জায়গা) পূর্ব পাশের ফুটপাতের জায়গা দখল করে বিভিন্ন স্থাপনা ও দোকানপাট নির্মাণ করে ব্যবসায়ীদের কাছে ভাড়া দিয়ে আসছে। ওইসব ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কারো কাছ দোকানের সিকিউরিটি (এডভান্সড) বাবদ এক লাখ থেকে পাঁচ লাখ টাকা নিয়ে দোকান বরাদ্ধ দিয়েছেন। ওইসব দোকান থেকে তিনি প্রতি মাসে লাখ লাখ টাকা ভাড়া আদায় করে থাকেন। মহাসড়কের পাশের ফুটপাতের জায়গা দখল করে দোকান ও স্থাপনা নির্মাণ করায় স্থানীয়দের চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে।
প্রতিদিন বিকেল ৪টার পর থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মহাসড়কের ঢাকা লেনের ওই বাজারের এক লেনে অস্থায়ী দোকানপাট বসিয়ে তাদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করতেন। মহাসড়কের উপরে এক অংশে বাজার না বসানোর জন্য স্থানীয়রা দীর্ঘদিন যাবত পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে দাবী জানিয়ে আসলেও তারা তাদের কথা না শুনে ১নং সিএনবি বাজারে দোকান বসানোর অনুমতি দেয়। এতে করে মহাসড়কের ঢাকা অংশের লেনে ওই বাজারেকাছে যানবাহন ধীর গতিতে চলাচল করতো। স্থানীয়দের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে সড়ক ও জনপথ এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করে।
আজিজুল ইসলাম বলেন, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশের জায়গা ১নং সিএনবি বাজারের জন্য পৌরসভা কর্তৃপক্ষ দরপত্র আহবান করলে নিয়ম অনুযায়ী আমি দরপত্র দাখিল করি। পরে আমার নামে পৌর কর্তৃপক্ষ বাজার ইজারা দেয়। এখানে আমার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে স্থাপনা নির্মানের যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সঠিক নয়। তিনি আরো বলেন, আমি কাউকে উস্কানি দেয়নি সড়ক ও জনপথের লোকজনের উপর হামলা করার জন্য। ব্যবসায়ীরা তাদের ক্ষতির কথা চিন্তা করে উত্তেজিত হয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
গাজীপুর সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম বলেন, আমি কয়েকজন পুলিশ নিয়ে মসজিদের পাশেই উচ্ছেদ অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছি। পরে আমাদের সহকর্মী সার্ভেয়ারের উপর ব্যবসায়ীদের হামলার কথা শুনে এ পাশে চলে আসি। হামলার ঘটনায় সার্ভেয়ারের সাথে কথা বলে ভিডিও ফুটেজ দেখে এ ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। তবে সার্ভেয়ারের উপর হামলার পর উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ রেখেছে সড়ক ও জনপথ কর্তৃপক্ষ।
সড়ক ও জনপথের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আশফাকুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বে শতাধিক পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা উপস্থিত থেকে উচ্ছেদ অভিযানে সহযোগিতা করেন। অভিযানে মহাসড়কের পূর্ব পাশের শতাধিক দোকানপাট এবং অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়।
সালাউদ্দিন/সাএ
সর্বশেষ খবর