• ঢাকা
  • ঢাকা, বুধবার, ০৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • শেষ আপডেট ৩ মিনিট পূর্বে
মোঃ এস হোসেন আকাশ
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ০৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ০৪:১৩ দুপুর

হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রোগীকে লাথি মারার অভিযোগ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে

ছবি: প্রতিনিধি, বিডি২৪লাইভ

কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হতে অস্বীকৃতি জানানোয় রোগীকে লাথি মেরে আহত করার অভিযোগ উঠেছে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মাহবুব আলম মিলনের বিরুদ্ধে।

ভুক্তভোগী রোগী হলেন কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের বত্রিশ (মুক্তি সড়ক) এলাকার বাসিন্দা মো. মহসিন (৬৫)। এ ঘটনায় তার ছেলে মো. শোলক বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকালে এমন অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী রোগী মহসিন ও স্থানীয়রা। এর আগে গত সোমবার (০১ সেপ্টেম্বর) সকালে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এ ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে গত সোমবার (০১ সেপ্টেম্বর) সকালে কিশোরগঞ্জ শহরের বত্রিশ এলাকার বাসিন্দা মো. মহসিন (৬৫) চিকিৎসা নিতে যান হাসপাতালের জরুরি বিভাগে। এসময় তার স্বজনরা কর্তব্যরত চিকিৎসকদের জানান, মহসিন কয়েকদিন আগে একই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। সেদিন তার অবস্থার অবনতি হওয়ায় আবার ভর্তি করার অনুরোধ জানানো হয়। তবে জরুরি বিভাগে দায়িত্বে থাকা চিকিৎসক মাহবুব আলম মিলন রোগীকে ভর্তি না করিয়ে শহরের একটি ক্লিনিকে গিয়ে চিকিৎসা নিতে পরামর্শ দেন। এ নিয়ে রোগীর পরিবারের সঙ্গে তর্কাতর্কি শুরু হলে ডাক্তার অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন মহসিনের স্ত্রী, মেয়ে ও ভাতিজিকে। এসময় রোগী ‘তুমি মুখ খারাপ করছ কেন?’ বলার পরপরই ডাক্তার মিলন চেয়ার থেকে উঠে এসে সজোরে লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দেন। পরে রোগীর স্বজন ও কর্তব্যরত আনসার সদস্যরা ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করেন। ডাক্তারের লাথিতে রোগীর বাম উড়ুতে রক্তাক্ত জখম হয়েছে। পরে তাকে নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় বিকালে মহসিনের ছেলে মো. শোলক বাদী হয়ে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

একাধিক সূত্রে জানা যায়, কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. মাহবুব আলম মিলন প্রায় সময় হাসপাতালে রোগী আসলে ভুল বুঝিয়ে এবং মিথ্যে তথ্য দিয়ে কম খরচে ভালো চিকিৎসার প্রলোভন দেখিয়ে বেসরকারি নিম্নমানের ক্লিনিকে নিয়ে যায়। বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি করার পর নেমে আসে চরম দুর্ভোগ। চিকিৎসা সেবার নামে তো কিছুই হয় না, উল্টো দরিদ্র রোগীদের ভিটামাটি বিক্রি করে হাসপাতালের বিল পরিশোধ করতে হয়। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের নিয়ে বাণিজ্য করে চিকিৎসক ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিকরা। যেসব চিকিৎসক রোগীকে ভাগিয়ে ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠায় তারা পায় ৪-৫ হাজার টাকা। আর যার মধ্যস্থতায় রোগীকে এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় সে পায় রোগীর চিকিৎসার মোট বিলের ৩০ থেকে ৩৫%। এভাবে রোগী ভর্তি করানোকে বলা হয় ‘রোগী বেচাকেনা’।

জানা যায়, রোগী যখন সিরিয়াস অবস্থায় থাকে, তখন তার জন্য বিশেষ ওষুধ, ইনজেকশন, স্যালাইন, অক্সিজেন বা আরও বেশি কিছু সাপোর্ট সিস্টেমের প্রয়োজন। এজন্য রোগীকে দ্রুত মানসম্মত হাসপাতাল বা ক্লিনিকে চিকিৎসা সেবা দেওয়া জরুরি। অথচ এসব রোগী দ্রুত নিকটস্থ সরকারি হাসপাতালে যাওয়ার পর সেখানকার চিকিৎসকরা রোগীকে টাকার বিনিময়ে কৌশলে দালালদের হাতে তুলে দেয়। পরে তাদের নিয়ে বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে বিক্রির জন্য এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় ঘুরতে থাকে। দরদামে পোষালেই তবে রোগী বেচাকেনা করে। এতে মুমুর্ষু রোগীর এক থেকে দেড় ঘণ্টা, কখনো দুই-তিন ঘণ্টা সময় পেরিয়ে যায়। ফলে গুরুতর অসুস্থ হয়ে অনেক রোগীর মৃত্যু হয়। রোগী ভাগিয়ে নেয়ার বিষয়ে সাধারণ মানুষের তেমন ধারণা না থাকলেও হাসপাতাল-ক্লিনিক ব্যবসার সঙ্গে জড়িতদের কাছে এটি ওপেন-সিক্রেট। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থার কাছে বিভিন্ন সময় এ সংক্রান্ত শত শত অভিযোগ জমা পড়েছে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় রোগী বেচাকেনার সঙ্গে জড়িতরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।

ভুক্তভোগী রোগী মো. মহসিন বলেন, আমি প্রথমে এই হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিয়েছিলাম। আবার অসুস্থ হলে পুনরায় আসি। চিকিৎসক মিলন আমাকে প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে বলে। আমি গরিব মানুষ, বেসরকারি হাসপাতালে যেতে পারব না, আমাকে ভর্তি দিলে ভালো হয়। এটা বলার সাথে সাথে ক্ষিপ্ত হয়ে অশ্লীল গালাগালি শুরু করেন। আমি চলে আসার পথে দৌড়ে এসে পিছন থেকে লাথি মারেন। আমি এর বিচার চাই।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চিকিৎসক ডা. মাহবুব আলম মিলন বলেন, দুজনের মধ্যে কিছু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। এখন মীমাংসা হয়ে গেছে।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী রোগী মো. মহসিনের ছেলে শোলক বলেন, মীমাংসার প্রশ্নই আসে না। আমরা এর কঠিন বিচার চাই। অপরাধ করে পার পেলে নতুন ঘটনার জন্ম হবে।

কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, এ বিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. নাছিরুজ্জামান বলেন, ঘটনাটি আমি শুনেছি। রোগীর সঙ্গে এমন আচরণ করা ঠিক হয়নি। তবে আমাদের কাছে এ ধরনের কোনো অভিযোগ আসেনি। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সালাউদ্দিন/সাএ

বিডি২৪লাইভ ডট কম’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
পাঠকের মন্তব্য:

BD24LIVE.COM
bd24live.com is not only a online news portal. We are a family and work together for giving the better news around the world. We are here to give a nice and colorful media for Bangladesh and for the world. We are always going fast and get the live news from every each corner of the country. What ever the news we reached there and with our correspondents go there who are worked for bd24live.com.
BD24Live.com © ২০২০ | নিবন্ধন নং- ৩২
Developed by | EMPERORSOFT
এডিটর ইন চিফ: আমিরুল ইসলাম আসাদ
বাড়ি#৩৫/১০, রোড#১১, শেখেরটেক, ঢাকা ১২০৭
ই-মেইলঃ [email protected]
ফোনঃ (০২) ৫৮১৫৭৭৪৪
নিউজ রুমঃ ০৯৬০৩২০২৪৩৪
মফস্বল ডেস্কঃ ০১৫৫২৫৯২৫০২
বার্তা প্রধানঃ ০৯৬০৩১৫৭৭৪৪
ইমেইলঃ [email protected]